স্ত্রীকে এসিড নিক্ষেপ, জেলহকের মৃত্যুদণ্ড বহাল
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে গৃহবধূকে এসিড নিক্ষেপের ঘটনায় ভিকটিমের স্বামী একই উপজেলার গোপিনাথপুর গ্রামের মো. আকবর আলী ওরফে জেলহক মণ্ডলের মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ। আজ বুধবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে আপিল বিভাগ এ রায় দেন।
হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আসামির আপিল আবেদন খারিজ করে এ রায় দেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত। আদালতে আসামিপক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট ফরিদ আহমেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার মেহেদী হাছান চৌধুরী।
অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মেহেদী হাছান চৌধুরী বলেন, এসিড নিক্ষেপে মৃত্যুদণ্ডের সাজা বহালের রায়টি দুর্লভ। ঘটনার সময় মেয়েটির বয়স ছিল ১৮ বছর। এসিড দিয়ে মেয়েটির স্বামী তার কান, চোখ ও মুখ ঝলছে দিয়েছিলেন। আমরা আদালতে বলেছি, এ ধরনের ঘৃণ্য অপরাধে সাজা যদি মৃত্যুদণ্ড বহাল না থাকে সমাজে বিরূপ প্রভাব পড়বে। শুনানি শেষে আদালত মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রেখেছেন। এ রায়টি এসিড নিক্ষেপকারীদের জন্য বড় সতর্কবার্তা।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, সৌদি আরবফেরত আকবর আলীর সঙ্গে ভিকটিমের ২০০৬ সালের ৪ সেপ্টেম্বর বিয়ে হয়। বিয়ের পর আকবর আলী আবার সৌদি আরব চলে যান। এর কয়েক মাস পর দেশে ফিরে স্ত্রীকে সৌদি আরব নিয়ে যেতে চাইলে এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রী ও দুই পরিবারের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়। এ ঘটনার জেরে ২০০৮ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি মধ্য রাতে স্ত্রীর গায়ে এসিড ঢেলে দেন আকবর আলী। আহত স্ত্রীকে উদ্ধার করে প্রথমে পাবনা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
এ ঘটনায় পরের দিন ১৯ ফেব্রুয়ারি ভিকটিমের বাবা একই উপজেলার বড় বাসুরিয়া গ্রামের মো. আব্দুল আউয়াল শেখ জামাতার বিরুদ্ধে শাহজাদপুর থানায় মামলা করেন। মামলায় ২০০৯ সালে আত্মসমর্পণ করেন আকবর আলী। এরপর সিরাজগঞ্জের জেলা ও দায়রা জজ আদালত বিচার শেষে ২০০৯ সালের ২৩ আগস্ট এক রায়ে এসিড অপরাধ দমন আইনের ৫(ক) ধারায় আকবর আলীকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন।
বিচারিক আদালতের এ রায়ের বিরুদ্ধে ডেথ রেফারেন্স ও কারাবন্দি আসামির আপিল শুনানি শেষে হাইকোর্ট আকবর আলীর মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে ২০১৪ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর রায় দেন। এ রায়ের বিরুদ্ধে কারাবন্দি আসামি আপিল বিভাগে আপিল করেন। এ আপিলের ওপর শুনানি নিয়ে আকবর আলীর মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখলেন আপিল বিভাগ।