খালেদা জিয়ার দুই মামলার পরবর্তী কার্যক্রম ২৭ আগস্ট
জিয়া অরফানেজ ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার কার্যক্রমের নতুন দিন আগামী ২৭ আগস্ট নির্ধারণ করেছেন পুরান ঢাকার বকশীবাজারে স্থাপিত বিশেষ আদালত। আজ সোমবার বিচারক আবু আহমেদ জমাদারের আদালত এ দিন নির্ধারণ করেন।
মামলার কার্যক্রমের শুরুতে আইনজীবী ব্যারিস্টার মাহবুবউদ্দিন খোকন বিদেশে চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়ার পক্ষে ছয় সপ্তাহের জামিন আবেদন করেন। এর পর মামলার এক আসামি ড. জিয়াউল হক মুন্নার আইনজীবী দুদকের উপপরিচালক হারুন-অর রশিদকে জেরা করেন।
পরে আদালতের কার্যক্রম শেষ হলে খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা সাংবাদিকদের জানান, বিদেশে চিকিৎসার জন্য ছয় সপ্তাহের জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত। তবে দুদকের আইনজীবীরা জানান, আদালত জামিনের এই আবেদন শুধু নথিভুক্ত করেছেন। ৩ আগস্ট খালেদা জিয়ার উপস্থিতিতে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার বাদী ও প্রথম সাক্ষী দুদকের উপপরিচালক হারুন-অর রশিদকে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা জেরা করেন। তখন বাকি জেরার জন্য ১০ আগস্ট দিন নির্ধারণ করেন আদালত। এর আগে কয়েকবার জেরার সময়েও আদালতে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসন।
২০০৫ সালে রাজধানীর কাকরাইলে সুরাইয়া খানমের কাছ থেকে ‘শহীদ জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট’-এর নামে ৪২ কাঠা জমি কেনা হয়। কিন্তু জমির দামের চেয়ে অতিরিক্ত এক কোটি ২৪ লাখ ৯৩ হাজার টাকা জমির মালিককে দেওয়া হয়েছে বলে কাগজপত্রে দেখানো হয়, যার কোনো বৈধ উৎস ট্রাস্ট দেখাতে পারেনি।
জমির মালিককে দেওয়া ওই অর্থ ছাড়াও ট্রাস্টের নামে মোট তিন কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা অবৈধ লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে।
২০১০ সালের ৮ আগস্ট জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে অর্থ লেনদেনের অভিযোগ এনে খালেদা জিয়াসহ চারজনের নামে তেজগাঁও থানায় দুর্নীতির অভিযোগে এ মামলা করেন দুদকের সহকারী পরিচালক হারুন-অর রশীদ।
ওই মামলার অপর আসামিরা হলেন খালেদা জিয়ার সাবেক রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, হারিছের তখনকার সহকারী একান্ত সচিব ও বিআইডব্লিউটিএর নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং ঢাকার সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান।
অন্যদিকে, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের দুই কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৪৩ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনে খালেদা জিয়া, তারেক রহমানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় আরো একটি মামলা করে দুদক।
মামলায় খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান ছাড়া অন্য আসামিরা হলেন মাগুরার সাবেক সংসদ সদস্য কাজী সালিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান।
এর আগে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় আদালতে হাজির না হওয়ায় খালেদা জিয়ার জামিন বাতিল করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। পরে ৫ এপ্রিল আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন নেন তিনি।
গত ১৯ মার্চ খালেদা জিয়াসহ নয়জনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির দুই মামলায় অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক বাসুদেব রায়।