ভারতে ট্রাকে পচে নষ্ট হচ্ছে পেঁয়াজ, স্থানীয় বাজারে বিক্রি

বাংলাদেশে প্রবেশের জন্য ভারতীয় সীমান্তে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকভর্তি পেঁয়াজ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ফলে বাধ্য হয়ে পচে যাওয়া পেঁয়াজ রাস্তায় ফেলে দিতে হচ্ছে রপ্তানিকারকদের। অনেকে কম দামে স্থানীয় বাজারে পেঁয়াজ বিক্রি করে দিচ্ছে।
টানা গরমের মধ্যে গত সোমবার বা তারও আগে থেকে পেঁয়াজ নিয়ে সীমান্তের স্থলবন্দরগুলোতে দাঁড়িয়ে আছে ট্রাকগুলো। এরও এক সপ্তাহ আগে পেঁয়াজগুলো ভারতের মহারাষ্ট্রের নাসিক থেকে বস্তায় ভরা হয়। ১১ দিনের বেশি সময় ধরে পেঁয়াজ বস্তায় থাকায় পচন শুরু হয়েছে।
তাই বাধ্য হয়ে ব্যবসায়ীরা ট্রাকে নষ্ট হতে বসা পেঁয়াজ সীমান্তের কাছাকাছি পাইকারি বাজারে বিক্রি করে দিতে বাধ্য হচ্ছে। ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে অবস্থিত বসিরহাটের ঘোজাডাঙ্গা স্থলবন্দরে ট্রাক আটকে আছে। তাই নষ্ট হতে বসা পেঁয়াজ ব্যবসায়ীরা স্থানীয় পাইকারি বাজারে কমদামে বিক্রি করে কিছুটা ক্ষতি সামাল দিচ্ছেন।
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম স্থলবন্দর পেট্রাপোলের আমদানি-রপ্তানিকারক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী জানান, পেট্রাপোল সীমান্তে পেঁয়াজ ভর্তি বহু ট্রাক দাঁড়িয়ে রয়েছে। যারমধ্যে অনেক পেঁয়াজ নষ্ট হতে শুরু করেছে। গত সোমবার ভারত সরকারের তরফে পেঁয়াজ রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারির আগেই বিভিন্ন স্থলবন্দরে পৌঁছে যায় পেঁয়াজ ভর্তি বহু ট্রাক। ওই দিন সকালে কিছু ট্রাক বাংলাদেশে ঢুকলেও দুপুরের পর থেকে আর পেঁয়াজ ভর্তি ট্রাক বাংলাদেশে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়নি।
অন্যদিকে, ভারতের হিলি স্থলবন্দরেও বাংলাদেশে প্রবেশের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে রয়েছে পেঁয়াজ ভর্তি বহু ট্রাক। এভাবে আর কয়েকদিন দাঁড়িয়ে থাকলে বেশিরভাগ পেঁয়াজই নষ্ট হয়ে যাবে। যারফলে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন দুই দেশের ব্যাবসায়ীরা। ভারতের বিভিন্ন স্থলবন্দরে আনুমানিক ২০ হাজার টন পেঁয়াজ ভর্তি ট্রাক বাংলাদেশে প্রবেশের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে রয়েছে।
হিলি বন্দরের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট শঙ্করলাল দাস জানিয়েছেন, গত বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর এভাবেই আচমকা পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দিয়েছিল ভারত সরকার। সেবারও কয়েকদিনের মধ্যে রপ্তানির অনুমতি মিলবে বলে আশা করা হলেও তা মেলেনি। এবারও সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তির আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা।
ভারতের অল ইন্ডিয়া কৃষাণ সভার সাধারণ সম্পাদক অভিজিৎ নাভালে বলেন, কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তে মোটেই খুশি নন কৃষকরাও। বাংলাদেশে পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দিয়ে শুধু ব্যবসায়ীদের নয়, কৃষকদেরও দুরবস্থার মধ্যে ফেলে দেওয়া হয়েছে।
এদিকে মহারাষ্ট্র সরকারের শরিক দল ন্যাশনাল কংগ্রেস পার্টি- এনসিপির প্রেসিডেন্ট শারদ পাওয়ার অবিলম্বে বাংলাদেশে পেঁয়াজ রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে কেন্দ্রীয় বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গোয়েলের কাছে দাবি জানিয়েছেন।