ফারসীম মান্নান মোহাম্মদীর তিন বই

এবারের মেলায় ফারসীম মান্নান মোহাম্মদীর দুটি বই এনেছে শুদ্ধস্বর আর একটি বই এনেছে প্রথমা।
১.
শুদ্ধসরের বই দুটি আগের সলিড স্টেট সিরিজের সিকুয়েল। গত বছর এই সিরিজের প্রথম বই 'কেলাশের কথা' এবং 'কোয়ান্টাম ও তরঙ্গ' এসেছিল। এই সিরিজের তৃতীয় বই 'মৌল বন্ধন ও পর্যায় ধর্ম' এবং চতুর্থ বই 'অর্ধ-পরিবাহীর জগৎ'। প্রথমটি কেমিকাল বন্ড আর পিরিয়ডিক টেবল নিয়ে আলোচনা থাকবে। কেমিকাল বন্ড খুব জরুরি জিনিস, একই রকম জরুরি পিরিয়ডিক টেবিল এবং মৌলদের পিরিয়ডিক প্রপার্টিটা জানা, মেটেরিয়ালের ইঞ্জিনিয়ারদের এইগুলো জানা থাকতে হয়। তাই টেন-ইলেভেন-টুয়েল্ভ ক্লাসের জন্য উপযোগী করে এই বইতে ঐসব জিনিস লেখা রয়েছে।
দ্বিতীয় বইটি সেমিকন্ডাকটর নিয়ে। সেমিকন্ডাকটর ইন্ডাস্ট্রিতে বাংলাদেশের অনেক মানুষ কাজ করেন। কিন্তু সেই অনুযায়ী পপুলার কোনো টেক্সট নেই বাংলায়। বহুদিন আগে বাংলা একাডেমি থেকে একটা বই বেরিয়েছিল, তারপর দুয়েকটি ডিগ্রি পর্যায়ের টেক্সট ছাড়া এই বিষয়ে কেউ লেখালেখি করেননি। ইদানীং সেমিকন্ডাকটর ডিভাইসের কথা আমাদের স্কুলের পাঠ্যবইয়ে চলে এসেছে। তাই ডিভাইস ফিজিক্সের এই দিক সম্পর্কে এখানে তুলে ধরা হয়েছে। ঐতিহাসিক পটভূমিসহ সারফেস স্টেট নিয়ে কিছু আলোচনা রয়েছে। বই দুটি পাওয়া যাবে শুদ্ধস্বরের স্টলে।
২.
“ভঙ্গুর পৃথিবী ছেড়ে নক্ষত্রের পানে” বইটিতে রয়েছে পৃথিবীর ভঙ্গুরতা নিয়ে আলোচনা, পূর্বতন ধ্বংসযজ্ঞের (পঞ্চ মহামৃত্যু) সালতামামী, তুষারযুগের হিস্যা এবং আগামীতে মানুষের সভ্যতার টেকসইত্ব আর বসবাসযোগ্যতা।
এই বইটি মূলত লিখিত হয়েছে কিশোর-কিশোরীদের জন্য। কী করলে পৃথিবীর নামের গ্রহটির ক্ষতি হয় আর কী করলে গ্রহটির উপকার হয় সেটি জানানো হয়েছে এই বইয়ে। একই সাথে নজর দেওয়া হয়েছে মহাশূন্যের দিকে। কীভাবে পৃথিবীর বাইরে বসতি স্থাপন করা যায়, কীভাবে দূর নক্ষত্রের পানে ছুটে যাওয়া যায় এবং এই মহাশূন্যযাত্রার আগে কীভাবে পৃথিবীতে টিকে থাকা যায় সে সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধিই এই বইয়ের উদ্দেশ্য। মূলত সকল শিল্পী, বিজ্ঞানী, কবি, সাহিত্যিক, চিন্তাবিদ, চিকিৎসক, রাজনীতিবিদ, স্বেচ্ছাসেবী, অ্যাক্টিভিস্ট, সমাজকর্মী তথা পৃথিবীর সকল মানুষেরই উচিত এই পৃথিবীর যত্ন নেওয়া। এই বইটি সেই উদ্দেশ্যেই লেখা হয়েছে।
লেখক ফারসীম মান্নান মোহাম্মদী জানান, এই বই লেখার মূল প্রেরণা তিনি পেয়েছেন সুদূর জার্মানির এক কনফারেন্স থেকে। ২০১৩ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ‘ইউনিভার্স অ্যাওয়ারনেস’ প্রোগ্রামের অধীনে জার্মানির হাইডেলবার্গ শহরের ‘হাউস ডের অ্যাস্ট্রনমি’ প্রতিষ্ঠানে বিশ্বের নানা প্রান্তের সৌখিন জ্যোতির্বিদ এবং অ্যাকটিভিস্ট-শিক্ষকরা জড়ো হয়েছিলেন পাঁচদিনব্যাপী এক কর্মশালায়। সেখানে দলীয় কার্যক্রমের অংশ হিসেবে পৃথিবীর ভঙ্গুরতাকে কীভাবে কিশোর-কিশোরীদের মাঝে উপস্থাপন করা যায় সেই বিষয়ক একটি প্রেজেন্টেশন তৈরি করা হয়। সেই কাণ্ডটিই বর্তমান বইয়ের বীজ হিসেবে কাজ করেছে বলে জানান ফারসীম।