পুলিশের বিরুদ্ধে সাংবাদিককে বেধড়ক পেটানোর অভিযোগ
বাগেরহাটের রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র বাতিলের দাবিতে তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির আধাবেলা হরতাল চলাকালে এক সাংবাদিকের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে।
বৃহস্পতিবার ভোর ৬টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত হরতাল শেষ হওয়ার কিছুক্ষণ আগে রাজধানীর শাহবাগ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ ঘটনায় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।
মারধরের শিকার ব্যক্তি আবদুল আলিম। তিনি বেসরকারি টেলিভিশন এটিএন নিউজের ক্যামেরাপারসন।
তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটিতে সমর্থনকারী বামপন্থী বেশ কিছু ছাত্রসংগঠন সকালে শাহবাগ মোড় অবরোধের চেষ্টা করে। তাদের কাঁদানে গ্যাস ও গরম পানি ছুড়ে হটিয়ে দেয় পুলিশ। এর পর দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া চলে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বেলা দেড়টার দিকে শাহবাগ থানার সামনে দুজনকে আটক করে থানার ভেতরে নেওয়া হয়। বেসরকারি টেলিভিশন এটিএন নিউজের ক্যামেরাম্যান আবদুল আলিম ওই ঘটনার ভিডিও করতে যান। এ সময় পুলিশ সদস্যরা তাঁর ক্যামেরা কেড়ে নিয়ে বেধড়ক মারধর করেন।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, ওই গণমাধ্যমকর্মী পুলিশকে তাঁর পেশাগত পরিচয় জানান। এর পরও তাঁর পিঠ ও মাথায় লাঠি দিয়ে আঘাত হানা হয়।
ভুক্তভোগী আবদুল আলিম সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি সাংবাদিক বলার পরও পুলিশ আমাকে গেটের মধ্যে নিয়ে মারধর করে। তাদের বাধা দিতে গেলে আমাদের রিপোর্টার ইশান দিদারকে পিটিয়েছে পুলিশ।’
আবদুল আলিমের কর্মস্থল এটিএন নিউজের অ্যাসোসিয়েট হেড অব নিউজ প্রভাষ আমিন তাঁর ফেসবুকে স্ট্যাটাসে এ ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, ‘এটিএন নিউজের ক্যামেরাপারসন আবদুল আলিমকে পুলিশ শাহবাগ থানার ভেতরে নিয়ে পেটাচ্ছিল। বাধা দিতে গেলে রিপোর্টার ইশান দিদারকেও পিটিয়েছে পুলিশ। ২০-৩০ জন পুলিশ মিলে এ দুই সাংবাদিককে বেধড়ক পিটিয়েছে। এখন তাঁদের ঢাকা মেডিকেলে নেওয়া হয়েছে। আমাদের ক্যামেরাম্যান বা রিপোর্টার যদি বেআইনি কিছু করে থাকে, পুলিশ তাঁদের আটক করতে পারত। এমনও নয় রাস্তায় ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার মাঝখানে পড়ে তাঁরা মার খেয়েছে। ঠান্ডা মাথায় থানার ভেতরে নিয়ে ২০/৩০ জন মিলে দুজন নিরস্ত্র সাংবাদিককে পিটিয়েছে। কেন? এই প্রশ্নের জবাব অবশ্যই চাই।’
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বকর বলেন, ‘ঘটনাটি আমরা শুনেছি। তবে আমরা আরেক পাশে ছিলাম। ঘটনাটি তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
‘অসুবিধা নেই। এখানে সিসিটিভি আছে। ভিডিও ফুটেজ দেখে জড়িতদের খুঁজে বের করা হবে’, যোগ করেন আবু বকর।
ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মারুফ হোসেন সরদার বলেন, ‘এই ঘটনাটি একটি সম্পূর্ণ অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। যে পুলিশ এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত, তাঁকে খুঁজে বের করে তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’