জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত মোংলার উপকূল, ঝড়ের মধ্যেও নদীতে জেলেরা
ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে বাগেরহাটের মোংলা বন্দরে আজ বুধবার দুপুরের জোয়ারে স্বাভাবিকের তুলনায় কয়েক ফুট পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে মোংলার সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত পশুর নদীর পাড়ের কানাইনগর, চিলা, কলাতলা, সুন্দরতলা ও জয়মনির বাড়িঘর ও পুকুর পানিতে তলিয়ে গেছে।
বাড়িঘর পানিতে তলিয়ে গেলেও জাল, নৌকাসহ ঘরের মালামালের ক্ষতির আশঙ্কায় তারা কেউ যাচ্ছেন না আশ্রয়কেন্দ্রে। আবার ওই এলাকার অনেকেই এখনও উত্তাল নদীতে মাছ ধরছেন। পানিতে তলিয়ে যাওয়া বাড়িঘরে রয়েছে তাদের শিশু সন্তান ও বৃদ্ধারা। সে সব শিশুদের দেখা গেছে মালামাল সরাতে। তবে এখনও আশ্রয় কেন্দ্রমুখী হননি কেউ।
চিলা বাজারের বাসিন্দা নির্মল চন্দ্র বলেন, ‘পানি বাড়ার আগে সকালে নদীতে গিয়েছিলাম পোনা ধরতে, প্রায় ১০০ পোনা পেয়েছি। বাতাস, ঢেউয়ে আর টিকতে না পেরে দুপুর ১২টার দিকে ফিরে এসে দেখি বাড়িঘর সব তলিয়ে গেছে। রান্নাবান্না বন্ধ, খাবো কী? আশ্রয়কেন্দ্রেও যাচ্ছি না। কারণ সেখানে গেলে জাল, নৌকা ও ঘরের মালামালের ক্ষতি হয়ে যাবে। তাই হাঁটু পানিতে ঘরের মধ্যেই রয়েছি, দেখি কী হয়!’
একই এলাকায় ১০ বছর বয়সের শিশু তমাকে দেখা গেছে বাড়িঘরের মালামাল সরিয়ে উঁচু স্থানে সরাতে। জানতে চাইলে শিশুটি বলে, ‘বাড়িঘরে পানি উঠছে, তাই মাল জিনিস সরাচ্ছি। বাবা বাপ্পা ও মা পুষ্পলতা তো বাড়িতে নেই। তারা নদীতে মাছ ধরতে গেছে। আমি আর আমার ছোট তিন ভাই-বোন বাড়িতে রয়েছি।’
এমন অনেক জেলেই এখনও নদীতে। তাঁরা বলছেন, ঘরে কিংবা আশ্রয়কেন্দ্রে গেলে খাব কী? জাল, দড়ি ও ঘরের মালামাল দেখবে কে?’
দুর্যোগের সময়েও নিরাপদে না থেকে মোংলার সুন্দরবনের পশুর নদে জেলেদের মাছ ধরতে যাওয়ার বিষয়ে বাগেরহাটের ডিএফও মুহাম্মদ বেলায়েত হোসেন বলেন, এটা দেখার দায়িত্ব কোস্ট গার্ড ও মৎস্য বিভাগের।
এ বিষয়ে মোংলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কমলেশ মজুমদার বলেন, জেলেদের আধা ঘণ্টার মধ্যে নদী থেকে উঠে আসার জন্য খবর পাঠিয়েছি।
এদিকে ওই এলাকার বাড়িঘর পানিতে তলিয়ে রান্নাবান্না বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ওই সব পরিবারগুলোর জন্য এক হাজার প্যাকেট খাবার প্রস্তুত করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ইউএনও।