রেস্তোরাঁয় বসে খাচ্ছেন, পায়ের নিচে রঙিন মাছ!

পায়ের নিচে স্বচ্ছ পানিতে কিলবিল করছে রঙিন মাছ। ঝাঁকে ঝাঁকে মাছ এসে পায়ে মৃদু ঠোকর দিচ্ছে। শিশুরা পানিতে মাছ ধরার চেষ্টা করছে। সেইসঙ্গে খাওয়ার আনন্দ তো আছেই। এ এক ভিন্ন ধরনের অনুভূতি।
সাতক্ষীরায় এমনই একটি তাক লাগানো রেস্তোরাঁয় ভিড় জমে থাকছে দিনরাত। রেস্তোরাঁর মেঝেতে থই থই করছে পানি। নানা জাতের বিদেশি রঙিন মাছ ঘুরছে চারদিকে। পানির উপরই বসানো হয়েছে চেয়ার-টেবিল। কাস্টমাররা অন্য রেস্তোরাঁর মতো খাওয়া-দাওয়া করলেও পানিতে পা চুবিয়ে রঙিন মাছের খেলা দেখতে দেখতে খাওয়ার সুযোগ তো সেখানে নেই। তাই এখানে উপভোগ করা যাচ্ছে ব্যতিক্রমী খাওয়ার আনন্দ।
প্রতিদিন পরিবার-পরিজন নিয়ে কাস্টমাররা আসছেন ‘মৌবন’ নামের এই রেস্তোরাঁয়। রাজধানী ঢাকা, কুষ্টিয়া, খুলনা, যশোর থেকেও আসছেন কাস্টমার। সাতক্ষীরা শহরতলির কুচপুকুর এলাকার বাইপাস সড়কের পাশে উন্মুক্ত হাওয়ায় নিরিবিলি পরিবেশে স্থাপিত ‘মৌবন’ রেস্তোরাঁ। এর বয়স সবে দেড় মাস।
‘মৌবন’ -এর উদ্যোক্তা মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘সম্পূর্ণ নতুন কিছু একটা করার মানসিকতা থেকে আমি এই রেস্তোরাঁটি করেছি। বাংলাদেশকে আধুনিকতার ছোঁয়া দিতে চাই। জাপান, কোরিয়া, থাইল্যান্ড, ভারতসহ বিভিন্ন দেশে এমন রোস্তারাঁ রয়েছে। বাংলাদেশে কেন হবে না? এই কৌতূহল থেকেই আমি এমন উদ্যোগ নিয়েছি। এখন কাস্টমারদের সাড়াও পাচ্ছি দারুণভাবে। তাদের আনন্দে আমিও আনন্দিত।’
মৌবন রেস্তোরাঁয় খেতে এসেছেন প্রভাষক সাইফুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘এ এক ভিন্ন অনুভূতি। শিশুদের জন্য খুবই আনন্দের। তাই পরিবারের সবাইকে নিয়ে এসেছি।’
গৃহবধূ লায়লা পারভীন বলেন, ‘নতুন একটি থিম। খুবই ভালো লাগছে। পানিতে পা চুবিয়ে খাওয়া দাওয়া এক নতুন মাত্রার অনভূতি।’
এই রোস্তোরাঁর কর্মচারি আবদুল মোমেন বলেন, ‘এখানে থাই, চায়নিজ, বাংলা খাবার ছাড়াও রয়েছে ফাস্ট ফুড। কাস্টমাররা পানিতে পা চুবিয়ে খেতে বেশ মজা পান। সকাল থেকে রাত অবধি তাদের নিয়েই আমাদেরও আনন্দে কাটে।’
এখানে আসা একজন শিশু বলে, ‘এখানে খুব মজা। আমার জন্মদিন এখানে পালন করব।’
কৈকাপ, গোল্ড ফিস, মলি ফিস, কমেটসহ নানা জাতের রঙিন মাছ রয়েছে ‘মৌবন’ রোস্তোরাঁয়।
রেস্তোরাঁর মালিক দেলোয়ার হোসেন আরো বলেন, ‘পানি যাতে দূষিত না হয় সেজন্য প্রতিদিন সকালে পুরনো পানি ফেলে দিয়ে নতুন ডিস্টিলড ওয়াটার দেই। তা ছাড়া সব সময় পানি ইনলেট আউটলেট হচ্ছে।’
দেশি জাতের মাছ ছাড়া যায় কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘এতে পানি নোংরা হয়। দূষণ বৃদ্ধি পায়। এজন্য অ্যাকুয়ারিয়ামে পোষা মাছই ব্যবহার করি।’
এ ছাড়া ‘মৌবন’ রোস্তোরাঁয় আছে পার্টি করার ব্যবস্থা। ১০০ সিটের অডিটরিয়ামও রয়েছে এখানে।