নারী হত্যার দায়ে স্বামীসহ দুজনের যাবজ্জীবন সাজা

এক নারীকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার দায়ে স্বামীসহ দুজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন গাজীপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালত। এ ছাড়া আদালত ওই দুজনকে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরো ছয় মাস সাজা দিয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে আদালতের বিচারক সৈয়দ জাহেদ মনসুর এ রায় দেন।
সাজাপ্রাপ্তরা হলেন ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার নয়নপুর গ্রামের মো. নজরুল ইসলাম এবং তাঁর সহযোগী গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার পূর্ব লোহাদী এলাকার শহীদুল্লাহ ওরফে শহীদ। অপরাধ প্রমাণিত না হওয়ায় মামলার তিন আসামিকে খালাস দিয়েছেন আদালত।
রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন বিশেষ পিপি মো. ফজলুল কাদের ও মো. শাহজাহান। আসামিপক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট অহিদুজ্জামান।
আইনজীবী মো. ফজলুল কাদের মামলার বরাত দিয়ে জানান, ২০০০ সালের আগস্ট মাসে গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার চেংনা এলাকার হামিদা আক্তার ও তাঁর চাচাত ভগ্নিপতি নজরুল ইসলাম পালিয়ে বিয়ে করেন। দুজনেরই এটি ছিল দ্বিতীয় বিয়ে।
একই বছরের ২০ আগস্ট নজরুল তাঁর স্ত্রী হামিদাকে নিয়ে কাপাসিয়া উপজেলার বারিষাব ইউনিয়নের ডাওরা হাদিকুলের বাড়িতে নিয়ে যান। ওই দিন সন্ধ্যায় নজরুল ও তাঁর সহযোগী শহীদুল্লাহ ওরফে শহীদ বাড়ির পাশে আখক্ষেতে নিয়ে হামিদার মুখ ও হাত বেঁধে তাঁর শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেন।
পরে হাদিকুলের স্ত্রী পারভীন বেগম চিৎকার করতে থাকলে আশপাশের লোকজন এসে হামিদাকে উদ্ধার করে কাপাসিয়া উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে ভর্তি করে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় হামিদা পরের দিন মারা যান।
এ ঘটনায় ২২ আগস্ট নিহত হামিদার চাচা আব্দুর রহিম বাদী হয়ে পাঁচজনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) তপন চন্দ্র সাহা ওই বছরের ১৮ ডিসেম্বর পাঁচজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দেন।
মামলায় ১৩ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য শেষে আদালত আজ নজরুল ও শহীদুল্লাকে যাবজ্জীবন সাজা দেন। অপর তিন আসামি হাদিকুল, হাদিকুলের স্ত্রী পারভীনা আক্তার ও আছর উদ্দিনের ছেলে রুকন ওরফে লুকুকে বেকসুর খালাস দেন বলে জানান আইনজীবী।