নূর হোসেনকে গোপনে আদালতে হাজির
নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাত খুন মামলার প্রধান আসামি নূর হোসেনকে আজ সোমবার সকালে গোপনে আদালতে হাজির করা হয়।
জেলা আদালতের পরিদর্শক হাবিবুর রহমান জানান, সিদ্ধিরগঞ্জ থানার একটি চাঁদাবাজির মামলায় অভিযোগপত্রভুক্ত আসামি হিসেবে নূর হোসেনকে আদালতে হাজির করা হয়। তাঁকে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে আনা হয়েছিল। বিচারিক হাকিম সাইদুজ্জামান শরিফের আদালতে হাজিরা শেষে আবার কাশিমপুর কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
এদিকে সাত খুন মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী ও নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন জানান, তিনিও জানতে পারেননি নূর হোসেনকে আদালতে আনা হয়েছে। অতি গোপনীয়তা রক্ষা করে হাজিরা শেষে নূর হোসেনকে দ্রুত পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
২০১৩ সালে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা আদায়ের অভিযোগে একটি মামলা হয় ২০১৪ সালে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায়। মামলার বাদী জনৈক ব্যবসায়ী আরমান হোসেন। পুলিশ এ মামলার অভিযোগপত্র দেয় চলতি বছরের ৩০ মার্চ।
নূর হোসেন সাত খুনের মামলাসহ মোট ১১টি মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি। এর মধ্যে পশুপাখি সংরক্ষণ আইনের একটি মামলায় তাঁকে এক বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে।
২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড থেকে অপহৃত হন নারায়ণগঞ্জের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী চন্দন সরকার, সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলামসহ সাতজন। ৩০ এপ্রিল শীতলক্ষ্যা নদী থেকে ছয়জনের এবং পরের দিন আরো একজনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
এ ঘটনায় আইনজীবী চন্দন সরকারের জামাতা ডা. বিজয় কুমার অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে এবং নজরুল ইসলামের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি সিদ্ধিরগঞ্জ আওয়ামী লীগ নেতা নূর হোসেনকে প্রধান আসামি করে ফতুল্লা থানায় পৃথক দুটি মামলা করেন। ওই মামলায় র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) সাবেক তিন কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কর্নেল তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, কমান্ডার এম এম রানা, মেজর আরিফসহ ১৮ র্যাব সদস্য এবং নূর হোসেন ও তাঁর সাত সহযোগী এখন কারাগারে আছেন।
সাত খুনের ঘটনার পরপর নূর হোসেন ভারতে পালিয়ে যান। সেখানে আটক থাকার পর গত ১২ নভেম্বর রাত সাড়ে ১১টার দিকে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ নূর হোসেনকে বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তর করে।
পরের দিন ১৩ নভেম্বর নূর হোসেনকে নারায়ণগঞ্জের মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে হাজির করা হয়। শুনানি শেষে বিচারক তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
ওই দিন নূর হোসেনকে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন জানান সাত খুন মামলার বাদী, আইনজীবী ও ক্ষুব্ধ লোকজন। নূর হোসেনকে আদালতে পাঠানোর পর ওই দিন বিক্ষুব্ধ জনতা তাঁর ফাঁসি চেয়ে স্লোগান দিতে থাকে এবং জুতা প্রদর্শন করে আদালত প্রাঙ্গণে।