গুলিতে আহত বালু ব্যবসায়ীর মৃত্যু, ইউপি সদস্য পলাতক

দু্র্বৃত্তদের গুলিতে আহত নরসিংদীর বালু ব্যবসায়ী সুজন মিয়া (২৫) মারা গেছেন। গত বুধবার রাতে দুর্বৃত্তরা সুজনকে কুপিয়ে জখম এবং গুলি করে। সদর উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নে ওই ঘটনা ঘটে।
ওই রাত থেকেই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন সুজন। গতকাল শনিবার দিবাগত রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
আজ রোববার এ ঘটনায় সদর থানায় মামলা করেন সুজন মিয়ার বড় ভাই সুমন মিয়া। হাজীপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য রেখা বেগমকে প্রধান আসামি করে ১৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। রেখা বেগম গত বুধবার ঘটনার পর থেকেই পলাতক।
মামলার বরাত দিয়ে পুলিশ জানিয়েছে, সুজন মিয়ার সঙ্গে হাজীপুর ইউনিয়ন পরিষদের মহিলা সদস্য রেখা বেগমের ছেলে কামালের বন্ধুত্ব ছিল। ওই দুজনের সঙ্গে চলাফেরা করত ফয়সাল ও শিপলু। সম্প্রতি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে হাজীপুর ইউনিয়নে সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন রেখা বেগম।
এরপরই রেখা বেগম ও তাঁর ছেলে কামাল ইয়াবা ব্যবসার সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন বলে অভিযোগ উঠে। এলাকায় ইয়াবা বিক্রিতে বাধা দেন সুজন মিয়া। এ নিয়ে ইউপি সদস্য রেখা ও কামালের সঙ্গে কথাকাটাকাটি হয়।
গত বুধবার রাতে ব্যবসায়ী সুজন মিয়া ঢাকা থেকে বাড়ি ফেরার পথে ইউপি সদস্যর ছেলে কামাল ও ফয়সাল মোবাইল ফোনে তাঁকে ডেকে নিয়ে আসেন। এরপর কামাল, ফয়সাল ও শিপলুসহ ১২ থেকে ১৪ জনের এক দল দুর্বৃত্ত সুজনকে দড়িপাড়া গ্রামে নিয়ে যায়। ওই এলাকায় দুর্বৃত্তরা সুজনকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করে। পরে মৃত্যু নিশ্চিত করতে দুর্বৃত্তরা সুজনের বুকে গুলি করে। এ সময় সুজনের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে নরসিংদী সদর হাসপাতালে ও পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে।
তিনদিন হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় সুজন মারা যান। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, সুজনের শরীরে চারটি গুলি পাওয়া গেছে। একটি গুলি কলিজায় বিদ্ধ হয়।
নিহত সুজনের বড় ভাই ও মামলার বাদী সুমন মিয়া সাংবাদিকদের বলেন, ‘মাদকের প্রতিবাদ করায় তাঁরা আমার ভাইকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। আমরা হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।’
নরসিংদী সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম মোস্তফা বলেন, নিহত সুজনের ভাই সুমন মিয়া বাদী হয়ে স্থানীয় হাজীপুর ইউপি সদস্য রেখা বেগমকে প্রধান আসামি করে আটজনের নাম উল্লেখ করেও অজ্ঞাতনামা আরো ছয়জনসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন। আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।
নিহত সজনের লাশ ময়নাতদন্ত শেষে আজ রোববার সন্ধায় পরিবারের লোকজনের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ওসি গোলাম মোস্তফা।