সিলেটে ভূমিকম্পে হেলে পড়েছে ২ ভবন

ঘন ঘন ভূমিকম্পের প্রভাবে সিলেট নগরের পাঠানটুলা দর্জিপাড়া এলাকায় দুটি ছয়তলা ভবন হেলে পড়েছে। গতকাল শনিবার দুপুর ১টা ৫৮ মিনিটে রিখটার স্কেলে চার মাত্রার ভূমিকম্পে এ ভবন দুটি হেলে যায়।
খবর পেয়ে সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীসহ করপোরেশনের প্রকৌশলী ও পুলিশ কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এ সময় ভবন দুটির বাসিন্দাদের দ্রুত নিরাপদ স্থানে সরে যেতে বলা হয়। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার বিএম আশরাফ উল্ল্যাহ তাহের এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ভূমিকম্পে পাঠানটুলা দর্জিপাড়া এলাকার সি ব্লকের ১৬/১ নম্বর ও ৩ ব্লকের ৩ নম্বর বাসা হেলে পড়ার খবর পাওয়া গেছে। দুটি বাসাই ছয়তলা বিশিষ্ট। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সেখানে নজরদারি করছে।
এদিকে গতকাল শনিবার পাঁচ দফা ভূকম্পনের পর আজ রোববার আবারও কেঁপে ওঠে সিলেট। আজ ভোর ৪টা ৩৫ মিনিট ৭ সেকেন্ডে ২ দশমিক ৮ মাত্রার এই ভূকম্পন অনুভূত হয়। এতে সিলেটজুড়ে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। তবে ঘুমিয়ে থাকায় ভূমিকম্পের বিষয়টি অনেকে আঁচ করতে পারেননি।
ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের দায়িত্বরত কর্মকর্তা ইকবাল হোসেন জানান, রিখটার স্কেলে আজ ভোরে হওয়া ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ২ দশমিক ৮। এটির উৎপত্তিস্থলও সিলেটের জৈন্তাপুর বর্ডার এলাকায়।
এর আগে শনিবার দুপুর ১টা ৫৮ মিনিটে সর্বশেষ ভূমিকম্প অনুভূত হয়। এতে প্রবল ঝাঁকুনিতে কেঁপে ওঠে সিলেট। এ ছাড়া শনিবার সকাল ১০টা ৩৬ মিনিট, ১০টা ৫০ মিনিট, বেলা সাড়ে ১১টা ও ১১টা ৩৪ মিনিটে সিলেটে ভূকম্পন অনুভূত হয়। রিখটার স্কেলে কম্পনের সর্বোচ্চ মাত্রা ৪ দশমিক ১ ছিল বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, রিখটার স্কেলে শনিবার সকাল ১০টা ৩৬ মিনিটে হওয়া ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৩ দশমিক শূন্য। দ্বিতীয় ঝাঁকুনি ছিল সকাল ১০টা ৫০ মিনিট ৫৩ সেকেন্ডে। রিখটার স্কেলের এর মাত্রা ছিল ৪ দশমিক ১। বেলা ১১টা ২৯ মিনিট ৫৩ সেকেন্ডে ২ দশমিক ৮ মাত্রা ও দুপুর ১টা ৫৮ মিনিটে ৪ মাত্রায় ভূমিকম্প অনুভূত হয়। প্রত্যেকটিরই উৎপত্তিস্থল সিলেটের আশপাশে। ঢাকা থেকে উত্তর-পূর্বে এর অবস্থান।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ছোট ছোট ভূমিকম্পের পর বড় ধরনের ভূমিকম্প হতে পারে। আর বড় ধরনের ভূমিকম্প হলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে সিলেট। এ জন্য সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন তাঁরা।
এদিকে উদ্ভুত পরিস্থিতিতে সম্ভাব্য দুর্যোগ মোকাবিলায় দুর্যোগ বিশেষ সেল গঠন করেছে নগর কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়া ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ, স্বাস্থ্য, বিদ্যুৎ, আবহাওয়াসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগের সমন্বয়ে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী কর্মপরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।