সাতক্ষীরায় জামায়াত নেতার বাসা থেকে নথিপত্র জব্দ

সাতক্ষীরায় জেলা জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমিরের বাসায় তল্লাশি চালিয়েছে পুলিশ। ওই বাসায় সহিংসতা ও নাশকতার ছক ও বিভিন্ন বই উদ্ধার করেছে বলে দাবি করেছে পুলিশ।
আজ বৃহস্পতিবার সাতক্ষীরা জেলা পুলিশ সুপার চৌধুরী মঞ্জুরুল কবির তাঁর সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন। সংবাদ সম্মেলনে জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
পুলিশ সুপার আরো বলেন, ‘জেলা জামায়াতের সাবেক আমির আবদুল খালেক বিশ্বাসের বাড়িতে খুলনা, যশোরসহ কয়েকটি এলকার লোকজন গোপন বৈঠক করছে এমন খবর পেয়ে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমদাদ শেখের নেতৃত্বে যৌথ বাহিনী অভিযান চালায়। এ সময় ১০-১৫ জন বহিরাগত নেতা দ্রুত পেছনের দরজা দিয়ে পালিয়ে যান।’
আবদুল খালেকের বিরুদ্ধে সহিংসতা ও নাশকতার চারটি মামলা রয়েছে। এ সময় কাউকে আটক করা যায়নি বলে জানান পুলিশ সুপার।
পুলিশ সুপার আরো জানান, জেলা জামায়াতের সাবেক আমির আবদুল খালেক বিশ্বাসের সদর উপজেলার ধলবাড়িয়া গ্রামের বাড়িতে গতকাল বুধবার রাতে অভিযান পরিচালনা করা হয়। সেখানে উদ্ধার হওয়া নথিপত্র ও গোপন ডায়েরি সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন তিনি। তবে অধিকতর তদন্তের স্বার্থে এসব তথ্য খোলামেলাভাবে তুলে ধরা যায়নি বলে জানান পুলিশ সুপার।
পুলিশ সুপার জানান, জব্দ হওয়া নথিপত্রে জামায়াতের ২০১৫ সালের কর্ম পরিকল্পনা, খুলনা মহানগরী, খুলনা উত্তর ও দক্ষিণ জেলা, যশোর, বাগেরহাটসহ বিভিন্ন জেলার জামায়াত নেতা-কর্মীদের বিস্তারিত তথ্যও আছে। এ ছাড়া এসবের মধ্যে আছে, সরকার ও সরকারি সংস্থার বিরুদ্ধে প্রতিরোধমূলক কেন্দ্রীয় নির্দেশনা, প্রশিক্ষণ, চিঠিপত্র, সাংগঠনিক প্রতিবেদন, খুলনা অঞ্চলের আয়-ব্যয়ের হিসাব ছাড়াও ইসলামী ব্যাংক কমিউনিটি হাসপাতালের প্রতিবেদন, ডায়েরি ও নোটবুক আছে। এ ছাড়া ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি থেকে জামায়াত ও শিবিরের আহত ও নিহতদের নামের তালিকা রয়েছে এর মধ্যে। সাতক্ষীরা থেকে পরিচালিত জামায়াতের গোপন কর্মকাণ্ড খুলনা বাগেরহাট ছাড়াও যশোর, চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর, কুষ্টিয়াসহ বেশ কয়েকটি জেলায় বিস্তার লাভ করেছে।
পুলিশ সুপার আরো জানান, ভিন্ন জেলার দলীয় নেতা-কর্মীদের বেতন-ভাতা এবং মামলা পরিচালনার জন্য অর্থ দেওয়া হয় সাতক্ষীরা থেকে। এসব অর্থের উৎসও খুঁজে পেয়েছে পুলিশ। এ ছাড়া যেসব প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি জামায়াতকে অর্থায়ন করে এমন একটি তালিকাও মিলেছে। জামায়াতের রুকন প্রার্থীদের ব্যক্তিগত প্রতিবেদন, গোপন নোটবুক, বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনও জব্দ করা হয়েছে বলে তিনি জানান । নথিতে প্রশিক্ষণ ও প্রতিরোধের নানা তথ্য রয়েছে যা অনুসরণ করার নির্দেশনা রয়েছে।
নথিপত্র বিশ্লেষণ করে মঞ্জুরুল কবির বলেন ‘জামায়াত ও শিবির নেতা-কর্মীরা সাতক্ষীরা ছেড়ে গেছে। তাঁদের স্থলাভিষিক্ত হয়েছে ভিন্ন জেলার নেতারা।’ এ সময় তাঁরা পরিচয় লুকাতে নামও পরিবর্তন করেছে বলে জানিয়েছেন তিনি।