রৌমারীতে পাটের আঁশ ছাড়াতে ব্যস্ত কৃষকরা

কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলায় এখন পাট থেকে আঁশ ছাড়ানো ও বিক্রির ভরা মৌসুম চলছে। উপজেলার দাঁতভাঙ্গা, যাদুরচর, শৌলমারী, চরশৌলমারী এবং রৌমারী সদর ইউনিয়নের বিভিন্ন বিল ও খালে কৃষকেরা সকাল থেকে রাত পর্যন্ত পাট নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
আজ বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সরেজমিনে দেখা যায়, কৃষকেরা কোমর পানিতে নেমে দল বেঁধে পাট থেকে আঁশ ছাড়ানোর কাজ করছেন। পাশে সারি সারি করে সাজানো আছে আঁশ ও পাটখড়ি, যা শুকানোর জন্য রাখা হয়েছে। এই দৃশ্য গ্রামের মানুষের মধ্যে এক কর্মচঞ্চল পরিবেশ সৃষ্টি করেছে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছর রৌমারীতে ২ হাজার ৩৭০ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে, যা থেকে হেক্টর প্রতি ৩.২ মেট্রিক টন ফলন পাওয়া গেছে। গত বছরও একই পরিমাণ জমিতে আবাদ হলেও ফলন ছিল হেক্টর প্রতি ৩ মেট্রিক টন। এই বছর পাটের ফলন গত বছরের তুলনায় ভালো হয়েছে বলে কৃষি অফিস জানিয়েছে।
পাটকে কেন্দ্র করে রৌমারীর গ্রামীণ অর্থনীতি বেশ চাঙ্গা হয়ে উঠেছে। কৃষকেরা এই বছর পাটের ন্যায্যমূল্য পাচ্ছেন, যা তাদের মধ্যে স্বস্তি ফিরিয়ে এনেছে। কৃষকদের এখন আর পাটের দাম নিয়ে দুশ্চিন্তা নেই। তবে তারা এই ধারাটি যেন অব্যাহত থাকে সেই দাবি জানিয়েছেন।
একজন কৃষক আব্দুল গফুর বলেন, আমরা ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত পানিতে কাজ করি। প্রচণ্ড কষ্ট হলেও এটাই আমাদের প্রধান জীবিকা। যদি বাজারে ভালো দাম পাই, তবে এই কষ্ট সার্থক হবে।
আরেক কৃষক নূরুল ইসলাম বলেন, এই বছর ফলন ভালো হয়েছে। আমরা চাই, সরকার ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করলে আমাদের কষ্ট কমে যাবে।
রৌমারী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কাইয়ুম চৌধুরী জানান, পাট বাংলাদেশের একটি ঐতিহ্যবাহী অর্থকরী ফসল। এই বছর ফলন তুলনামূলকভাবে ভালো হয়েছে। কৃষি অফিস থেকে কৃষকদের নিয়মিত পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে এবং বাজারে ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয় করা হচ্ছে।