কক্সবাজারে সামুদ্রিক কাছিমের ৪৬ বাচ্চা অবমুক্ত

অলিভ রিডলি কাছিম বা জলপাই রঙা সামুদ্রিক কাছিমের ডিম থেকে দেশে প্রথমবারের মতো ইনসিটু পদ্ধতিতে সফলভাবে বাচ্চা উৎপাদন করেছে বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বোরি) বিজ্ঞানীরা। কক্সবাজারের উখিয়ার সোনারপাড়া সৈকতে সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের হ্যাচারিতে ফোটা কাছিমের ৪৬টি বাচ্চা গত সোমবার (৮ মে) বিকেলে সাগরে অবমুক্ত করা হয়।
কচ্ছপের বাচ্চাগুলো সাগরে অবমুক্ত করার সময় উপস্থিত ছিলেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জিয়াউল হাসান, বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) ও সমুদ্র বিজ্ঞানী সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দার, প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা হাসিবুল ইসলাম, সিনিয়র বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. জাকারিয়া ও তরিকুল ইসলামসহ বোরির অন্যান্য বিজ্ঞানী, কর্মকর্তা ও গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জিয়াউল হাসান বলেন, ‘বঙ্গোপসাগরে কাছিমের প্রজনন বৃদ্ধির জন্য বোরির বিজ্ঞানীরা চলতি বছর কাছিম নিয়ে গবেষণা শুরু করেছে। তারা দেশে প্রথমবারের মতো ইনসিটু পদ্ধতিতে সফলভাবে হ্যাচারিতে বাচ্চা ফুটিয়েছে। এরমধ্যে সোমবার হ্যাচারিতে ফুটে বের হওয়া ৪৬টি বাচ্চা সাগরে অবমুক্ত করা হয়েছে। আর সবগুলো বাচ্চাই অবমুক্ত করার পর সফলভাবে হেঁটে সাগরের পানিতে চলে যায়। আর এটি দৃশ্যটি ছিল এক অভূতপূর্ব ও আনন্দঘন।’
বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) ও সমুদ্রবিজ্ঞানী সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দর বলেন, ‘রোববার হ্যাচারিতে ফোটা একটি বাচ্চা পরীক্ষামূলকভাবে সাগরে অবমুক্ত করা হয়েছে এবং সেটি সৈকত থেকে হেঁটে সাগরের পানিতে যাত্রা করেছে। এছাড়া দুইদিন আগে সমুদ্রযাত্রায় অক্ষম আরও দুটি বাচ্চা বোরির ক্যাম্পাসে অবস্থিত গবেষণাগারের হ্যাচারিতে অবমুক্ত করা হয়েছে এবং বাচ্চাগুলো সুস্থ ও সবল রয়েছে।’
সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দর বলেন, ‘গত ২১ মার্চ কক্সবাজার শহর থেকে প্রায় ১৮ কিলোমিটার দক্ষিণে সোনারপাড়া সৈকতে তিনটি কাছিম ডিম পাড়ে। এরমধ্যে দুটি কাছিমের ডিম একদল লোক চুরি করে বিক্রি করে দেয়। খবর পেয়ে বোরির বিজ্ঞানীরা একটি কাছিমের ডিম ইনসিটু পদ্ধতিতে বা যেখানে ডিম পেড়েছে সেখানেই সংরক্ষণের ব্যবস্থা করে, যেখানে ছিল ৯০টি ডিম। আর এসব ডিম থেকে গত তিন দিনে এ পর্যন্ত ৪৯টি বাচ্চা ফুটেছে। বাকি বাচ্চাগুলো ফোটার পর ধীরে ধীরে সাগরে অবমুক্ত করা হবে।’
বোরি মহাপরিচালক আরও বলেন, ‘কাছিম নিয়ে গবেষণার জন্য বোরিতে কোনো প্রকল্প বা বরাদ্দ নেই। তবে কক্সবাজারের জনগণের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বোরির বিজ্ঞানীরা কাছিম নিয়ে গবেষণা শুরু করেছেন। আশা করা যায়, পরবর্তী অর্থবছরে এ বিষয়ে একটি গবেষণা প্রকল্প গ্রহণ করা হবে।’