নেশার টাকা না পেয়ে এক সন্তানকে হত্যা, দুজন হাসপাতালে
নেশার টাকা না পেয়ে তিন সন্তানকে বিষ খাওয়ানোর অভিযোগ উঠেছে বাবার বিরুদ্ধে। পুলিশ জানিয়েছে, আজ রোববার সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এক শিশু মারা গেছে। অপর দুই শিশু সন্তানও অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
বিষ খাওয়ানোর এই ঘটনাটি ঘটেছে গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার খান্দারপাড় ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামে। আজ রোববার সকালে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিশু হোসেন শেখের (৩) মৃত্যু হয়। অপর দুই শিশু হলো হোসেন শেখের যমজ ভাই হাসান শেখ এবং বড়ভাই সিয়াম শেখ (১০)।
স্থানীয় ও পরিবারের বরাত দিয়ে পুলিশ দাবি করেছে, গত বৃহস্পতিবার সকালে ওই তিন শিশুর বাবা আলম শেখ স্ত্রী সিমা বেগমের কাছে নেশার টাকা চান। টাকা না পেয়ে তাকে মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দেন। পরে তিন শিশু পুত্রকে জোর করে বিষ পান করান তিনি।
শিশুদের মা সীমা বেগম জানান, তার স্বামী আলম শেখ মাদকাসক্ত। গত বৃহস্পতিবার নেশার টাকা না পেয়ে তাকে মেরে বাড়ি থেকে বের করে দেন। পরে তিন শিশুকে জোর করে বিষ পান করান। বিষ প্রভাবে এরই মধ্যে তার ছোট সন্তান হোসেন মারা গেছে। অপর দুই সন্তানও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এ ঘটনায় স্বামী আলম শেখের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চেয়েছেন তিনি।
মুকসুদপুর থানায় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বকর মিয়া জানান, ওই শিশুদের বাবা আলম শেখ মাদকাসক্ত। নেশার টাকার জন্য তিনি প্রায়ই স্ত্রী সীমা বেগমকে মারপিট করতেন। গত বৃহস্পতিবার স্ত্রীর কাছে নেশার টাকা চাইলে না দেওয়ায় স্ত্রীকে পিটিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দিয়ে নিজ হাতে তিন সন্তানকে জোর করে বিষ পান করান। পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য মুকসুদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। তিন শিশুর অবস্থার অবনতি হলে ওই দিনই ফরিদপুর শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয় তাদের। পরে গত শুক্রবার ওই তিন শিশুকে মা সীমা বেগম বাড়িতে নিয়ে আসেন। গতকাল শনিবার তাদের অবস্থার আবারও অবনতি হলে স্থানীয়দের আর্থিক সহায়তায় ফের ফরিদপুর শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ সকালে হোসেন শেখ মারা যায়।
ওসি আরও জানান, ওই দিনই (বৃহস্পতিবার) ওই শিশুদের বাবা আলম শেখকে হত্যাচেষ্টার মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়। বর্তমানে তিনি গোপালগঞ্জ জেলহাজতে রয়েছেন। একটি শিশু মারা যাওয়ায় ওই মামলাকে হত্যা মামলা করা হবে।