Skip to main content
NTV Online

মত-দ্বিমত

মত-দ্বিমত
  • অ ফ A
  • প্রতিক্রিয়া
  • সমসাময়িক
  • বহির্বিশ্ব
  • ব্যঙ্গ রঙ্গে
  • ফিরে দেখা
  • স্মরণ
  • বিদেশি কলাম
  • নগর দর্পণ
  • অতিথি কলাম
  • খেলাধুলা
  • পাঠকের কলাম
  • বিবিধ
  • বাংলাদেশ
  • বিশ্ব
  • খেলাধুলা
  • বিনোদন
  • অর্থনীতি
  • শিক্ষা
  • মত-দ্বিমত
  • শিল্প ও সাহিত্য
  • জীবনধারা
  • স্বাস্থ্য
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ভ্রমণ
  • ধর্ম ও জীবন
  • নির্বাচন
  • সহজ ইংরেজি
  • প্রিয় প্রবাসী
  • আইন-কানুন
  • চাকরি চাই
  • অটোমোবাইল
  • হাস্যরস
  • শিশু-কিশোর
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • English Version
  • এনটিভি বাজার
  • এনটিভি কানেক্ট
  • যোগাযোগ
  • English Version
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি অস্ট্রেলিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি কানেক্ট
  • ভিডিও
  • ছবি
  • এনটিভির অনুষ্ঠান
  • বিজ্ঞাপন
  • আর্কাইভ
  • কুইজ
  • বাংলাদেশ
  • বিশ্ব
  • খেলাধুলা
  • বিনোদন
  • অর্থনীতি
  • শিক্ষা
  • মত-দ্বিমত
  • শিল্প ও সাহিত্য
  • জীবনধারা
  • স্বাস্থ্য
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ভ্রমণ
  • ধর্ম ও জীবন
  • নির্বাচন
  • সহজ ইংরেজি
  • প্রিয় প্রবাসী
  • আইন-কানুন
  • চাকরি চাই
  • অটোমোবাইল
  • হাস্যরস
  • শিশু-কিশোর
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • English Version
  • এনটিভি বাজার
  • এনটিভি কানেক্ট
  • যোগাযোগ
  • English Version
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি অস্ট্রেলিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি কানেক্ট
  • ভিডিও
  • ছবি
  • এনটিভির অনুষ্ঠান
  • বিজ্ঞাপন
  • আর্কাইভ
  • কুইজ
Follow
  • মত-দ্বিমত
ছবি

জামায়াতের জাতীয় সমাবেশ

মন্টিনিগ্রোতে তাসনিয়া ফারিণ

রঙ বেরঙের ফারিয়া শাহরিন

গল ফোর্টের ইতিহাসে সাদিয়া

তানিয়া বৃষ্টির দিনরাত্রি

সুইমিংপুলে ভাবনা

ভিকারুননিসায় শিক্ষার্থীদের উল্লাস

উচ্ছ্বসিত শিক্ষার্থীরা

স্টাইলিশ পারসা ইভানা

অন্য এক তানজিন তিশা

ভিডিও
ধা নাটক : কাজিনস পর্ব ০৫
ধা নাটক : কাজিনস পর্ব ০৫
প্লিজ আমাকে ক্ষমা করে দাও : পর্ব ৭
কোরআন অন্বেষা : পর্ব ১৮৪
কোরআন অন্বেষা : পর্ব ১৮৪
জোনাকির আলো : পর্ব ১৩৫
আলোকপাত : পর্ব ৭৮২
আলোকপাত : পর্ব ৭৮২
সংলাপ প্রতিদিন : পর্ব ২৮৬
সংলাপ প্রতিদিন : পর্ব ২৮৬
ছাত্রাবাঁশ : পর্ব ২৯
কোরআনুল কারিম : পর্ব ১৮
কোরআনুল কারিম : পর্ব ১৮
রাতের আড্ডা : পর্ব ১২
রাতের আড্ডা : পর্ব ১২
স্বাস্থ্য প্রতিদিন : পর্ব ৫৫৭৪
স্বাস্থ্য প্রতিদিন : পর্ব ৫৫৭৪
মুহম্মদ জাফর ইকবাল
১৪:০১, ১০ এপ্রিল ২০১৫
মুহম্মদ জাফর ইকবাল
১৪:০১, ১০ এপ্রিল ২০১৫
আপডেট: ১৪:০১, ১০ এপ্রিল ২০১৫
আরও খবর
ড. জাফর ইকবাল হত্যাচেষ্টায় হামলাকারীর যাবজ্জীবন
হৃদয় মণ্ডলকে মুক্তি দিন, নইলে আমাকেও গ্রেপ্তার করুন : জাফর ইকবাল
সফলতা লাভে দক্ষতা অর্জনের কোনো বিকল্প নেই : জাফর ইকবাল
‘শাবিপ্রবির শিক্ষার্থীদের আন্দোলন থামানোর প্রক্রিয়াগুলো নিষ্ঠুর ও দানবীয়’
অবশেষে অনশন ভাঙলেন শাবিপ্রবির শিক্ষার্থীরা

