কোটা বহালের আন্দোলনে মন্ত্রীর কমিটি, কর্মসূচি স্থগিত

সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বহাল থাকার পক্ষে নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান। শাহবাগে এসে আন্দোলন সচল রাখতে গঠন করেছেন ‘মুক্তিযুদ্ধ চেতনা সমন্বয় পরিষদ।’ এরপরই শাহবাগে সড়ক অবরোধ কর্মসূচি স্থগিত ঘোষণা করেন মন্ত্রী নিজেই।
আগামী ১৪ অক্টোবর পর্যন্ত শাহবাগ মোড় অবরোধ কর্মসূচি স্থগিত ঘোষণা করেন শাজাহান খান। তবে এ আন্দোলনকে সচল রাখতে সব জায়গায় কমিটি গঠনের পরামর্শ দেন তিনি। আগামী ১৪ অক্টোবর সংবাদ সম্মেলন করে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে জানান মন্ত্রী নিজেই।
সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা বহাল রাখার দাবিতে আজ সোমবারও বিক্ষোভ করে বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরা। সন্ধ্যায় সেখানে যান নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান। তাঁর ঘোষণার পর শেষ হয় অবরোধ কর্মসূচি।
মন্ত্রী শাজাহান খান শাহবাগে এসে ‘মুক্তিযুদ্ধ চেতনা সমন্বয় পরিষদ’ গঠন করেন। এর আহ্বায়ক করা হয় মেজর জেনারেল (অব.) হেলাল মোর্শেদ খানকে। এ সময় ‘মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ’র আহ্বায়ক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক আ ক ম জামাল উদ্দীন নবগঠিত পরিষদকে কর্মসূচি ঘোষণার আহ্বান জানান। পরিষদের সদস্য সচিব ওসমান আলী ১১ দফা দাবি তুলে ধরেন। পরে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন মন্ত্রী শাজাহান খান।
শাজাহান খান বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধা কোটা বহালের দাবিতে গড়ে ওঠা আন্দোলন সচল রাখতে সব জেলা ও বিভাগে কমিটি গঠন করা হবে।’ তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতাবিরোধীদের নিয়ন্ত্রণ করার জন্য কী কী করা দরকার তা ঠিক করেছি। আমাদের সবাইকে ঘোষিত ১১ দফা দাবির বাস্তবায়নে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়তে হবে। এমনভাবে আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে, যেন বাংলার মাটিতে স্বাধীনতাবিরোধীদের ঠাঁই না হয়। প্রত্যেক বিভাগ-জেলা-উপজেলায় আন্দোলন গড়ে তুলে স্বাধীনতাবিরোধীদের বীজ নির্মূল করতে হবে। স্বাধীনতাবিরোধীদের চাকরি দেওয়া যাবে না। তাদের চাকরি দেওয়া হলে পাকিস্তানি চেতনা বাস্তবায়ন করবে।’
যুক্তফ্রন্ট নিয়ে শাজাহান খান বলেন, ‘যুক্তফ্রন্ট নাকি জামায়াতের সাথে আঁতাত করে না। কিন্তু গোপনে আঁতাত করে নাশকতার চেষ্টা করছে। বিএনপির সাথে জামায়াত আছে, আবার যুক্তফ্রন্টও আছে। তাহলে বাকি কী থাকল? আগামী নির্বাচনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে বিজয়ী করার মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধীদের রাজনীতি করতে দেওয়া হবে না।’
মন্ত্রী আরো জানান, সারা দেশে কর্মসূচি পালনের মধ্য দিয়ে দাবির যৌক্তিকতা তুলে ধরে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহাসমাবেশ করা হবে।
এর আগে গত বুধবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে সরকারি চাকরিতে নিয়োগে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির পদে বিদ্যমান কোটা পদ্ধতি তুলে দিয়ে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। সেদিন রাত ৮টা থেকে রাজধানীর শাহবাগ মোড় অবরোধ করে বিক্ষোভ করছে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডসহ বিভিন্ন সংগঠন।