নওগাঁয় লকডাউনে নকলনবিশদের মানবেতর জীবনযাপন

চলমান বিধিনিষেধে নওগাঁর পোরশা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে কর্মরত নকলনবিশরা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। করোনা প্রাদুর্ভাবে সরকার কঠোর বিধিনিষেধ ঘোষণা করার পর থেকে উপজেলার ২১ জন নকলনবিশ কর্মহীন হয়ে পড়েছেন।
বিধিনিষেধে অফিস বন্ধ ও পর্যাপ্ত বালাম বহি না থাকায় কাজ করতে পারছেন না তারা। ফলে তারা মজুরি-ভাতা না পেয়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
সরকারের রাজস্ব আয়ের অন্যতম বড় খাত হচ্ছে সাব-রেজিস্ট্রি অফিস। সরকার এখান থেকে প্রতি বছর হাজার হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আয় করে। এ রাজস্ব আদায়ে ও সরকারের অতি গুরুত্বপূর্ণ কাজের উন্নয়নে সহায়ক ভূমিকা পালন করেন নকলনবিশরা। এরা সাধারণত দলিল রেজিস্ট্রি সম্পন্ন হওয়ার পর বালাম বইয়ে লিপিবদ্ধ (সংরক্ষণ) কাজ ও নকল দলিল প্রদানে মূল সহায়তাকারী হিসেবে কাজ করে থাকেন। করোনার প্রাদুর্ভাবের কারণে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বাজারে নিজেদের আর খাপ খাওয়াতে পারছেন না তারা। নকলনবিশরা জানান, গত ১ জুলাই থেকে সরকারের সাধারণ ছুটি ঘোষণার পর থেকে এখন পর্যন্ত অফিস বন্ধ থাকায় তাদের আয় রোজগার বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে এ উপজেলায় কর্মরত ২১ জন নকলনবিশ পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
উপজেলা নকলনবিশ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন জানান, তারা ছাড়া সরকারি দপ্তরে নিয়োজিত সবাই সরকারের কাছ থেকে বেতন-ভাতা পাচ্ছে। কিন্তু তারা কর্মহীন হয়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে কীভাবে দিনাতিপাত করছেন বা কীভাবে চলছে তাদের সংসার, তার কেউ খোঁজ নেয় না। এ উপজেলার নকলনবিশদের বেশির ভাগ পরিবার খেয়ে না খেয়ে দুর্বিষহ জীবনযাপন করছে বলে তিনি জানান। তারা না পারছেন কারও কাছে হাত পাততে, না পারছেন তাদের ন্যায্য পাওনা আদায় করতে। দেশের এই কঠিন সময়ে উপজেলা, জেলাসহ দেশের নকলনবিশদের পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপনের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন তিনি।
উপজেলা নকলনবিশ অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি আমির উদ্দিন(বাবু) জানান, এমনিতেই প্রায় আট থেকে নয় মাস পোরশা সাব-রেজিস্ট্রার অফিস অজ্ঞাত কারণে বালাম বহি না থাকায় কোনো লেখনি বিল পাচ্ছেন না। এর মধ্যে আবার বিধিনিষেধে অফিস বন্ধ। এ কারণে লেখনি বিল না পেয়ে আমরা পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছি। সরকার করোনার কারণে যে প্রণোদনা ঘোষণা করেছে এর মধ্যে থেকে যৎসামান্য নকলনবিশদের জন্য বরাদ্দ দিলে কিছুটা হলেও তারা পরিবার নিয়ে খেয়ে-পরে বাঁচত বলে তিনি জানান।
তবে এ পর্যন্ত তারা কোনো প্রকার খাদ্য সহায়তা পাননি বলেও তিনি জানান।