গণিত বিজ্ঞান প্রযুক্তি এবং বাংলাদেশের মেয়ে

মুহম্মদ জাফর ইকবাল
১৪:০১, ১০ এপ্রিল ২০১৫
মুহম্মদ জাফর ইকবাল
১৪:০১, ১০ এপ্রিল ২০১৫
আপডেট: ১৪:০১, ১০ এপ্রিল ২০১৫
ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল

আমাদের সবারই ধারণা, আমাদের সবকিছু ভুল, আমেরিকা-ইউরোপের সবকিছু ঠিকঠাক। সবকিছু নিখুঁত। লেখাপড়া, জ্ঞান-বিজ্ঞানের বিষয় হলে তো কথাই নেই। আমরা ধরে নিই, পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে আমাদের নিশ্চয়ই কোনো তুলনা হতে পারে না। সেই আমেরিকার একটা পরিসংখ্যান হঠাৎ করে আমার চোখে পড়েছে, পরিসংখ্যানটি মেয়েদের নিয়ে। জ্ঞান-বিজ্ঞানে সে দেশের মেয়েরা কেমন করছে, তার পরিসংখ্যানটি দেখে আমার চোখ রীতিমতো ছানাবড়া হয়ে গেল। বিজ্ঞান-প্রযুক্তিতে তারা ধীরে ধীরে এগিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু তথ্যপ্রযুক্তি বা আরো স্পষ্ট করে বললে, কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগে ১৯৮৫ সালে কোনো একটা মহাবিপর্যয় ঘটে যাওয়ার পর সে দেশের মেয়েরা হঠাৎ করে কম্পিউটার সায়েন্স পড়া ছেড়ে দিল এবং তার পর এ বিষয়ে মেয়েদের সংখ্যা কমতে শুরু করেছে। এখন সেই দেশে কম্পিউটার সায়েন্সে ছেলেমেয়েদের সংখ্যায় রীতিমতো আকাশ-পাতাল পার্থক্য।

১৯৮৫ সালে কী এমন ঘটনা ঘটেছিল, যে কারণে সে দেশের মেয়েরা কম্পিউটার সায়েন্স পড়া ছেড়ে দিল? সেই সময়টিতে আমি আমেরিকায় ছিলাম এবং মোটামুটিভাবে বিশ্লেষকদের সঙ্গে আমি একমত, সেই সময়টিতে আসলে প্রথমবারের মতো পার্সোনাল কম্পিউটার বা পিসি বাজারে আসতে শুরু করেছিল। এর আগে কম্পিউটার ছিল বিশাল এবং সেগুলো বড় বড় অফিস বা ল্যাবরেটরিতে থাকত।কোনো মানুষ কল্পনাও করতে পারত না যে, সেটা ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য নিজের বাসায় পড়ার টেবিলে রাখা সম্ভব। বিশ্লেষকদের ধারণা, পার্সোনাল কম্পিউটার আসার সাথে সাথেই সে দেশের মানুষরা সেগুলো কিনতে থাকে।

