জনগণ সবার ওপরে : প্রধানমন্ত্রী

দেশের জনগণকে সবার ওপরে স্থান দিয়ে তাদের জানমালের হেফাজতে আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর (ভিডিপি) সদস্যদের নিজ নিজ অবস্থান থেকে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে গাজীপুরের সফিপুরে আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর ৩৫তম জাতীয় সমাবেশে এ আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, দেশের জনগণ সবার ওপরে। প্রত্যেকের নিজ নিজ অবস্থান থেকে জনগণের জানমালের হেফাজত করা আপনাদের পবিত্র দায়িত্ব। এই দায়িত্ব পালনে আপনারা সততা, নিষ্ঠা, আন্তরিকতা ও সাহসের সঙ্গে কাজ করে যাবেন, এই প্রত্যাশা আমাদের সবার।
এ সময় ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘আমাদের নতুন প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত হবে। বিজ্ঞান প্রযুক্তির শিক্ষা পাবে, বাংলাদেশ হবে নিরক্ষরতামুক্ত—সে লক্ষ্য নিয়েই কাজ করে যাচ্ছি।’
প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ‘আমি জানি, উন্নয়নের পথে যথেষ্ট বাধা আসছে। কিন্তু এই বাধা বাঙালিকে কখনো দমিয়ে রাখতে পারবে না। কাজেই জঙ্গিবাদী, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করে দেশের উন্নয়নে যারা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে, তারা এ দেশের শত্রু। তারা এ দেশের বন্ধু না। তারা দেশকে ধ্বংসের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। যেকোনো অবস্থায় তাদের মোকাবিলা করে দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতির ধারা এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।’
বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০১৩ সালে সাধারণ নির্বাচনের আগে দেশব্যাপী নাশকতার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয় রেলওয়েসহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। সেখানে আনসার সদস্যদের মোতায়েন করার পর ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অনেক কমে গিয়েছিল। ২০১৫ সালের জানুয়ারি থেকে বিএনপি-জামায়াত জোট সেই একইভাবে পেট্রলবোমা মেরে মানুষ হত্যা শুরু করেছে। রাজনীতির নামে বাস, রেলগাড়িসহ বিভিন্ন যানবাহনে আগুন দিচ্ছে এবং মানুষকে পুড়িয়ে মারছে। এ ছাড়া রেলের ফিশপ্লেট তুলে ফেলাসহ নানা ধরনের অপকর্ম-দুষ্কর্ম করে যাচ্ছে। সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত রয়েছে। তাদের নৃশংস হামলায় এ পর্যন্ত প্রায় একশ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। শত শত মানুষ আহত হয়েছেন। পেট্রলবোমায় পুড়ে যাওয়া মানুষের আর্তনাদে হাসপাতালগুলোতে মর্মান্তিক পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে।
They are people or monsters- PM by NTV
বিএনপি-জামায়াতের কর্মকাণ্ডকে জঙ্গি ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যাঁরা মারা যাচ্ছেন, যাঁরা পেট্রলবোমায় পুড়ছেন, তাঁরা এ দেশের সাধারণ মানুষ। তাঁদের জীবনের মূল্য বিএনপিনেত্রী খালেদা জিয়ার কাছে নেই। আমরা যখন শিশুদের বই দিচ্ছি, তারা যখন স্কুলে যাবে, তখন তিনি এ তাণ্ডব শুরু করলেন। আজ শিশুদের স্কুলে যাওয়ার সব পথ বন্ধ হয়ে গেছে।’
এ সময় প্রধানমন্ত্রী আওয়ামী লীগ সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের চিত্র তুলে ধরে বলেন, অর্থনৈতিকভাবে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, বাংলাদেশের মানুষের মাথাপিছু আয় বাড়ছে। বাংলাদেশের মানুষের জীবনমান যখন উন্নয়নের দিকে যাচ্ছে, ঠিক সে সময় এ ধরনের তাণ্ডব দেশকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
এর আগে সকালে আনসার একাডেমির ইয়াদ আলী প্যারেড গ্রাউন্ডে আনসার সদস্যদের কুচকাওয়াজে সালাম গ্রহণ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর পর তিনি বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্প উদ্বোধন করেন এবং বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার জন্য আনসার-ভিডিপির সদস্যদের পদক ও সম্মাননা প্রদান করেন।