ভারতে টিকার কাঁচামাল রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা এখনই তুলছে না যুক্তরাষ্ট্র

ভারতে নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রেকর্ড হারে বাড়লেও সে তুলনায় টিকাকরণ কম হচ্ছে। টিকার ঘাটতি নিয়ে অভিযোগ করছে দেশটির একাধিক রাজ্য। এই ঘাটতির অন্যতম কারণ হিসেবে উঠে আসছে ভারতে টিকা তৈরির কাঁচামাল রপ্তানিতে যুক্তরাষ্ট্রের বিধিনিষেধের বিষয়টি। কেন এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র—এবার সে যুক্তি দিল দেশটি। সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এ খবর জানিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, আগে তারা নিজ দেশের জনগণকে টিকা দিয়ে তারপরই কাঁচামাল রপ্তানি করবে তারা। এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্ত ভারতের চিন্তা বাড়াবে বলেই মনে করছেন ভারতীয় বিশেষজ্ঞদের একটা বড় অংশ।
টিকার কাঁচামাল রপ্তানির ওপর থেকে বিধিনিষেধ তুলে নিতে ভারতের পক্ষ থেকে বার বার মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সরকারের কাছে আবেদন করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে মার্কিন পররাষ্ট্র বিভাগের মুখপাত্র নেড প্রাইস বলেছেন, ‘এই মুহূর্তে যুক্তরাষ্ট্রবাসীকে টিকা দেওয়ার কাজ খুব ভালোভাবে চলছে। আগে দেশের মানুষের কথা ভেবেই টিকার কাঁচামাল রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।’ এই সিদ্ধান্তের ফলে শুধু যুক্তরাষ্ট্র নয়, সারা বিশ্বের মানুষের ভালো হবে বলেই দাবি করেছেন প্রাইস।
নেড প্রাইস বলেন, ‘বিশ্বে করোনায় সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত ও মৃত্যু হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে। তাই এখানকার মানুষকে টিকা না দেওয়া হলে পরবর্তীকালে ভাইরাসের নতুন কোনো ধরন দেশের বাইরেও ছড়িয়ে পড়তে পারে। তাতে অন্যান্য দেশেরও সমস্যা হতে পারে।’

কয়েকদিন আগেই ভ্যাকসিনের উৎপাদন বাড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় কাঁচামালের জোগানের আবেদন জানিয়ে মার্কিন সরকারকে টুইট করেন ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আদর পুনেওয়ালা। এরপরই যুক্তরাষ্ট্রে ভারতীয় রাষ্ট্রদূত তরণজিৎ সিং সান্ধু বাইডেন প্রশাসনের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেন। সেখানে ভারতে দ্রুত ওষুধ পাঠানোর ব্যবস্থা করার অনুরোধ জানানো হয়।
এরই মধ্যে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেনের সঙ্গে কথা বলেছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর।
জানা গেছে, বাইডেন প্রশাসন নয়াদিল্লিকে জানিয়েছে, ভারতে টিকা তৈরির ক্ষেত্রে যাতে সমস্যা না হয় সেদিকে নজর দেবে তারা। তবে প্রথমে দেশের মানুষের চাহিদা মেটানোর পরই রপ্তানির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
এদিকে এরই মধ্যে বিশ্বজুড়ে ভ্যাকসিন উৎপাদন ও সরবরাহের জন্যে কোয়াড গোষ্ঠী তৈরি হয়েছে। সেখানে ভারত-মার্কিন যৌথ উদ্যোগে যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি ভ্যাকসিন নোভাভ্যাক্স ও জনসন অ্যান্ড জনসন তৈরি করার কথা ভারতের। সেই প্রস্তুতিও শুরু হয়ে গেছে।