সেই কম্পিউটার বিশেষ কিছু করতে পারত না। বলা যেতে পারে, সেগুলো ছিল মোটামুটি একটা খেলনা এবং আমেরিকান পরিবারে বাবারা সেই খেলনা নিয়ে খেলতে শুরু করল। বাবার সঙ্গে সেই খেলনায় যোগ দিল তাদের ছেলেরা। যারা পার্সোনাল কম্পিউটার নামের সেই মূল্যবান খেলনাটি বাজারে বিক্রি করতে শুরু করল, তারা সেটাকে শুধু পুরুষ ও ছেলেদের খেলনা হিসেবে বিক্রি করতে শুরু করে এবং বাসার মেয়েটির যত আগ্রহই থাকুক, তাকে সেটা নিয়ে খেলতে দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হলো না। ছেলেরা ধীরে ধীরে কম্পিউটার নিয়ে সময় কাটাতে শুরু করল। সেটা খুলে ভেতরে দেখতে শুরু করল, যন্ত্রপাতি নাড়াচাড়া করতে শুরু করল এবং কিছুদিনের মধ্যে দেখা গেল, কম্পিউটার-সংক্রান্ত বিষয়টিতে পুরুষদের একচেটিয়া রাজত্ব। মেয়েরা সেখানে পিছিয়ে পড়তে শুরু করেছে এবং তারা আর কখনো ছেলেদের সমান হতে পারেনি।

আমাদের দেশে বিষয়টি এত খারাপ হতে পারেনি। এ দেশে এসে আমি পদার্থবিজ্ঞানের মানুষ হয়েও দীর্ঘদিন কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগটি দেখেশুনে রেখেছি, আমি এই বিভাগ থেকে ছাত্রীদের ঝরে যেতে দেখিনি; বরং ছেলেদের মতো সমান আগ্রহ নিয়ে মেয়েদের এই বিষয়টি পড়তে দেখেছি। তারা হয়তো সংখ্যায় কম; কিন্তু তাদের আগ্রহ কম, সেটি কিছুতেই বলা যাবে না।

সায়েন্স কিংবা ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে মেয়েরা কেন কম, তার কারণ খুঁজে বের করা মোটেও কঠিন নয়। জন্মের পর থেকে তাদের কানের কাছে সবাই ঘ্যান ঘ্যান করে বলে গেছে, ‘বড় হয়ে তুমি ডাক্তার হতে পারো, কিন্তু খবরদার ইঞ্জিনিয়ার হতে পারবে না।’ কাজেই বড় হয়ে তাদের একটা অংশ নিজের অজান্তেই বিশ্বাস করে বসে থাকে যে, মেয়েদের ইঞ্জিনিয়ার হওয়া মনে হয় ঠিক নয়। তাদের অনেকে ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে ভর্তি হয়, কিন্তু সব সময়েই তাদের ভেতর এক ধরনের দুর্ভাবনা কাজ করে। চারপাশের পুরুষ মানুষ তাদের সজ্ঞানে হোক, অজ্ঞানে হোক—বোঝানোর চেষ্টা করে যে তারা ভুল বিষয়ে চলে এসেছে। একজন পুরুষ যখন তার জন্য স্বাভাবিক পরিবেশে কাজ করে, মেয়েটিকে তখন একটা প্রতিকূল পরিবেশে কাজ করতে হয়।

|| দুই ||
যখন বয়স কম ছিল, তখন প্রচুর গল্প-উপন্যাস পড়েছি, প্রবন্ধের বইগুলো দূরে সরিয়ে রেখেছি। এখন বয়স হয়েছে, হঠাৎ করে আবিষ্কার করেছি প্রবন্ধের বই পড়তে বেশ ভালো লাগে। কোনো একটি বিচিত্র কারণে মানুষের মস্তিষ্ক কীভাবে কাজ করে, সে ধরনের বই পড়তে আমার খুব আগ্রহ হয় এবং সুযোগ পেলেই সেগুলো পড়ি। পুরুষ ও মহিলার মস্তিষ্কের মাঝে কোনো পার্থক্য আছে কি না, সেটা জানার জন্য আমি অনেক পরিশ্রম করেছি। পুরুষ ও মহিলার চিন্তাভাবনার প্রক্রিয়ায় পার্থক্য আছে, সেটা অনেকেই স্বীকার করেছেন। কিন্তু আমি কোথাও দেখিনি যে, ছেলেরা মেয়েদের থেকে ভালো গণিত, বিজ্ঞান বা প্রযুক্তি বুঝতে পারে; সে ধরনের কোনো তথ্য পাওয়া গেছে।

