প্রত্যাহার হচ্ছেন কুড়িগ্রামের ডিসি, নেওয়া হবে বিভাগীয় ব্যবস্থা
তদন্তে দোষী প্রমাণ হওয়ায় কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক (ডিসি) সুলতানা পারভীনকে প্রত্যাহার করা হচ্ছে। একই সঙ্গে তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থাও নেওয়া হচ্ছে। জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন আজ রোববার সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনায় সরকার বিব্রত। অপরাধ করে কেউ পার পায় না, তিনি যত বড় ক্ষমতাবানই হোন না কেন। আমরা সুশাসনে বিশ্বাস করি।’
ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনা ও ভ্রাম্যমাণ আদালতে সাজা দেওয়ার ঘটনা তদন্তে আমরা কমিটি করে দিয়েছিলাম। কমিটির খসড়া প্রতিবেদন অনুযায়ী জেলা প্রশাসকের অপরাধ প্রমাণ হয়েছে। ফলে আমরা তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তাঁকে প্রত্যাহার করা হবে। এরপর তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হবে। কর্ম অনুযায়ী তাঁর শাস্তি হবে।’
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্বে আছেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি সংশ্লিষ্ট ফাইল অনুমোদন করলে ডিসিকে প্রত্যাহারের আদেশ জারি করা হবে বলে জানান ফরহাদ হোসেন।
জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘তদন্তে অনেকগুলো অনিয়ম দেখেছি। বিভাগীয় প্রক্রিয়া অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব। অহেতুক যে সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে, সত্যতা পেয়েছি বিধায় বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
গত ১৩ মার্চ মধ্যরাতে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অনলাইন নিউজপোর্টাল বাংলা ট্রিবিউনের কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি আরিফুল ইসলামকে এক বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেন জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনার ঝড় ওঠে। পরে শনিবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ রংপুর বিভাগীয় কমিশনারকে ঘটনা তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেয়। রংপুরের বিভাগীয় কমিশনার কে এম তারিকুল ইসলাম তদন্তের দায়িত্ব দেন অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) আবু তাহের মো. মাসুদ রানাকে।
এর মধ্যে অবশ্য আরিফুল ইসলাম জামিন পেয়েছেন। অন্যদিকে মধ্যরাতে অভিযান ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে কারাদণ্ড প্রদানের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট করেছেন বাংলা ট্রিবিউনের নির্বাহী সম্পাদক হারুন উর রশীদ। এর পরিপ্রেক্ষিতে আদালত মধ্যরাতে টাস্কফোর্সের অভিযান ও ভ্রাম্যমাণ আদালত কে পরিচালনা করেছেন, তা জানতে চেয়েছেন।
বিসিএস ২০তম ব্যাচের কর্মকর্তা সুলতানা পারভীন ২০১৮ সালের ৩ মার্চ থেকে কুড়িগ্রাম জেলার ডিসির দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। কুড়িগ্রাম শহরের একটি সরকারি পুকুর সংস্কারের পর তিনি নিজের নামানুসারে ওই পুকুরের নাম ‘সুলতানা সরোবর’ রাখতে চেয়েছিলেন উল্লেখ করে বাংলা ট্রিবিউনে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় ১০ মাস আগে।