খুলনার রূপসা নদীতে মনোমুগ্ধকর নৌকাবাইচ

শিল্প ও বন্দরনগরী খুলনার তীরঘেঁষে বহমান রূপসা নদীতে প্রতিবারের মতো আজ শনিবার নৌকাবাইচ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
নগর সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের আয়োজনে বেসরকারি মুঠোফোন অপারেটর গ্রামীণফোন লিমিটেডের সহযোগিতায় এবং খুলনা জেলা প্রশাসনের সার্বিক তত্ত্বাবধানে লক্ষাধিক দর্শনার্থীর উপস্থিতিতে এই দশম নৌকাবাইচের আয়োজন করা হয়। গ্রামীণফোন দ্বিতীয়বারের মতো এই নৌকাবাইচ আয়োজনে সহায়তা দিল।
বড় গ্রুপের প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অধিকার করে এক লাখ টাকা জিতে নেয় ডুমুরিয়া উপজেলার মা গঙ্গা বাইচ দল। প্রথম রানার আপ হয় তেরখাদা থেকে আসা ময়ূরপঙ্খী দল। দ্বিতীয় রানার আপ হয় একই এলাকার ভাই ভাই জলপরী দল। আয়োজক কমিটি তাদের দুই দলকে যথাক্রমে ৬০ হাজার ও ৩০ হাজার টাকার চেক দেয়।
ছোট গ্রুপে প্রথম পুরস্কার পায় কয়রার সোনার তরী দল। পুরস্কার হিসেবে তারা পায় ৫০ হাজার টাকা। প্রথম রানার আপ কয়রার ভাই ভাই টাইগার ৩০ হাজার টাকা এবং দ্বিতীয় রানার আপ সাতক্ষীরার জয় মা কালী দল জিতে নেয় ২০ হাজার টাকা।
আজ শনিবার দুপুর ২টায় খুলনার নগরীর ১ নম্বর কাস্টম ঘাটে বেলুন উড়িয়ে খুলনা জেলা পরিষদের প্রশাসক শেখ হারুনুর রশীদ এই অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করনে। অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন পুলিশের খুলনার রেঞ্জের উপমহাপরির্শক (ডিআইজি) এস এম মনির-উজ-জামান, নগর সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সভাপতি মোল্লা মারুফ রশিদ, গ্রামীণফোনের খুলনা অঞ্চলের বিক্রয় বিভাগের প্রধান এস এম সাজ্জাদ হোসেন প্রমুখ।
বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ম্যাজিস্ট্রেট মশিউর রহমান, নিজাম উর রহমান লালু, মো. মইনুল হাসান শিমুল, মিনা আজিজুর রহমান, শিকদার আবদুল খালেক ও এস কে এম তাছাদুজ্জামান।
অনুষ্ঠানে গ্রামীণফোন কর্মকর্তা এস এম সাজ্জাদ হোসেন বলেন, গ্রামীণফোন সব সময়ই বাংলাদেশের সংস্কৃতি এবং ঐতিয্যের পৃষ্ঠপোষক।
এবারের প্রতিযোগিতাটি ছিল এ অঞ্চলের মানুষের আনন্দ-উৎসবের অন্যতম মিলনমেলা। ১ নম্বর কাস্টম ঘাটে দুপুর ২টায় আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে বাইচ প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে সাড়ে ৫টায় শেষ হয়।
মনোমুগ্ধকর এই প্রতিযোগিতায় খুলনা, তেরখাদা, ডুমুরিয়া, নড়াইল, কালিয়া, সাতক্ষীরা, পাইকগাছা, কয়রা, গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর, ফরিদপুর থেকে ২৬টি নৌকাবাইচে অংশ নেয়।
বাইচে জেলা প্রশাসন, নৌ-বাহিনী, কোস্টগার্ড, নৌ-পুলিশ, জেলা পুলিশ, মহানগর পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস, ডুবুরি, সিভিল সার্জন, রোভার স্কাউট, সি স্কাউট, খুলনা সিটি করপোরেশন, রূপসা সেতু, সড়ক ও জনপথ কর্তৃপক্ষের সমন্বিত প্রচেষ্টা ছিল। সুন্দর ও মনোরম পরিবেশে নগর সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সভাপতি মোল্লা মারুফ রশীদের সভাপতিত্বে ও মো. মনিরুজ্জামান রহিমের পরিচালনায় খান জাহান আলী রূপসা সেতুর নিচে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। সন্ধ্যায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রখ্যাত কণ্ঠশিল্পী আঁখি আলমগীর সংগীত পরিবেশন করেন।