পৃথিবীর এক নম্বর বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে হার্ভার্ড। তার প্রেসিডেন্ট লরেন্স সামার্স একটা সভায় একবার বললেন, স্কুল-কলেজে ছেলেরা বিজ্ঞান ও গণিত মেয়েদের থেকে ভালো বুঝতে পারে। সেটা বলার পর সবাই সেই প্রেসিডেন্টের পেছনে লেগে পড়ল; তার কাছে জানতে চাইল, তিনি কোথায় সেই তথ্য পেয়েছেন। পৃথিবীতে কোথাও এটা বৈজ্ঞানিক তথ্য হিসেবে প্রতিষ্ঠিত নয়। এটা হচ্ছে পুরুষশাসিত সমাজে মাথামোটা পুরুষদের এক ধরনের ব্যক্তিগত বিশ্বাস। এই পুরোপুরি অবৈজ্ঞানিক কথাটা বলার কারণে হার্ভার্ড প্রেসিডেন্টকে বরখাস্ত করেছিল। মজার ব্যাপার হচ্ছে, আমাদের দেশে আমরা পুরুষ মানুষেরা যদি নিরিবিলি কথা বলি এবং ছেলে ও মেয়েদের বিজ্ঞান ও গণিতে আগ্রহ নিয়ে আলোচনা করি, তাহলে অবধারিতভাবে আমরা তাদের কথায় হার্ভার্ডের প্রেসিডেন্টের বক্তব্যের প্রতিধ্বনি শুনতে পাব।

বেশির ভাগ পুরুষ মানুষেরই মেয়েদের বিজ্ঞান কিংবা গণিতে দখলের ব্যাপারে এক ধরনের অযৌক্তিক নেতিবাচক ধারণা আছে। তাদের একটা প্রধান যুক্তি, গণিতের নোবেল পুরস্কারের সমমানের পুরস্কারের নাম ফিল্ডস মেডেল এবং কোনো মেয়ে কখনো ফিল্ডস মেডেল পায়নি। তারা এখন সেই যুক্তিটি দেখাতে পারবে না; কারণ সর্বশেষ ফিল্ডস মেডেলটি পেয়েছে মরিয়ম মির্জাখানি নামের একজন মেয়ে। মেয়েটি ইরানি বংশোদ্ভূত এবং এখন প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক। কিন্তু সেটি আসলে খুব গুরুত্বপূর্ণ নয়, কারণ জ্ঞান-বিজ্ঞানে মেয়েরা ছেলেদের সমান সমান কৃতিত্ব দেখাতে পারছে কি না, সেটা যাচাই করার আগে আমাদের প্রশ্ন করতে হবে—মেয়েদের আমরা ছেলেদের সমান সুযোগ দিতে পেরেছি কি না। আমরা পারিনি। একজন পুরুষ মানুষ জীবনের যে সময়টাতে তাঁর ক্যারিয়ারটুকু গড়ে তোলেন, ঠিক সেই সময়টাতে একজন মেয়েকে সন্তানের জন্ম দিয়ে তাকে মানুষ করতে হয়। জ্ঞান-বিজ্ঞানে অবদান রাখার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময়টাতে আমরা কখনো মেয়েদের ছেলেদের সমান সুযোগ দিতে পারি না।

তাই আমরা যদি তাদের ছেলেদের সমান সংখ্যক হিসেবে না পাই, তাহলে অবাক হওয়ার কী আছে? যখন একজন মেয়েকে ঠিক একজন ছেলের সমান সুযোগ দিব, তখনই তাদের দুজনের সাফল্যের তুলনা করার একটা সুযোগ পাব, তার আগে নয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতা করার কারণে আমাকে অসংখ্যবার শিক্ষক নিয়োগের কমিটিতে বসে প্রার্থীদের ইন্টারভিউ নিতে হয়েছে। আমার সঙ্গে বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকরা থেকেছেন এবং তাঁদের কথাবার্তা শুনে মাঝেমধ্যে আমার হাত-পা ঠান্ডা হয়ে গেছে। একবার একজন মেয়ে প্রার্থী খুব চমৎকার ইন্টারভিউ দেওয়ার পর আমি যখন তাকে শিক্ষক হিসেবে নেওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করেছি, তখন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ অধ্যাপক আমার দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘এই মেয়ের বিয়ে হয়নি।’

আমি অবাক হয়ে বললাম, ‘তাতে সমস্যা কী?’

‘কয়দিন পর প্রেম করবে, বিয়ে করবে।’

আমি আরো অবাক হয়ে বললাম, ‘নিশ্চয়ই করবে। সমস্যা কোথায়?’

