দুর্নীতি, জালিয়াতি ও অনিয়মের অভিযোগ অনুসন্ধানে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) গঠিত তদন্ত কমিটির কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেছেন রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ। আজ বৃহস্পতিবার তাঁর আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. শহিদুল ইসলাম রিট দায়ের করেন।

এ বিষয়ে শহিদুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, গত ১৫ মে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) তদন্ত কমিটি গঠন করে ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহকে একটি চিঠি দেয়। রিটে ওই চিঠির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে।

এর আগে গত ১৫ মে ইউজিসি উপাচার্য কলিমউল্লাহকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য একটি নোটিশ দেয়। রিট আবেদনে ওই নোটিশের কার্যক্রমও স্থগিত চাওয়া হয়েছে।

আইনজীবী মো. শহিদুল্লাহ আরও জানান, ‘ইউজিসি গত ১৩ এপ্রিল উপাচার্য অধ্যাপক নাজমুল আহসান কালিমউল্লাহকে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে দুইজন কর্মচারী নিয়োগের ক্ষেত্রে অনিয়মের অভিযোগে প্রাসঙ্গিক নথি নিয়ে হাজির হতে নোটিশ দেয়। কিন্তু গত ১২ মে কলিমউল্লাহ ইউজিসির কাছে চলমান লকডাউন শেষে কার্যালয়ে হাজির হওয়ার জন্য সময় চেয়ে একটি আবেদন পাঠিয়েছিলেন। তিনি (কলিমউল্লাহ) আবেদনে বলেছিলেন যে তিনি ৬০ বছর বয়স্ক এবং কোভিড মহামারিজনিত কারণে তিনি প্রাসঙ্গিক নথির জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে পারবেন না।

আইনজীবী মো. শহিদুল্লাহ বলেন, কিন্তু উপাচার্যের গত ১২ মে’র আবেদন নিষ্পত্তি না করেই ইউজিসির সিনিয়র সহকারী সচিব (আইন) গত ২০ মে কলিমউল্লাহকে প্রাসঙ্গিক কাগজপত্রসহ ইউজিসি অফিসে হাজির হওয়ার অনুরোধ জানিয়ে একটি নোটিশ জারি করেন। যা অবৈধ এবং এর কোনও আইনি ভিত্তি নেই।

এর আগে উপাচার্য কলিমউল্লাহর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপতির নির্দেশনা অমান্য করে ক্যাম্পাসে ধারাবাহিক অনুপস্থিতি, ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতির ঘটনা ধামাচাপা দেওয়া, শিক্ষক ও জনবল নিয়োগে দুর্নীতি ও অনিয়মসহ বিভিন্ন অভিযোগে তদন্ত কমিটি গঠন করে ইউজিসি। কলিমউল্লাহর বিরুদ্ধে ওঠা মোট ৪৫টি অভিযোগ তদন্ত করার কথা এই কমিটির।

সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ উন্নয়ন প্রকল্পের আওতাধীন ১০তলা বিশিষ্ট শেখ হাসিনা ছাত্রী হল, প্রয়াত পরমাণু বিজ্ঞানী ড. ওয়াজেদ রিসার্চ ইনস্টিটিউটের ভবন নির্মাণ ও স্বাধীনতা স্মারক স্মৃতিস্তম্ভের নির্মাণকাজে উপাচার্যের অনিয়মের সত্যতা পায় ইউজিসির তদন্ত কমিটি। এসব অনিয়ম-দুর্নীতিতে জড়িত থাকায় উপাচার্যসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ওই কমিটির প্রতিবেদনে সুপারিশ ছিল।

২০১৯ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর উপাচার্য অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহসহ প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্তদের বিরুদ্ধে ৪৫টি অভিযোগ তুলে ধরে শিক্ষামন্ত্রী বরাবর একটি চিঠি পাঠায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সংগঠন বঙ্গবন্ধু পরিষদ। এতে সংগঠনের সভাপতি কমলেশ চন্দ্র রায় ও সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমানসহ সাতজন শিক্ষক স্বাক্ষর করেছিলেন।