গত বছর মাসে এক লাখ, এখন মাসে আড়াই হাজার
![](http://103.16.74.218/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2015/08/29/photo-1440791139.jpg)
২০১৪ সালজুড়ে প্রতি মাসে গড়ে এক লাখ ভারতীয় গরু সাতক্ষীরা সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে এসেছে। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে আগস্ট মাস পর্যন্ত একই পথে ভারত থেকে প্রতি মাসে এসেছে গড়ে মাত্র আড়াইহাজার গরু।
চলতি বছর ২ ফেব্রুয়ারি পশ্চিমবঙ্গে সীমান্ত এলাকা পরিদর্শনে এসে বাংলাদেশে গরু যাওয়া বন্ধের নির্দেশ দেন ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং। বাংলাদেশের গরু ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, এরপর থেকেই আশঙ্কাজনক হারে কমতে থাকে গরু আমদানি। এমনকি অবৈধ পথেও সাতক্ষীরা সীমান্ত দিয়ে গরু আসছে না।
সাতক্ষীরার সীমান্ত পথ দিয়ে গরু আসা কমে যাওয়ার তথ্যটি পাওয়া গেছে সাতক্ষীরা জেলা কাস্টমস কার্যালয় থেকে। কার্যালয়ের কর্মকর্তারা জানান, জেলার দেবহাটা উপজেলার কুলিয়া, সদর উপজেলার সাতানি, কলারোয়া উপজেলার সোনাবাড়িয়া ও কালিগঞ্জ উপজেলার বসন্তপুর এই চারটি পথ দিয়ে ভারতীয় গরু বাংলাদেশে এসে থাকে।
জেলা কাস্টমস কার্যালয়ের কর্মকর্তারাই জানালেন ভারতীয় গরু আসা বন্ধ হয়ে গেছে। গরু ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সের (বিএসএফ) চোখ ফাঁকি দিয়ে সীমান্ত পেরিয়ে মাঝে মাঝে গরু এলেও ভারত সরকার সেসব পথও বন্ধ করে দিয়েছে।
স্থানীয় গরু ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, সীমান্তের ওপারের ভারতীয় ব্যবসায়ীরা ঈদকে সামনে রেখে বাংলাদেশে গরু পাঠাতে প্রস্তুত থাকলেও সে দেশের সরকার তাতে বাধা দিচ্ছে।
কাস্টমস কর্মকর্তা আবদুল লতিফ জানান, গত জানুয়ারি থেকে চলতি আগস্ট মাস পর্যন্ত মোট ৫৩ হাজার ভারতীয় গরু সাতক্ষীরায় এসেছে। এ থেকে সরকার রাজস্ব লাভ করেছেন দুই কোটি পঁয়ষট্টি লাখ টাকা। এর মধ্যে গত জানুয়ারি মাসে সাড়ে ৩৫ হাজার গরু এসেছিল। অথচ ফেব্রুয়ারি মাসে আসে মাত্র তিন হাজার ৬১৯টি গরু। এরপর থেকে গত সাত মাস যাবত সাতক্ষীরা সীমান্তে দিয়ে প্রতি মাসে গড়ে দুই হাজার ৫৩৬টি ভারতীয় গরু বাংলাদেশে এসেছে। আবদুল লতিফ আরও জানান, ২০১৪ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রতি মাসে গড়ে এক লাখ ভারতীয় গরু সাতক্ষীরা সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে এসেছে। এতে প্রতি মাসে পাঁচ কোটি টাকা হিসাবে সরকার রাজস্ব লাভ করেছে ষাট কোটি টাকা ।
সীমান্তের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, ভারতে বিজেপি সরকার ক্ষমতায় আসার পরই বাংলাদেশে গরু পাচারের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় । তা সত্ত্বেও বিএসএফ ও সে দেশের ব্যবসায়ীদের সহায়তায় গরু আসা অব্যাহত ছিল ।
সাতক্ষীরা সীমান্তের ভারতীয় গরুর খাটাল পরিচালনাকারী গোলাম মোর্শেদ জানান, এ রকম পরিস্থিতিতে ব্যবসা করাই কঠিন হয়ে পড়েছে। অন্যদিকে সংঘবদ্ধ ছিনতাইকরীরা সাতক্ষীরা সীমান্ত এলাকা থেকে কয়েকবার ট্রাক ভর্তি গরু ছিনতাই করেছে। এতে ব্যবসায়ীরা উৎসাহ হারিয়ে ফেলছেন।
কলারোয়া এলাকার একাধিক ব্যবসায়ী জানান গত রোববার ও সোমবার রুদ্রপুর সীমান্ত দিয়ে এক হাজারেরও বেশি গরু আসে। এর পরই বিএসএফ কর্তৃপক্ষ ওই চৌকিতে দায়িত্বে থাকা বিএসএফ সদস্যদের প্রত্যাহার করে নিয়েছে। এখন আর একদমই গরু আসছে না ।
গরুর খাটাল পরিচালক গোলাম মোর্শেদ ও ঘোনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান জানান, ভারতীয়রা কোনো গরু ছাড়ছে না।