ভারত থেকে করোনার টিকা পাওয়া নিয়ে ধোঁয়াশা কাটল

অবশেষে ভারত থেকে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা পাওয়া না পাওয়ার বিষয়ে ধোঁয়াশা কাটল। মঙ্গলবার ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আনুষ্ঠানিক ঘোষণায় জানায়, করোনার টিকা রপ্তানিতে ভারত সরকার কোনো ধরনের নিষেধাজ্ঞা দেয়নি। উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান চাইলে যে কোনো দেশে টিকা রপ্তানি করতে পারবে।
এদিকে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা জানিয়েছেন, বাংলাদেশ প্রাথমিকভাবে জিটুজি ব্যবস্থাপনায় করোনার টিকা পাবে। খবর ইন্ডিয়া টুডে ও হিন্দুস্তান টাইমসের।
ভারতের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য সচিব রাজেশ ভূষণ বলেন, আমাদের কেন্দ্রীয় সরকার কোভিড ভ্যাকসিন রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেনি। এ কথাটা পরিষ্কার হওয়া উচিত। যখন আমি কেন্দ্রীয় সরকারের কথা বলি, তখনটি তিনটি মন্ত্রণালয়ের প্রসঙ্গ এসে যায়। এর একটি হলো স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। এ মন্ত্রণালয় টিকা রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেয়নি। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ও সেটি করেনি। বিপিআই আই পি, এটাও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন একটি দপ্তর। এই দপ্তরটিও নিষেধ করেনি। নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেনি ডিরেক্টর জেনারেল অব ফরেন ট্রেডও। কাজেই আমি আমাদের মিডিয়ার বন্ধুদের বলব, যখন এ ধরনের বিভ্রান্তিকর তথ্য আপনাদের কাছে আসে, তা প্রচার থেকে বিরত থাকবেন আপনারা। তার ওপর আজ সিরাম ইনস্টিটিউট ও ভারত বায়োটেক যৌথ বিবৃতি দিয়ে বলেছে, কোভিড ভ্যাকসিনে সবার অধিকার রয়েছে। সবাই তা পাবে। এর অর্থ কী দাঁড়ায়? আমি স্পষ্ট করে বলতে চাইছি, ভ্যাকসিন রপ্তানির ওপরে সরকার ও উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান কোনো প্রকার নিষেধাজ্ঞা জারি করেনি।
আনুষ্ঠানিক এই ঘোষণায় বাংলাদেশের দ্রুত টিকা পাওয়া না পাওয়ার অনিশ্চয়তার অবসান হয়েছে। এর আগে অবশ্য ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট এবং বায়োটেক যৌথ বিবৃতিতে, বিশ্ববাসীর কাছে টিকা পৌঁছে দেওয়ারও প্রতিশ্রুতি দেয়।
গত বছরের নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে অক্সফোর্ড- অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা পেতে ভারতের টিকা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান সিরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে বাংলাদেশ সরকার ও বেক্সিমকো ফার্মার ত্রিপক্ষীয় চুক্তি হয়। সে চুক্তি অনুসারে এখন সিরাম থেকে টিকা এনে বাংলাদেশ সরকারের হাতে তুলে দেবে বেক্সিমকো ফার্মা।
ব্রিটেনের পর ভারতও যখন অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিনের অনুমোদন দেয়, তখন ধারণা করা হচ্ছিল বাংলাদেশেও শিগগিরই মিলছে এই টিকা। কিন্তু ভারতের টিকার চাহিদা মেটানোর আগে অন্য দেশকে বাণিজ্যিকভাবে টিকা না দেওয়ার বিষয়ে দেশটির স্থানীয় টিকা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান সিরাম ইনস্টিটিউটের প্রধান নির্বাহী আদর পুনাওয়ালার কিছু বক্তব্য ঘিরে সৃষ্টি হয় বিভ্রান্তি ও অনিশ্চয়তা।
বিভ্রান্তি দূর করতে গতকাল সোমবার বাংলাদেশ সরকার ও দেশের স্থানীয় অক্সফোর্ডের টিকা আমদানিকারক বেক্সিমকো ফার্মার পক্ষ থেকে আশ্বস্ত করা হয়। কিন্তু ভারত সরকারের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো ঘোষণা না আসা পর্যন্ত কাটছিল না বিভ্রান্তি।