বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে জিরাফের মৃত্যু

দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে আনা চার জিরাফের মধ্যে একটি শনিবার বিকেলে মারা গেছে। ময়নাতদন্ত শেষে রোববার ভোররাতে সেটিকে পার্কের মধ্যেই মাটিচাপা দেওয়া হয়েছে।
জিরাফটি কী রোগে বা কেন মারা গেছে এ ব্যাপারে প্রকৃত তথ্য জানাতে পারেনি সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক ও পার্ক কর্তৃপক্ষ। তবে প্রাথমিকভাবে ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়াজনিত কারণে ফুসফুস ও হৃদযন্ত্রের সমস্যার ফলে জিরাফটি মারা গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের দুই কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে চারটি জিরাফ ২০১১ সালে গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে আনা হয়েছিল। এর মধ্যে একটি জিরাফ গত ১২ জুন থেকে অসুস্থ হয়ে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটতে শুরু করে। খাওয়া কমিয়ে দেয় ও ঝিমুতে থাকে। এ লক্ষণ দেখা দেওয়ায় পার্কের সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক ও লোকজন জিরাফটিকে সুস্থ করার চেষ্টা করেন। কিন্তু জিরাফটির শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি ঘটে এবং পর্যায়ক্রমে জিরাফের পেছনের অংশ অবশ হয়ে পড়ে। একপর্যায়ে শনিবার সকালে পার্ক কর্তৃপক্ষ জিরাফটিকে সুস্থ করার লক্ষ্যে ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণী রোগের মেডিসিন বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. আব্দুর রহমান ও সার্জারি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম, শ্রীপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আব্দুল জলিল ও পার্কে নিয়োজিত পশু চিকিৎসক ডা. জুলকার নাইম মানিককে নিয়ে চিকিৎসা বোর্ড গঠন করে। এরপর চিকিৎসকেরা অসুস্থ জিরাফের চিকিৎসা শুরু করলেও সেটিকে বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব হয়নি। শনিবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে হঠাৎ করেই মারা যায় জিরাফটি।
রাতেই ঢাকা বিভাগীয় বন কর্মকর্তা শাহাব উদ্দিনের উপস্থিতিতে মৃত জিরাফের ময়নাতদন্ত করা হয় এবং রোগ নির্ণয়ের জন্য নমুনা সংগ্রহ করা হয়। সংগৃহীত নমুনা রোববার ঢাকার কেন্দ্রীয় পশু রোগ অনুসন্ধান গবেষণাগার ও ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। পরে রোববার ভোররাতে মৃত জিরাফটিকে পার্কের মধ্যেই মাটি চাপা দেওয়া হয়।
শ্রীপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আবদুল জলিল জানান, জিরাফ অত্যন্ত সংবেদনশীল প্রাণী। কোন রোগে আক্রান্ত হয়ে জিরাফটি মারা গেছে এখনই সে সম্পর্কে কিছু বলা যাচ্ছে না। তবে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়াজনিত কারণে ফুসফুস ও হৃদযন্ত্রের সমস্যার ফলে সেটি মারা গেছে।