মোবাইল চুরির অভিযোগে সুনামগঞ্জে শিশু নির্যাতন
![](http://103.16.74.218/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2015/09/17/photo-1442437471.jpg)
চুরির দায়ে সিলেটে শিশু রাজনের ওপর চালানো পাশবিক নির্যাতন এবং রাজনের মৃত্যুর ঘটনার শোক এখনো কাটিয়ে উঠতে পারেনি দেশবাসী। এর মাঝেই সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলায় ঘটেছে শিশু নির্যাতনের আরেকটি মর্মান্তিক ঘটনা। urgentPhoto
এবার মোবাইল চুরির মিথ্যা অপবাদ দিয়ে কামাল হোসেন (১৪) নামের এক কিশোরকে প্রকাশ্যে রশি দিয়ে গাছের সঙ্গে বেঁধে অমানুষিক নির্যাতন চালানো হয়েছে। গত রোববার সকালে উপজেলার বাংলাবাজার ইউনিয়নের কলাউরা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নির্যাতিত কামাল কলাউরা গ্রামের নূর মোহাম্মদের ছেলে।
এ ঘটনায় বুধবার রাতে নির্যাতনকারী তিনজনের বিরুদ্ধে দোয়ারাবাজার থানায় মামলা করেছেন নির্যাতিত কামাল হোসেনের বড় ভাই তাজুল ইসলাম।
তিনজন যুবক কামালের ওপর নির্যাতন চালিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
প্রথমে কামালের প্রতিবেশী এক আত্মীয় তাকে উদ্ধার করেন। পরে পরিবারের লোকজন তাকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। চার দিন চিকিৎসা শেষে গতকাল বুধবার দুপুরে বাড়ি ফিরেছে কামাল।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত রোববার সকাল ১০টায় দক্ষিণ কলাউরা গ্রামের পূর্বপাড়ার বাসিন্দা হাসেম মিয়ার ছেলে মাসুক মিয়ার একটি মোবাইল ফোন চুরি হয়। গ্রামের বাসিন্দা ইসমাইল মিয়ার ছেলে ইউনুছ মিয়া, মোস্তফা মিয়ার ছেলে কুদ্দুছ মিয়া ও উপজেলার বোগলা ইউনিয়নের নোয়াধর গ্রামের বাসিন্দা রুস্তম আলীর ছেলে মোস্তফা মিয়া মিলে চুরির অপবাদ দিয়ে কামালকে ধরে নিয়ে আসে।
পরে তাকে গাছের সঙ্গে বেঁধে লাঠিসোটা ও গাছের ডাল দিয়ে বেধড়ক মারধর করে। প্রতিবেশী এক নারীর কাছ থেকে খবর পেয়ে কামালের আত্মীয় তোফায়েল গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করেন। পরে পরিবারের লোকজন তাকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। বুধবার রাতে থানায় ইউনুছ মিয়া, কুদ্দুছ মিয়া ও মোস্তফা মিয়ার বিরুদ্ধে মামলা করেন কামাল হোসেনের বড় ভাই তাজুল ইসলাম।
পরে বিষয়টি জানাজানি হলে স্থানীয় ইউপি সদস্য নূরুল ইসলাম মোবাইল ফোনে ঘটনা সম্পর্কে পুলিশকে জানালে দোয়ারাবাজার থানার পুলিশ গিয়ে অভিযান চালিয়ে ঘটনার সঙ্গে জড়িত দক্ষিণ কলাউরা গ্রামের মাসুক মিয়া ও মোস্তফা মিয়াকে আটক করে নিয়ে আসে।
ঘটনার একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, মোবাইল ফোনটি চুরি করেছিল নির্যাতনকারী ইসমাইল মিয়া। ইসমাইল মিয়ার কাছে নির্যাতিত কিশোর কামাল হোসেন এক হাজার টাকা পেত। ওই পাওনা টাকা না দেওয়ার জন্য কামাল হোসেনকে মোবাইল চুরির অপবাদ দিয়ে তিনজন মিলে গাছে বেঁধে অমানুষিক নির্যাতন করেছে।
দোয়ারাবাজার থানার ওসি সেলিম নেওয়াজ বলেন, ‘বিষয়টি আমরা জানতাম না। বুধবার সন্ধ্যার পর গ্রামের স্থানীয় ইউপি সদস্য নূরুল ইসলাম আমাকে মোবাইল ফোনে ঘটনা সম্পর্কে জানিয়েছেন। ঘটনার সঙ্গে জড়িত প্রধান হোতা নির্যাতনকারী দুজনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে।’