ছেলের দায়ের কোপে চলে গেলেন বাবাও

নরসিংদীতে ছেলের দায়ের কোপে মায়ের পর অবশেষে বাবাও চলে গেলেন না ফেরার দেশে। নয়দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে আজ বুধবার সকাল ৮টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ওই বাবার মৃত্যু হয়।
নিহত মতি মিয়ার (৬০) বাড়ি নরসিংদী সদর উপজেলার শীলমান্দি ইউনিয়নের তুলশীপুর গ্রামে। তাঁর তিন ছেলে ও দুই মেয়ে।
পুলিশ, এলাকাবাসী ও ঘটনা সূত্রে জানা যায়, মতি মিয়া স্থানীয় এক সমবায় সমিতিতে কোষাধ্যক্ষ পদে চাকরি করতেন। সমিতির কর্তাব্যক্তিরা মতি মিয়ার বিরুদ্ধে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ তোলেন। একপর্যায়ে সমিতির লোকজন সন্ত্রাসীদের নিয়ে জোর করে মতি মিয়া ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের বাড়ি থেকে বের করে বাড়ি দখল নেন।
নিরুপায় হয়ে মতি মিয়া বাড়ির সামনে একটি কলাবাগানে অস্থায়ী ঘর তুলে থাকছিলেন। ছেলে শরিফ মিয়া (২৫) খুব মর্মাহত হন। তাঁর প্রবাস জীবনের কষ্টার্জিত উপার্জন দিয়ে তৈরি করা বাড়ি থেকে বাবার ভুলের কারণে বের হতে হওয়ায় মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন তিনি। এ নিয়ে বাবা-মায়ের সঙ্গে শরীফের বেশ কয়েক দিন ধরে বাদানুবাদ হচ্ছিল।
১০ অক্টোবর বিকেলে মা-বাবার সঙ্গে বেশ ঝগড়া হয় শরিফ মিয়ার। ঝগড়ার একপর্যায়ে শরিফ উত্তেজিত হয়ে ঘরে থাকা ধারালো দা দিয়ে বাবাকে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকেন। এ সময় জমিলা বেগম (৫০) এসে ছেলেকে বাধা দিতে গেলে তাঁকেও দা দিয়ে কোপাতে থাকেন শরিফ। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় জমিলার। মতি মিয়ার চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন এসে তাঁদের উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। মতি মিয়ার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে জরুরি ভিত্তিতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। আজ সকাল ৮টার দিকে মতি মিয়ার মৃত্যু হয়।
এদিকে হত্যার ঘটনায় শরিফ মিয়াকে আসামি করে সদর মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন তাঁর বড় ভাই।
নরসিংদী সদর মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. সালাউদ্দিন মিয়া জানান, ঘটনার পরপরই গা ডাকা দেন শরিফ। তাঁকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।