‘তখন সমস্যা শুরু হবে। বছর ঘুরতে না ঘুরতেই বাচ্চা হবে। ম্যাটার্নিটি লিভ দিতে হবে।’
আমি বললাম, ‘দিতে হলে দিব।’

‘বাচ্চা জন্মানোর পর আসল মজা টের পাবেন। আজ বাচ্চার জ্বর, কাল বাচ্চার ফ্লু, পরশু চিকেন পক্স। এই মেয়েকে ডিপার্টমেন্টে পাবেনই না।’

আমি অবাক হয়ে গুরুত্বপূর্ণ অধ্যাপকের দিকে তাকিয়ে রইলাম। তিনি আমাকে পরামর্শ দিলেন; বললেন, ‘মেয়েদের টিচার হিসেবে নেবেন না। একটা ছেলে টিচারের অর্ধেক সার্ভিসও পাবেন না।’

সেই গুরুত্বপূর্ণ অধ্যাপকের প্রতিটি কথাই সম্ভবত সত্যি; কিন্তু আমি সেই কথায় বিন্দুমাত্র গুরুত্ব দিইনি। সন্তানের জন্মকাল এবং লালনপালন প্রক্রিয়ায় ব্যস্ত থাকার কারণে একজন মেয়ের কাছ থেকে অর্ধেক সার্ভিস না পেলেও মেয়েরা অনুগ্রহ করে সন্তান জন্ম দেওয়ায় এই দায়িত্বটা পালন করছে বলে এই পুরো মানব সভ্যতার জন্ম হয়েছে এবং পৃথিবীটা টিকে আছে। আমার মায়ের প্রতি আমার কৃতজ্ঞতায় শেষ নেই, যিনি সন্তান জন্ম দেওয়ার যন্ত্রণা এবং ঝামেলায় ত্যক্তবিরক্ত হয়ে আমাকে জন্ম দেওয়া থেকে বিরত হননি। তাহলে এই পৃথিবীটাই আমার দেখা হতো না।

বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভাগীয় প্রধান হিসেবে কাজ করার সময় আমার মেয়ে সহকর্মীদের জীবনের সন্তান-সংক্রান্ত বাড়তি কাজের জটিলতা দেখে আমার মনে হয়েছে, সব বিশ্ববিদ্যালয়েই ছোট শিশুদের দেখেশুনে রাখার জন্য একটা চমৎকার ডে-কেয়ার থাকা দরকার। শুধু এই সেবাটুকু দিতে পারলেই আমাদের মেয়ে সহকর্মীদের জীবনটুকু অনেকখানি সহজ হয়ে যেতে পারত।

|| তিন ||
আমাদের খুবই সৌভাগ্য যে, আমাদের দেশে মেয়েদের লেখাপড়ায় যথেষ্ট গুরুত্ব দেওয়া হয়। নিচু ক্লাসে ছেলে ও মেয়ের সংখ্যা প্রায় সমান সমান। ছেলেমেয়েরা যখন বড় হতে থাকে, তখন মেয়েদের সংখ্যা ছেলেদের থেকে কমতে থাকে। অনেক মা-বাবাই তাঁদের মেয়েদের লেখাপড়ার পেছনে টাকা-পয়সা খরচ করতে আগ্রহ দেখান না। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তাদের বিয়ে দিয়ে বিদায় করে দিতে অনেক বেশি আগ্রহ দেখান। আমি যখনই ছাত্রীদের সামনে কথা বলার সুযোগ পাই, তখনই অত্যন্ত চাঁছাছোলা ভাষায় তাদেরকে বলি, ‘খবরদার, লেখাপড়া শেষ করে একটা চাকরি নেওয়ার আগে কখনো বিয়ে করবে না।’

আমার ধারণা, অনেক বাবা-মা তাদের মেয়েদের মাথায় এ ধরনের বদবুদ্ধি ঢুকিয়ে দেওয়ার জন্য আমার ওপরে খুবই বিরক্ত হন।

