ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের গলায় জুতার মালা, সুধী সমাজের ক্ষোভ

নড়াইলে প্রশাসনের উপস্থিতিতে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের গলায় জুতায় মালা পরানোর ঘটনায় ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে নড়াইলসহ দেশব্যাপী।
গত ১৮ জুন মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে কটূক্তিকারী ভারতের বিতর্কিত নূপুর শর্মাকে সমর্থন করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন নড়াইলের মির্জাপুর ইউনাইটেড ডিগ্রি কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র রাহুল দেব রায়। কলেজের অন্য শিক্ষার্থীরা তা দেখতে পেয়ে তাকে ফেসবুক থেকে স্ট্যাটাসটি মুছে ফেলার জন্য বলে। কিন্তু তিনি পোস্টটি না মোছায় অন্য ছাত্ররা কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাসের কাছে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানায়। তিনি রাহুলের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেননি—এমন অভিযোগ তুলে কলেজের শিক্ষার্থীরাসহ এলাকাবাসী রাহুল দেব রায় ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাসকে আটকে রেখে বিক্ষোভ করে তিনটি মোটরসাইকেলে পুড়িয়ে দেয়।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং ঘটনাস্থল থেকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ও অভিযুক্ত রাহুল দেব রায়কে উদ্ধার করে নিয়ে আসে। সেসময় ছাত্ররা ওই শিক্ষকের গলায় জুতার মালা পরিয়ে দেন।
ঘটনাটি নিয়ে তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে সুশীল সমাজে। পুলিশের উপস্থিতিতে একজন শিক্ষকের গলায় জুতার মালা পরানোর ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন রাজনীতিবিদসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক জোটের নেতাকর্মীরা।
সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অচিন চক্রবর্তী এই ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
অন্যদিকে ঘটনা তদন্তে পুলিশ ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে পৃথক দুটি তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তাদের তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।
এদিকে এমন নিন্দনীয় ঘটনার সঠিক তদন্তপূর্বক ঘটনায় উসকানি দেওয়া ও জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছে শিক্ষক সমাজ।
এ বিষয়ে নড়াইলের পুলিশ ও প্রশাসনের কেউ ক্যামেরার সামনে কথা বলতে চাননি। তবে পুলিশ সুপার প্রবীর কুমার রায় ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মাদ হাবিবুর রহমান জানান, বর্তমানে ওই এলাকার পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে আছে এবং ওই শিক্ষক বর্তমানে নিরাপদে আছেন। পুরো ঘটনাটি পুলিশ ও প্রশাসনের পৃথক তদন্ত কমিটির আওতায় তদন্তাধীন রয়েছে। আগামী ৩০ জুন তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর কে বা কারা এর সঙ্গে জড়িত, তাদের কঠোর শাস্তির আওতায় আনা হবে।