সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে চীনের রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ
বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন আজ রোববার (২ এপ্রিল) সংস্কৃতিবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন। সাক্ষাতে বন্ধুপ্রতিম দুদেশের মধ্যে সাংস্কৃতিক বিনিময় জোরদারকরণের পাশাপাশি সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণ, প্রযুক্তি হস্তান্তর, নাটেশ্বর ও পানাম সিটি সংস্কার-সংরক্ষণ, বঙ্গবন্ধু অপেরা হাউজ নির্মাণে সহযোগিতাসহ সাংস্কৃতিক অবকাঠামো খাতে বিনিয়োগের বিষয়ে আলোচনা হয়।
চীনের রাষ্ট্রদূত এ সময় বলেন, ‘সংস্কৃতি দুদেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের অন্যতম ভিত্তি।’ কোভিডের কারণে বিগত দুি’তিন বছর ধরে সাংস্কৃতিক বিনিময় কার্যক্রম বন্ধ ছিল। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় তিনি সাংস্কৃতিক বিনিময় কার্যক্রম জোরদারকরণের আহ্বান জানান।
রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেন, ‘২০২২ সালের ৭ আগস্ট চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বাংলাদেশ সফরকালীন সময়ে দুদেশের মধ্যে ২০২৩-২০২৭ মেয়াদে সাংস্কৃতিক বিনিময় কার্যক্রম চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।’ তিনি সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রীকে আগামী ২৪ থেকে ২৬ এপ্রিল মেয়াদে এশিয়া মহাদেশের ৩০টি দেশের অংশগ্রহণে চীনের শিয়াংয়ে অনুষ্ঠিতব্য ‘অ্যালায়েন্স ফর কালচারাল হেরিটেজ ইন এশিয়া’ শীর্ষক কনফারেন্সে অংশগ্রহণের আমন্ত্রণ জানান। সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী খালিদ প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন সাপেক্ষে এই সম্মেলনে অংশগ্রহণের বিষয়ে চীনের রাষ্ট্রদূতকে আশ্বস্ত করেন।
রাষ্ট্রদূত এসময় ২০২১ সালের ২৭-২৮ অক্টোবর মেয়াদে চীনের বেইজিংয়ে অনুষ্ঠিত ‘এশিয়ান ডায়ালগ ফর কালচারাল হেরিটেজ কনজারভেশন’ শীর্ষক কনফারেন্সে বাংলাদেশের ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণের কথা স্মরণ করেন।
কে এম খালিদ মুন্সীগঞ্জের নাটেশ্বর প্রত্নস্থল পার্ক নির্মাণের পাশাপাশি সোনারগাঁওয়ে অবস্থিত পানাম সিটির সংস্কার-সংরক্ষণে চীনের সহযোগিতা কামনা করেন। এ ছাড়া তিনি সিডনি অপেরা হাউজের আদলে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রকল্প ‘বঙ্গবন্ধু অপেরা হাউজ’ নির্মাণেও চীনের আর্থিক ও কারিগরি সহায়তা কামনা করেন।
বাংলাদেশে মোট ৫০৯টি পুরাকীর্তি বা প্রত্নস্থল রয়েছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘এসব পুরাকীর্তিগুলোর সংস্কার-সংরক্ষণে চীন প্রযুক্তিগত ও কারিগরিভাবে সহযোগিতা করতে পারে। এক্ষেত্রে চীন তাদের প্রত্নতত্ত্ববিদ ও প্রত্ন-বিশেষজ্ঞদের মাধ্যমে বাংলাদেশের প্রত্নতত্ত্ব সেক্টরে দক্ষ ও অভিজ্ঞ লোক তৈরিতে সহযোগিতা করতে পারে।’
রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বাংলাদেশের পুরাকীর্তিসমূহের সংস্কার-সংরক্ষণে প্রশিক্ষণ প্রদান ও প্রযুক্তি হস্তান্তরের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেন। তিনি বাংলা একাডেমি ও চাইনিজ ন্যাশনাল এডমিনিস্ট্রেশন অব প্রেস অ্যান্ড পাবলিকেশনের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতাবিষয়ক সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের অনুরোধ করেন।