বিহঙ্গ বাসে আগুন : থলের বেড়াল বের হয়েছে

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘শাহবাগে ২০১৪ সালে একজন আওয়ামী লীগ নেতা তাঁর নিজ পরিবহনে পেট্রল ঢেলে আগুন দিয়ে ১১ জনকে হত্যার ঘটনার সত্যতা এখন অন্য আওয়ামী নেতাদের মুখ থেকেই বেরিয়ে আসছে। আসল সত্যকে কখনোই আড়াল করে রাখা যায় না।’
আজ বৃহস্পতিবার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভী এসব কথা বলেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘অথচ বিএনপি নেতাদের ওপর আওয়ামী নেতাদের সৃষ্ট জ্বালাও পোড়াও ও সন্ত্রাসের দায় চাপিয়ে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয় এবং গ্রেপ্তার করে কারাগারে ভরে রাখা হয়।’
রুহুল কবির রিজভী আরো বলেন, ‘এই চক্রান্তমূলক মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া থেকে শুরু করে বিএনপির অনেক জাতীয় নেতাকে জড়িয়ে হয়রানি করা হচ্ছে। রাষ্ট্রযন্ত্রকে কব্জা করেই বিরোধী দলের ওপর হামলা-মামলা-কারা নির্যাতন এমনকি বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার করা হয়। এমনিভাবে ২০১৪ ও ২০১৫ সালের ন্যায়সঙ্গত আন্দোলনকে গণবিচ্ছিন্ন করার জন্য নানা জঘন্য প্রাণবিনাশী কুটকৌশল চালিয়ে নিজেদের ক্যাডারদের দিয়ে বাসে আগুন দিয়ে মানুষ হত্যা করেছে। যার অসংখ্য প্রমাণ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। বিহঙ্গ বাসে আগুন দিয়ে মানুষ পোড়ানোর ঘটনায় থলের বেড়াল বের হয়ে পড়েছে।’
রাজধানীতে চলাচলরত বিহঙ্গ পরিবহনের মালিক বরিশাল-৪ (হিজলা-মেহেন্দীগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক পংকজ দেবনাথের বিরুদ্ধে গত ২৩ মে বরিশালে সংবাদ সম্মেলন করেন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মইদুল ইসলাম। ওই সংবাদ সম্মেলনে তিনি পংকজ দেবনাথের বিরুদ্ধে তাঁর বিহঙ্গ পরিবহনের বাসে আগুন লাগিয়ে মানুষ হত্যা করার অভিযোগ আনেন। এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে আজ তার বরাত দেন বিএনপি নেতা রিজভী।
সরকারের বিদায় ঘণ্টা বেজে গেছে
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘সরকারের বিদায় ঘণ্টা বেজে গেছে বলেই তারা বিএনপির কোনো সভা-সমাবেশের কথা শুনলেই আঁতকে ওঠে।’
সরকারের সমালোচনা করে রুহুল কবির বলেন, ‘পুরোনো অন্ধ, বন্ধ্যা, বাকশালের লাশ পুনরুজ্জীবিত করার অব্যাহত প্রচেষ্টার অংশ হিসেবেই বিরোধী দল শূন্য কর্মসূচি গ্রহণ করেছে বর্তমান গণবিরোধী সরকার। সরকার প্রধান শেখ হাসিনা দেশকে সর্বনাশের ধাক্কায় খাদের কিনারে নিয়ে এসেছেন। সর্বশক্তি নিয়োগ করেই বিরোধী দলহীন একটি রাজনৈতিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় সর্বশক্তি নিয়োগ করেছেন তিনি। আওয়ামী লীগ বরাবরই ক্ষমতাসীন হওয়ার পরেই জনগণের অমোঘ শক্তির বিষয়ে ভুলে যায়। এই কারণেই গণবিরোধী আচরণ করতে দ্বিধা করে না। বর্তমান আওয়ামী সরকার গণতন্ত্রকে যে অপহরণ করেছে এই গভীর সত্যকে লুকোনোর জন্যই মানুষকে আওয়াজ করতে বাধা সৃষ্টি করছে। সেজন্যই বিএনপিসহ বিরোধী দলের প্রতিবাদী স্লোগানকে প্রতিহত করার জন্য পুলিশকে লেলিয়ে দেওয়া হয়।’
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘কিশোরগঞ্জ জেলাধীন করিমগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম সুমনকে চেয়ারম্যান পদ থেকে অব্যাহতি দিয়েছে সরকার। এ ধরনের ঘটনা সন্দেহাতীতভাবে স্থানীয় প্রশাসন থেকে বিএনপি প্রার্থীদের বিরুদ্ধে হীন উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা দায়েরের মাধ্যমে সরিয়ে দেওয়ার সরকারি চক্রান্তেরই ধারাবাহিকতা।’ সুমনের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার করে তাঁকে স্বপদে বহালের দাবি জানান তিনি। এ ছাড়া বিএনপির সব নেতাকর্মীর মুক্তির দাবি করেন রিজভী।