সিআরবিতে হাসপাতাল নির্মাণের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন চেয়ে আইনি নোটিশ
![](http://103.16.74.218/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2021/07/14/crb-hill-chittagong.jpg)
চট্টগ্রামের ফুসফুস খ্যাত কেন্দ্রীয় রেলওয়ে ভবনে (সেন্ট্রাল রেলওয়ে বিল্ডিং-সিআরবি) হাসপাতাল নির্মাণের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে নগরীর অন্য কোনো জায়গায় স্থাপনের পদক্ষেপ নিতে সরকারকে আইনি নোটিশ দেওয়া হয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব, রেল সচিব, রেলওয়ের মহাপরিচালক (ডিজি), রেলওয়ের পূর্বাঞ্চল জোনের জিএম, পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ অথরিটির প্রধান নির্বাহী (সিইও), পরিবেশ অধিদপ্তরের ডিজি, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যন ও চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ কমিশনার বরাবর বুধবার এ নোটিশ দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশনের ট্রাস্টি আইনজীবী জিয়া হাবীব আহসানের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার হাসান এম এস আজিম এ নোটিশ দিয়েছেন।
নোটিশ পাওয়ার সাতদিনের মধ্যে পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে। অন্যথায় আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে নোটিশে বলা হয়েছে।
নোটিশে বলা হয়, গণমাধ্যমের খবর অনুসারে সিআরবির ছয় একর জমিতে ৫০০ শয্যার বিশেষায়িত হাসপাতাল এবং ১০০ শয্যার মেডিকেল কলেজ নির্মাণে এক বেসরকারি কোম্পানির সঙ্গে গত ১৮ মার্চ একটি চুক্তি করে পূর্বাঞ্চল রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। অথচ এই ভবনটি ঐতিহাসিক স্থাপনা ও পরিবেশগত সংরক্ষিত এলাকা হিসেবে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের তৈরি করা তালিকায় রয়েছে। ফলে সিআরবির ঐতিহাসিক গুরুত্ব রয়েছে। এ ছাড়া সিআরবি এলাকায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করলে শতবর্ষী অনেক পুরোনো গাছ কাটতে হবে। এতে পরিবেশগত মারাত্মক প্রভাব পড়বে। তাই সিআরবিকে সংরক্ষণ করা জরুরি।
এ দিকে সিআরবিতে আধুনিক হাসপাতাল নির্মাণ না করে অন্য কোনো উপযুক্ত স্থানে নির্মাণের জন্য গত ১২ জুলাই গণমাধ্যমে বিবৃতি দিয়েছেন চট্টগ্রামের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা। বিবৃতিদাতারা হলেন- শহীদজায়া বেগম মুশতারী শফী, প্রফেসর ড. অনুপম সেন, প্রফেসর ড. সিকান্দার খান, দৈনিক আজাদী সম্পাদক এমএ মালেক, অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত, প্রফেসর আবুল মনসুর, কবি ও সাংবাদিক আবুল মোমেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. মাহফুজুর রহমান, প্রফেসর ডা. একিউএম সিরাজুল ইসলাম, প্রফেসর হরিশংকর জলদাস, অধ্যাপক ফেরদৌস আরা আলীম, ডা. চন্দন দাশ, নাট্যব্যক্তিত্ব আহমেদ ইকবাল হায়দার, প্রফেসর অলক রায়, স্থপতি জেরিনা হোসেন, প্রকৌশলী দেলোয়ার মজুমদার, আবৃত্তি শিল্পী রাশেদ হাসান প্রমুখ।
বিবৃতিতে বলা হয়- শুধুই প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের কারণেই নয়, এটি ঐতিহাসিক কারণেও গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল। ঐ এলাকায় ১৯৩০ সালের ইতিহাস-প্রসিদ্ধ চট্টগ্রাম যুব বিদ্রোহীরা অর্থসংগ্রহের জন্য অভিযান চালিয়েছিলেন। তদুপরি সিআরবি ভবনটি দেশের ব্রিটিশ বা কলোনিয়াল স্থাপত্যের বিলীয়মান নিদর্শনের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ একটি। এটি স্থাপত্যকলা ও ইতিহাসের ছাত্র-শিক্ষকের শিক্ষা ও গবেষণার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। এসব বিবেচনা থেকেই বাংলাদেশ সরকার এলাকাটিকে সংবিধানের দ্বিতীয় ভাগের ২৪ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী ঐতিহ্য ভবন হিসেবে ঘোষণা করে সংরক্ষিত এলাকা ঘোষণা করেছে।