নির্বাচন কমিশন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে খুনের মামলা হওয়া উচিত : মাদ্রাজ হাইকোর্ট

ভারতের বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে দেশটির নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিলেন মাদ্রাজ হাইকোর্ট। দেশের বর্তমান ভয়াবহ করোনা পরিস্থিতিতে ভোটগ্রহণ চালু রাখায় নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে খুনের মামলা হওয়া উচিত বলে জানিয়েছেন মাদ্রাজ হাইকোর্ট।
একুশের নির্বাচন নিয়ে একটি জনস্বার্থ মামলায় এই বক্তব্য জানিয়েছেন মাদ্রাজ হাইকোর্ট। ওই উচ্চ আদালত জানিয়েছেন, কমিশনের পদক্ষেপের কারণেই রাজনৈতিক দলের নেতা, কর্মী ও সমর্থকেরা কোভিড-১৯ বিধি মানেননি। যখন ভোটের প্রচার চলছিল তখন কমিশন কোথায় ছিল? আগামী ২ মে পশ্চিমবঙ্গসহ পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের ভোটগণনার ক্ষেত্রে কি ব্যবস্থা নিচ্ছে কমিশন? তা নিয়ে ৩০ এপ্রিলের মধ্যে হলফনামা দিয়ে জানানোর নির্দেশ দিয়েছেন মাদ্রাজ হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে ডিভিশন বেঞ্চ। আর তা না হলে আগামী ২ মে ভোটগণনা বন্ধ করে দেওয়া হতে পারে বলেও জানিয়েছেন মাদ্রাজ হাইকোর্ট।
আর মাদ্রাজ হাইকোর্টের এই নির্দেশের পরেই নির্বাচন কমিশনকে নিশানা করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো (প্রধান) মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, এই নির্বাচন কমিশন থাকলে নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে না। করোনার বর্তমান পরিস্থিতির জন্য কমিশনকে দায়ী করে তিনজন মনোনীত লোক নিয়ে নির্বাচন কমিশনের ভোট পরিচালনা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।
মমতা বলেন, বাইরের তিন লাখ লোক রয়েছে রাজ্যে। কী করে তারা একদিন এই রাজ্যে থাকে তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। এর আগে মমতা অভিযোগ করেছিলেন, রাজ্যে মোদির সভার হ্যাঙ্গার তৈরি করতে বাইরের রাজ্য থেকে হাজার হাজার লোক আনা হচ্ছিল। এই বহিরাগতরাই রাজ্যে করোনা ছড়িয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন মমতা। একইসঙ্গে রাজ্যসহ গোটা দেশে করোনার বর্তমান ভয়াবহ পরিস্থিতির জন্য কমিশনের পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকেও দায়ী করেছেন তিনি।
একটা সময়ে নির্বাচন কমিশনে একজন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার থাকতেন। পরবর্তীতে আরও দুইজন কমিশনার তাঁর সঙ্গে দেওয়া হয়। এই তিনজনই মনোনীত। তাদের সিদ্ধান্তই কমিশনের সিদ্ধান্ত। কেন্দ্রীয় সরকার বিরোধী দলের সঙ্গে কথা বলে তাদের মনোনীত করেন। এবারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্বাচন কমিশনের ওই তিনজন মনোনীতকে নিয়েই প্রশ্ন তোলেন।
মমতা বলেন, এবারের নির্বাচন কমিশন তাদের সব সীমা ভেঙে দিয়েছে। ২০১৬ এবং ২০১৯ সালে কমিশন যা সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা তিনি মেনে নিয়েছিলেন। কিন্ত এবারে কমিশনের সিদ্ধান্ত তিনি মানবেন না। ভোট শেষ হওয়ার পর সুপ্রিম কোর্টের সংবিধান বেঞ্চের কাছে নির্বাচন কমিশনের কাজ নিয়ে তিনি অভিযোগ জানাবেন বলেও জানান।