শিশুর ডায়রিয়া হলে কী করতে হবে?

গরমকালে শিশুদের ডায়রিয়ার সমস্যা দেখা দেয়। ডায়রিয়া হলে কী করতে হবে এ বিষয়ে এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিনের ২৪২৮তম পর্বে এ বিষয়ে কথা বলেছেন ডা. মো. রিয়াজ মোহাম্মদ। বর্তমানে তিনি ঢাকা শিশু হাসপাতালের এইচডিইউ অ্যান্ড আইসুলেশন বিভাগে সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত আছেন।
প্রশ্ন: যে বাচ্চাদের বাসায় রেখে চিকিৎসা করা যায়, তাদের বেলায় কী করবে? কী খাওয়াবে? তার খাবারের ধরন কী হবে? কোনো খাবারে নিষেধাজ্ঞা আছে কি না বা ওরস্যালাইন বা পানীয় কীভাবে খাওয়াবে?
উত্তর: যখনই ডায়রিয়া হবে বা যখনই বমি খুব বেশি হবে, তখন অবশ্যই ওরস্যালাইন খাওয়ানো উচিত। স্যালাইন আমাদের খুব বেশি প্রয়োজন। যতখানি পারি আমরা তাকে বাসায় ওরস্যালাইন খাওয়াব। কোনো কোনো ক্ষেত্রে ওরস্যালাইন যদি নাও থাকে, পানীয় বা তরলজাতীয় কিছু খাওয়াতে হবে। তাতে করে যদি বাচ্চা বমিও করে দেয়, তারপরও খাওয়ানোর চেষ্টা করতে হবে। যে ক্ষেত্রে একেবারেই বমি করে দিচ্ছে, খাওয়ানো যাচ্ছে না সেই ক্ষেত্রে হাসপাতালে অবশ্যই নিতে হবে। তখন কিন্তু আইভি পথে স্যালাইন দিতে হবে। এটি গুরুত্বপূর্ণ।
প্রশ্ন: হাসপাতালে আপনারা কীভাবে চিকিৎসা করে থাকেন?
উত্তর: যদি জটিল ডায়রিয়া হয় বা দেখি যে প্রস্রাব বন্ধ হয়ে গেছে, তখন প্রথমেই আমরা স্যালাইন দিই। এ ছাড়া যদি অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়ার দরকার পড়ে, সে ক্ষেত্রে আমরা অ্যান্টিবায়োটিক দিই। বাসায় তো আমরা পরামর্শ দিই বাচ্চাটা যদি পানিশূন্য হয়, তাহলে যে কোনো পানি, স্যালাইন খেতে বলি। যদি প্রয়োজন হয় স্প্রাইট কিংবা সেভেন আপের ভেতর লবণ দিয়েও খেতে বলি। অনেক মা এসে বলছে শিশু ওরস্যালাইন খাচ্ছে না, স্প্রাইট-সেভেন আপ খাচ্ছে। আমরা একটু লবণ দিয়ে সেটাও খেতে বলি। এটাও তার পানিশূন্যতা কমাতে সাহায্য করে। যদিও কোক, সেভেন আপ এগুলো খুব ভালো জিনিস নয়। উপায় না থাকলে তখন এটিও করতে হবে।
প্রশ্ন: ডায়রিয়া হলে যদি সময়মতো যথাযথ চিকিৎসা না দেওয়া হয়, তাহলে কী জটিলতা হতে পারে?
উত্তর: অনেক জটিলতা হতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে বাচ্চা মারাও যেতে পারে। আবার বেঁচে থাকলে ডিস ইলেকট্রোলাইকেমিয়া হতে পারে। ইলেকট্রোলাইট কমে যেতে পারে। কিডনি একেবারে অকেজো হয়ে যেতে পারে। হার্টও নষ্ট হতে পারে। পানিশূন্যতার জন্য পুরো শরীরে একটি ভারসাম্যহীনতা তৈরি হতে পারে। সব কিছুই হতে পারে। তাই সময়মতো চিকিৎসা জরুরি।