নর্থ সাউথ-জাবির শিক্ষার্থীসহ চার ‘নব্য জেএমবি’ গ্রেপ্তার, বিস্ফোরক জব্দ

বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলায় অভিযান চালিয়ে চার যুবককে গ্রেপ্তার করেছে জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, তারা নব্য জামা’আতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশের (জেএমবি) সদস্য। তাদের কাছ থেকে যে পরিমাণ বিস্ফোরক ও বোমা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে তা দিয়ে ৫০টির মতো উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন বোমা বানানো সম্ভব।
গতকাল শুক্রবার রাত দেড়টার দিকে উপজেলার চণ্ডিহারা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানিয়েছেন পুলিশের রাজশাহী রেঞ্জের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মো. আব্দুল বাতেন।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থী এবং গোপালগঞ্জ জেলার মকসুদপুর উপজেলার তরশ্রীরামপুর গ্রামের তানভীর আহম্মেদ ওরফে আবু ইব্রাহিম (২৫), টাঙ্গাইল জেলার ভুয়াপুর থানার জগতপোড়া গ্রামের জাকারিয়া জামিল (৩১), ময়মনসিংহ জেলা সদরের চকশ্যামরামপুর এলাকার আতিকুর রহমান (২৮) ও একই এলাকার আবু সাঈদ (৩২)।
এর মধ্যে তানভীর আহম্মেদ ওরফে আবু ইব্রাহিম নব্য জেএমবির আইটি শাখার সদস্য এবং জাকারিয়া জামিল মিডিয়া শাখার প্রধান। বাকি দুজন সংগঠনটির সক্রিয় সদস্য।
অপর আসামি জাকারিয়া জামিল নব্য জেএমবির মিডিয়া শাখার প্রধান। অনলাইনে প্রকাশিত জঙ্গিবাদ সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রকাশনাগুলো সে আরবি থেকে বাংলায় অনুবাদ করে প্রচার করে। কওমি মাদ্রাসায় পড়াশোনা করায় সে আরবী ভাষায় অত্যন্ত দক্ষ।
এ ছাড়া মো. আতিকুর রহমান নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের ছাত্র। সে নতুন সদস্য এবং অর্থ সংগ্রহের দায়িত্বপ্রাপ্ত। মো. আবু সাঈদ যুদ্ধ করার জন্য মধ্যপ্রাচ্যে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিল।
আজ শবিবার দুপুর ১২টার দিকে বগুড়া জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি মো. আব্দুল বাতেন এসব তথ্য তুলে ধরেন। এ সময় তিনি বলেন, ‘গোয়েন্দা তথ্য পেয়ে শিবগঞ্জের চণ্ডিহারা এলাকার একটি মাঠে অভিযান চালিয়ে নব্য জেএমবির চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন, দুটি গুলি, একটি দেশি তৈরি ওয়ান শুটারগান, দুটি কার্তুজ, তিনটি বার্মিজ চাকু, একটি চাপাতি, এক কেজি বিস্ফোরক দ্রব্য, দুটি লাল টেপ, চারটি ব্যাটারি জব্দ করা হয়।’
গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি আরো বলেন, 'মো. তানভীর আহম্মেদ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আইটি বিভাগের ছাত্র। এ বছরের শুরুতে জানুয়ারি মাসে আশুলিয়াতে তার বাসায় অভিযান চালিয়ে বিপুল জঙ্গিবিষয়ক পুস্তক, ইলেকট্রনিক ও ড্রোন তৈরির সরঞ্জামসহ তার স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।
ডিআইজি আরো জানান, উদ্ধার হওয়া বিস্ফোরক দিয়ে ৫০টির মতো উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন বোমা বানানো সম্ভব। এ ব্যাপারে বগুড়ার শিবগঞ্জ থানায় মামলা করা হয়েছে। তাদের আদালতে পাঠিয়ে রিমান্ডের আবেদন করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুর রশিদ, হায়দার আলী মণ্ডল, সনাতন চক্রবর্তী, সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হুমায়ুন কবির, ডিবির ওসিসহ অন্য পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।