ফরিদপুরে ৭৮৪ মণ্ডপে দুর্গাপূজার প্রস্তুতি সম্পন্ন

রাত পোহালেই ঢাকের আওয়াজ, শঙ্খ ধ্বনি, উলুর ধ্বনির সঙ্গে শুরু হবে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সব থেকে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। এবার ফরিদপুর জেলায় ৭৮৪টি মণ্ডপে পূজা উদযাপন হবে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন। পূজা উপলক্ষে এরই মধ্যে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে পূজামণ্ডপ কমিটিগুলো।
করোনা পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতির কারণে গত বছরের চেয়ে এবারের আয়োজনে ব্যাপকতা থাকছে অনেকটাই বেশি। আশা করা যাচ্ছে, এবারের পূজা দেখতে জেলার বাইরে থেকেও প্রচুর দর্শনার্থী আসবে। তবে প্রশাসনের তরফ থেকে মণ্ডপগুলোকে করোনার বিধিবিধান মেনে চলার আহ্বান জানানো হয়েছে। উৎসবটি শান্তিপূর্ণভাবে পালনে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে সব ধরনের প্রস্তুতি।
ইতোমধ্যে দুর্গাপূজার প্রতিমা তৈরি ও রঙের কাজ শেষ হয়েছে। এখন প্রতিমা খাটে উঠোনোর মধ্য দিয়ে পূজার আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হবে আগামী সোমবার থেকে।
পূজা-অর্চনায় দেশজুড়ে বেশ সুখ্যাতি রয়েছে ফরিদপুর জেলার। বিশেষ করে দুর্গাপূজায় প্রতিটি পাড়া-মহল্লায় পূজামণ্ডপ থাকায় আলোকসজ্জা ও আরোতিতে মুখরিত থাকে। এখানের পূজা দেখতে দেশের বিভিন্ন জেলা ও পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে দর্শনার্থী আসে ফরিদপুরে।

স্বর্ণকার পট্টির পূজামণ্ডপে রাম দত্ত জানান, গত বছর করোনা মহামারির কারণে ভালোভাবে পূজা করা সম্ভব হয়নি। এ বছর করোনার প্রভাব কমে যাওয়ায় সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে উৎসবমুখর পরিবেশে দুর্গাপূজা পালনে চেষ্টা করব।
শহরের নন্দালয় এলাকার বিধান কুমার সাহা জানান, আমাদের বাড়ির পূজা দেখতে শুধু জেলার দর্শনার্থীরাই নয়, জেলার বাইরে ও বিদেশ থেকেও অনেকে আসে। প্রতিমা রঙের কাজ শেষ এখন চলছে আলোকসজ্জার কাজ।
ফরিদপুর জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি ড. যশোদা জীবন দেবনাথ বলেন, ‘জেলা পূজা কমিটির পক্ষ থেকে প্রতিটি মণ্ডপের খোঁজ-খবর রাখা হচ্ছে। একইসঙ্গে আমার ব্যক্তিগত পক্ষ থেকে মণ্ডপগুলোকে ছয় লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি মন্দির কমিটিকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে করোনাবিধি মেনে চলার জন্য।’
ফরিদপুর জেলা প্রশাসক অতুল সরকার বলেন, ‘পূজার জেলা ফরিদপুরে শান্তিপূর্ণভাবে দুর্গাপূজা পালনে প্রশাসনের তরফ থেকে আমরা সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছি। আশা করছি, প্রতিবারের মতো এবারও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে দুর্গাপূজা পালিত হবে।’
জেলা প্রশাসক বলেন, ‘প্রতিটি মন্দির কমিটিকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে করোনার বিধিবিধান মেনে চলার। পাশাপাশি বিসর্জনের দিন সন্ধ্যার মধ্যে যেন প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয় সে বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’
এবার দুর্গা আসবে ঘটকে, আর যাবে দোলনায়। মহামারি, অসুখ আর মৃত্যুতে দুর্গার আগমন ঘটবে, আর সবকিছু ধুয়ে মুছে নিয়ে যাবে দোলনায়। দুনিয়ার সব অশুরকে বধকারী দেবী দুর্গার কাছে সব অপশক্তি দূর হবে। এমনটাই প্রত্যাশা এ ধর্মের অনুসারীদের।