লঞ্চ থামিয়ে পুলিশ পরিচয়ে ১০ লাখ টাকা ছিনতাই

ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার বিষখালী নদীতে পুলিশ পরিচয়ে চলন্ত যাত্রীবাহী লঞ্চ থামিয়ে ১০ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে দুজনকে আটক করেছে।
আজ রোববার বিকেলে উপজেলার ইসলামপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
আটকরা হলেন ইউসুফ আলী হাওলাদার ও তাঁর ছেলে আলাউদ্দিন হাওলাদার। তাঁদের ট্রলারে করেই ছিনতাইকারীরা এসেছিল বলে পুলিশ জানিয়েছে।
পুলিশ জানায়, বাকেরগঞ্জ উপজেলার নেয়ামতি লঞ্চঘাট থেকে দুপুরে ব্যবসায়ী বাদশা হাওলাদার মালামাল কিনতে ১০ লাখ টাকা নিয়ে ঝালকাঠির উদ্দেশে তুহিন নামে একটি লঞ্চে ওঠেন। লঞ্চটি বিষখালী নদী দিয়ে যাওয়ার সময় বিকেলে নলছিটির ইসলামপুর এলাকায় আসে।
এ সময় একটি ট্রলারে করে পাঁচজন লঞ্চটিকে থামতে বলেন। এর মধ্যে দুজন ছিল পুলিশের পোশাক পরা। লঞ্চটি থামিয়ে তাঁরা বাদশা হাওলাদারকে খুঁজতে থাকেন। একপর্যায়ে বাদশাকে কাপড় দিয়ে চোখ ও হাত বেঁধে ট্রলারে নিয়ে তোলেন। এ সময় তাঁর হাতে থাকা টাকার ব্যাগটি ছিনিয়ে নেওয়া হয়। পরে ট্রলার চালিয়ে ভারানি খালের পাশে এসে ছিনতাইকারীরা বাদশাকে ফেলে চলে যায়।
বাদশা প্রাণ বাঁচাতে দৌড়ে কিছুদূর গিয়ে বিষয়টি মোবাইল ফোনে মোল্লারহাট পুলিশ তদন্তকেন্দ্রে জানান। পুলিশ এসে ধাওয়া করে ট্রলারটি আটক করে। ট্রলারচালক ইউসুফ আলী হাওলাদার ও তাঁর ছেলে আলাউদ্দিন হাওলাদারকে আটক করে রাতে নলছিটি থানায় নিয়ে আসা হয়।
ব্যবসায়ী বাদশা হাওলাদার সাংবাদিকদের বলেন, “আমি নেয়ামতি থেকে সপ্তাহে একদিন স্থানীয় ব্যবসায়ীদের মালামাল কেনার জন্য টাকা নিয়ে লঞ্চযোগে ঝালকাঠি যাই। কোনো দুর্ঘটনা ঘটেনি। আজ হঠাৎ করে পুলিশের পোশাক পরা দুজন ব্যক্তি এবং তাদের সঙ্গে আরো তিনজন মিলে লঞ্চ থামিয়ে আমাকে খুঁজতে থাকে। একপর্যায়ে তারা আমাকে পেয়ে বলে, ‘তোকেই তো খোঁজছি। তোর নামে ওয়ারেন্ট আছে’।”
‘একথা বলে আমার চোখ এবং হাত কাপড় দিয়ে বাঁধে। আমাকে পাঁচজনে মিলে ধরে ট্রলারে তোলে। এ সময় আমি ভেবেছিলাম, তারা আমাকে মেরে নদীতে ফেলে দেবে। কিছুদূর গিয়ে একটি খালের পাশে আমাকে ফেলে রেখে তারা চলে যায়। বিষয়টি আমি তাৎক্ষণিক পুলিশকে জানালে তারা এসে ট্রলারচালক ও তার ছেলেকে আটক করে।’ বলেন ব্যবসায়ী বাদশা হাওলাদার।
নলছিটি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. কামরুজ্জামান জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ট্রলারচালক পুলিশকে জানায়, ভবানীপুর গ্রামের সোহাগ ও কুড়ালিয়া গ্রামের সুফিয়ান এবং পুলিশের পোশাক পরা দুই ব্যক্তিসহ পাঁচজন ট্রলার ভাড়া করে তাকে নিয়ে যায়। লঞ্চ থামিয়ে তারা এক ব্যক্তিকে চোখ ও হাত বাঁধা অবস্থায় ট্রলারে তোলে। পরে তাকে ট্রলার থেকে নামিয়ে দিয়ে ওই পাঁচজন চলে যায়।