জামালপুরে সাংবাদিক ফাগুন রেজা হত্যার আসামি রিমান্ডে
সাংবাদিক ফাগুন রেজা হত্যার মামলার আসামি সোহরাবকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে জামালপুর রেলওয়ে থানা পুলিশ।
আজ শুক্রবার দুপুরে জামালপুর রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাপস চন্দ্র পণ্ডিত জানান, গত বছরের ২১ মে ঢাকা থেকে শেরপুরের নিজ বাড়িতে যাওয়ার জন্য রওনা হন সাংবাদিক ফাগুন রেজা। এরপর সেদিনই রাত সাড়ে ৮টার পর থেকে নিখোঁজ হন শেরপুর জেলার এনটিভির সাংবাদিক কাকন রেজার বড় ছেলে ফাগুন রেজা। পরের দিন ২২ মে জামালপুর সদরের রানাগাছা এলাকায় রেললাইনের পাশ থেকে সাংবাদিক ফাগুন রেজার লাশ উদ্ধার করা হয়। তবে এ সময় নিহত ফাগুন রেজার সঙ্গে থাকা মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ, পরিচয়পত্র ও অন্য কাগজপত্রের কোনো সন্ধার পাওয়া যায়নি।
ওসি তাপস জানান, এ ঘটনায় হত্যা মামলার পর তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে ফাগুন রেজার ব্যবহৃত মোবাইলের অবস্থান নির্ণয় করে ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার তাতরাকান্দা এলাকার সোহরাব (৩২) নামের একজনকে শনাক্ত করে পুলিশ। কিন্তু বিভিন্ন নাম-পরিচয় ব্যবহার করে বিভিন্ন জায়গায় অবস্থান করায় তাঁকে কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না।
এদিকে, গাজীপুর জেলার সাফারিপার্ক সড়কে চালককে আহত করে অটোরিকশা ছিনতাইয়ের সময় স্থানীয় জনতা আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে সোহরাব নামের একজনকে। পরে এ ঘটনায় চলতি বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর গাজীপুরের শ্রীপুর থানায় তাঁর বিরুদ্ধে হত্যা প্রচেষ্টা ও ছিনতাইয়ের অভিযোগে মামলা করে আদালতের মাধ্যমে কাশিমপুর কারাগারে পাঠানো হয়। কিন্ত সেখানে ওই আসামি ভুল নাম-ঠিকানা ব্যবহার করেন। হত্যাচেষ্টা ও ছিনতাই মামলায় ছদ্ম নাম-ঠিকানা ব্যবহার করলেও ফাগুন হত্যার সঙ্গে জড়িত অভিযোগে আগে থেকেই চিহ্নিত ওই একই ব্যক্তি আটক রয়েছে বলে জানতে পায় জামালপুর রেলওয়ে থানা পুলিশ। পরে আরও অধিকতর যাচাই বাছাই শেষে নিশ্চিত হয়ে কাশিমপুর কারাগার থেকে সোহরাবকে গত ২৮ অক্টোবর জামালপুরে আনা হয়। ফাগুন রেজা হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে জামালপুর ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের কাছে রিমান্ডের আবেদন করে রেলওয়ে থানা পুলিশ।
ওসি তাপস চন্দ্র পণ্ডিত আরও জানান, গত বুধবার আসামিকে তিন দিনের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা অব্যাহত রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে তিনি পেশাদার খুনি। বিভিন্ন থানায় তাঁর নামে একাধিক হত্যা মামলা রয়েছে।
নিহত সাংবাদিক ফাগুন রেজার মা মিলি রেজা জানান, সাড়ে ১৭ মাস পরে একজন আসামি ধরা পড়েছে। আশা করি পুলিশ এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে যারা রয়েছে তাদেরও খুঁজে বের করবে। তিনি তাঁর ছেলের হত্যাকাণ্ডে জড়িত সবার শাস্তি দাবি করেন।