ভোলায় টিকাকেন্দ্রে মানুষের ঢল, চরম বিশৃঙ্খলা

ভোলায় করোনার টিকা নিতে গিয়ে হয়রানি ও চরম ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে মানুষকে। চরম বিশৃঙ্খলায় হাতাহাতির ঘটনা পর্যন্ত ঘটছে। এতে ব্যাপক ক্ষোভ দেখা গেছে টিকা প্রত্যাশীদের মধ্যে।
আজ রোববার সকাল থেকেই ভোলা সদর হাসপাতালে ছিল টিকা প্রত্যাশীদের স্রোত।
এ সময় দায়িত্ব পালনে বাধা দেওয়ার অভিযোগও পাওয়া গেছে হাসপাতালের স্টাফ, প্রাইভেট ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের দালালদের বিরুদ্ধে। এতে চরম ক্ষোভ পুলিশ ও রেড ক্রিসেন্টের কর্মীদের মধ্যে। অপরদিকে শেষ হয়ে আসছে টিকা। তাই টিকা চেয়ে আবেদন করেছেন সিভিল সার্জন।
আজ সকাল থেকেই ভোলা সদর হাসপাতালে টিকা প্রত্যাশী হাজার হাজার মানুষ এসে জড়ো হয় টিকাকেন্দ্রে। টিকা প্রত্যাশীদের ভিড় সামলাতে হিমশিম খেতে হয় দায়িত্বে থাকা রেড ক্রিসেন্টকর্মীদের। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দু-একজন সদস্য থাকলেও তারা হাজার হাজার মানুষের ঢল সামলাতে পারেনি। এরমধ্যে বহিরাগত দালালরা এসে ঝামেলা বাধিয়ে পুলিশের কাজে বাধা সৃষ্টি করে।
এ সময় একটি প্রাইভেট ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের একজনকে ধরে ফেলে পুলিশ। দায়িত্বরত এক পুলিশ সদস্য বলেন, তারা শৃঙ্খলার রক্ষায় নিয়োজিত ছিলেন মাত্র দুজন। তখন হাসপাতালের পাশেরই একজন তার কাজে বাধা দেয় এবং ধাক্কাধাক্কি করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে। পরে তাকে সেখান থেকে ধরে বাইরে আনা হলে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ছেড়ে দেন। অনেকেই একই স্থানে নারী-পুরুষকে টিকা দেওয়ায় এর সমালোচনা করেন। একদিকে ভিড় ঠেলে নারীদের পক্ষে গিয়ে টিকা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তাই অনেক নারী ও বৃদ্ধকে দেখা গেছে টিকা না নিয়ে চলে যেতে।
ইলিশার জাঙ্গালিয়া থেকে মো. আবুল খায়ের তাঁর স্ত্রীসহ আত্মীয়স্বজনদের নিয়ে টিকা দিতে আসেন। তবে ভিড় ঠেলে সামনে যেতে না পেরে টিকা না নিয়ে চলে যান। এতে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।
অনেকেই বলেন, তাদের দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায়ই টিকা দিয়ে বের করে দেওয়া হয়েছে। টিকা দিয়ে বিশ্রামের কোনো স্থান ছিল না। কারো আবার ছিড়ে গেছে জামা। নারী-পুরুষ একই স্থানে হওয়ায় এবং একটি গেট ব্যবহার করায় সমস্যা চরমে পৌঁছে।
এদিকে স্বেচ্ছায় কাজ করতে আসা রেড ক্রিসেন্টকর্মী আরিফুর রহমান মীমকে দায়িত্ব পালনরত অবস্থায় শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ আসে সদর হাসপাতালের স্টাফ মো. আলমের বিরুদ্ধে। মো. আলমের বিরুদ্ধে অভিযোগ তিনি ১০ জনকে নিয়ে জোরপূর্বক টিকার বুথে ঢুকতে চাইলে আরিফুর তাঁকে বাধা দেন। এ সময় তাঁকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন মো. আলম। এসব ঘটনায় চরম ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে রেড ক্রিসেন্টের কর্মীদের মধ্যে।
রেড ক্রিসেন্ট ভোলার যুব প্রধান আদিল হোসেন তপু বলেন, বিষয়টি আমরা ভোলার সিভিল সার্জন এবং হাসপাতালের আরএমওকে জানিয়েছি। তারা আশ্বাস দিয়েছেন বিষয়টি ভালোভাবে দেখার।
ভোলার সিভিল সার্জন ডা. কে এম শফিকুজ্জামান বলেন, টিকা শেষের পথে। আমাদের কাছে যা আছে তাতে তিন-চার দিন চলবে। তাই দ্রুত টিকা চেয়ে চিঠি দিয়েছি। টিকা দিতে সমস্যা ও বিশৃঙ্খলার কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, হাজার হাজার মানুষের ভিড় সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। যে কারণে শৃঙ্খলা বজায় রাখা সম্ভব হচ্ছে না। আমরা টিকা প্রদান ও নমুনা সংগ্রহের স্থান দুটি আলাদা করব দ্রুত। নমুনা সংগ্রহের স্থানটি সরিয়ে অন্যত্র নেওয়া হবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতা চাওয়া হবে।