আমি মোটামুটি নিশ্চিতভাবে জানি, আমার আজকের এই লেখাটি পড়ে অনেক পুরুষ মানুষই খুব বাঁকা করে একটু হাসবেন এবং তার পাশে বসে থাকা আরেকজন পুরুষ মানুষের সঙ্গে মেয়েদের নিয়ে কোনো এক ধরনের অসম্মানজনক কথা বলবেন এবং মেয়েদের নিয়ে কোনো এক ধরনের কৌতুক করবেন। কেউ কেউ তাদের ব্যক্তিগত জীবনের উদাহরণ দিয়ে প্রমাণ করার চেষ্টা করবেন, গণিত, বিজ্ঞান কিংবা প্রযুক্তিতে মেয়েরা আসলে দুর্বল—মুখে যত যাই বলা হোক। গণিত, বিজ্ঞান কিংবা প্রযুক্তি মেয়েদের বিষয় নয়—মেয়েরা লেখাপড়া করুক, সেখানে তাদের কোনো আপত্তি নেই—কিন্তু গণিত, বিজ্ঞান বা প্রযুক্তির মতো বিষয়গুলো ছেলেদের জন্যই ছেড়ে দেওয়া বুদ্ধিমানের কাজ।

আমি আশা করছি, আমার এই লেখাটি অনেক মেয়ের চোখে পড়ুক। তার কারণ, আমি নিশ্চিতভাবে জানি আমরা আমাদের দেশের মেয়েদের ছেলেদের সমান গুরুত্ব দিই না। বেশির ভাগ মেয়েই স্বীকার করবে, তাদেরকে তাদের পরিবারের ছেলেদের সমান সুযোগ দিয়ে বড় করা হয়নি। তারা অভিযোগ করে বলবে যে, নানা রকম বিধিনিষেধ দিয়ে তাদের হাত-পা বেঁধে রাখার চেষ্টা করা হয়েছে। তাদের বারবার বোঝানো হয়েছে, মেয়ে হয়ে জন্ম নিয়েছে বলে তাদের গাণিতিক বা বৈজ্ঞানিক বুদ্ধিমত্তা কম কিংবা বলা হয়েছে, মেয়ে বলে তাদের জীবনে গণিত বা বিজ্ঞানের প্রয়োজন নেই। তাদের বাবা-মা বলেছেন; তাদের ভাইয়েরা বলেছেন; চাচারা বলেছেন; এমনকি তাদের স্কুলের অনেক শিক্ষকও এই কথা বলে এসেছেন।

আমি সবাইকে মনে করিয়ে দিতে চাই যে, একটা ছেলে যেটুকু পারে, একটি মেয়েও ঠিক সেটুকু পারে। সত্যি কথা বলতে কি, একটা মেয়েকে তার জীবনে আরো অনেক কিছু করতে হয়, যেগুলো একটা ছেলেকে কখনো করতে হয় না। সে হিসেবে একই জায়গায় পৌঁছানো একটা ছেলে এবং মেয়ের ভেতরে মেয়েটিকে অনেক বেশি কৃতিত্ব দিতে হবে। আমি বহুদিন থেকে এ দেশের ছোট ছোট ছেলেমেয়ের সাথে আছি। এ দেশের অলিম্পিয়াড আন্দোলনের সাথে যুক্ত থাকার কারণে আমার খুব চমৎকার কিছু অভিজ্ঞতা হয়েছে। আমি অনেকবার আমার চোখের সামনে সাধারণ একটি শিশুকে অসাধারণ একজন গণিতবিদ হয়ে উঠতে দেখেছি। যে মেয়েটি ভয়ে ভয়ে আমাকে বলেছে, ‘স্যার, আমি কিছু পারি না,’ তাকে আমি বলেছি, ‘অবশ্যই তুমি পারবে, কে বলেছে তুমি পার না’—সেই মেয়েটি আমার কথা বিশ্বাস করে। তখন দেখতে দেখতে সে আত্মবিশ্বাসহীন একজন মানুষ থেকে বিস্ময়কর আত্মবিশ্বাসী একজন গণিতবিদ কিংবা কম্পিউটার প্রোগ্রামার হয়ে উঠেছে। পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ বিশ্ববিদ্যালয় তাদের নেওয়ার জন্য রীতিমতো কাড়াকাড়ি শুরু করেছে।

তাই মাঝেমধ্যেই আমার মনে হয়, আমার যদি সুযোগ থাকত, তাহলে আমি আমাদের দেশের সব ছোট ছোট মেয়ের কাছে গিয়ে তাদের বলে আসতাম, বিজ্ঞান, গণিত কিংবা প্রযুক্তি মেয়েদের বিষয় নয়, সেটি মোটেও সত্যি কথা নয়। সত্যি কথা হচ্ছে, লেখাপড়ার ব্যাপারে একজন ছেলে যেটুকু পারে, একটি মেয়েও ঠিক ততটুকু পারে। যদি প্রয়োজন হয় আর চেষ্টা করে, তারা আরো বেশি পারে।
আমি সব সময় স্বপ্ন দেখি, আমাদের দেশের মেয়েরা আত্মবিশ্বাসী হয়ে বিপুল সংখ্যায় গণিত, বিজ্ঞান, প্রযুক্তিতে এগিয়ে এসে সারা পৃথিবীর একটা ভুল ধারণা ভেঙে দেবে।
৯ এপ্রিল-২০১৫

ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল : লেখক ও অধ্যাপক, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।

ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল

পাঠকের পছন্দ

গরমে ঘামাচিতে জেরবার?

ভ্রমণের সময় যা মনে রাখবেন

কীভাবে হবেন ভালো সহকর্মী?

সর্বাধিক পঠিত
  1. টাকা জোগাড় করতে পারেনি পরিবার, চিকিৎসার অভাবে মারা গেলেন এই তেলেগু অভিনেতা
  2. ‘কিং’ সিনেমার শুটে আহত শাহরুখ, নেওয়া হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে
  3. আট দিনে কত আয় করল রাজকুমারের ‘মালিক’?
  4. বাটন ফোন ব্যবহার করেন ফাহাদ ফাসিল, দাম ১০ লাখ টাকা
  5. যে কারণে ড্রাইভিং নিষেধাজ্ঞায় ‘হ্যারি পটার’ তারকা এমা ওয়াটসন
  6. মেয়ের মা হলেন কিয়ারা
সর্বাধিক পঠিত

টাকা জোগাড় করতে পারেনি পরিবার, চিকিৎসার অভাবে মারা গেলেন এই তেলেগু অভিনেতা

‘কিং’ সিনেমার শুটে আহত শাহরুখ, নেওয়া হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে

আট দিনে কত আয় করল রাজকুমারের ‘মালিক’?

বাটন ফোন ব্যবহার করেন ফাহাদ ফাসিল, দাম ১০ লাখ টাকা

যে কারণে ড্রাইভিং নিষেধাজ্ঞায় ‘হ্যারি পটার’ তারকা এমা ওয়াটসন

ভিডিও
এই সময় : পর্ব ৩৮৪৮
এই সময় : পর্ব ৩৮৪৮
কোরআন অন্বেষা : পর্ব ১৮৪
কোরআন অন্বেষা : পর্ব ১৮৪
সংলাপ প্রতিদিন : পর্ব ২৮৬
সংলাপ প্রতিদিন : পর্ব ২৮৬
টেলিফিল্ম : শেষ থেকে শুরু
টেলিফিল্ম : শেষ থেকে শুরু
এক্সপার্ট টুডেস কিচেন : পর্ব ৩০৬
ফাউল জামাই : পর্ব ১০৯
ফাউল জামাই : পর্ব ১০৯
ছাত্রাবাঁশ : পর্ব ২৯
রাতের আড্ডা : পর্ব ১২
রাতের আড্ডা : পর্ব ১২
প্লিজ আমাকে ক্ষমা করে দাও : পর্ব ৭
আপনার জিজ্ঞাসা (সরাসরি) : পর্ব ৮৭৫
আপনার জিজ্ঞাসা (সরাসরি) : পর্ব ৮৭৫

Alhaj Mohammad Mosaddak Ali

Chairman

NTV Online, BSEC Building (Level-8), 102 Kazi Nazrul Islam Avenue, Karwan Bazar, Dhaka-1215 Telephone: +880255012281 up to 5, Fax: +880255012286 up to 7

Alhaj Mohammad Mosaddak Ali

Chairman

NTV Online, BSEC Building (Level-8), 102 Kazi Nazrul Islam Avenue, Karwan Bazar, Dhaka-1215 Telephone: +880255012281 up to 5, Fax: +880255012286 up to 7

Browse by Category

  • About NTV
  • Career
  • NTV Programmes
  • Advertisement
  • Web Mail
  • NTV FTP
  • Satellite Downlink
  • Europe Subscription
  • USA Subscription
  • Privacy Policy
  • Terms & Conditions
  • Contact
  • Archive

NTV Prime Android App

Find out more about our NTV: Latest Bangla News, Infotainment, Online & Live TV

Qries

Reproduction of any content, news or article published on this website is strictly prohibited. All rights reserved

x