‘৫০০ লোকের একটা মিছিল করতে পেরেছেন?’

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০-দলীয় জোটের আন্দোলনে সাধারণ জনগণের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। তাদের মিছিলে ৫০০ লোকও থাকে না। তারা আরব বসন্তের মতো বাংলাদেশে কোনো দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারেনি। সংলাপ চাইলে তাদের আগে নাশকতা বন্ধ করতে হবে।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিট পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন মন্ত্রী।
বার্ন ইউনিট পরিদর্শনের সময় আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ওবায়দুল কাদের পেট্রলবোমা হামলায় দগ্ধ রোগীদের চিকিৎসার খোঁজখবর নেন। এ সময় একুশে বইমেলায় সম্প্রতি প্রকাশিত দুটি বইসহ এর আগে প্রকাশিত মন্ত্রীর অন্যান্য বইয়ের রয়্যালিটি থেকে প্রাপ্ত সব আয় ও স্বেচ্ছাধীন তহবিল থেকে পাঁচ লাখ ৪০ হাজার টাকা চিকিৎসাধীন রোগীদের অনুদান দেন তিনি। বার্ন ইউনিটে বর্তমানে ৫৪ জন রোগী পেট্রলবোমা হামলায় দগ্ধ হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তাঁদের প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে অনুদান দেওয়া হয়।
ওবায়দুল কাদের ২০ দলের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনারা কি আরব বসন্তের মতো কোথাও বাংলাদেশ বসন্তের একটা দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন? ৫০০ লোকের একটা মিছিল করতে পেরেছেন? তাহলে জনগণকে বাদ দিয়ে যেটা করছেন, এইটা তো আইএস আর বোকো হারামের তৎপরতার সাথে তুলনীয়।’
জনগণকে স্বস্তি দেওয়ার মতো কোনো তথ্য সরকারের কাছে আছে কি না—সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা রেসপনসিবল ভূমিকা পালনের জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। এ দেশটা আমাদের সকলের। দেশের স্বার্থে ঠান্ডা মাথায় আমরা চিন্তাভাবনা করে অগ্রসর হচ্ছি। দেশের মানুষকে যাতে উদ্বেগ আতঙ্ক থেকে রক্ষা করা যায়, সে ব্যাপারে অবশ্যই সরকারের পক্ষ থেকে যে দায় নেই, এটা আমরা কখনোই বলতে চাই না। তবে এখানে প্রথম সবার আগে যে কথাটা দাঁড়ায়, সেটা হচ্ছে প্রথম বোমাবাজি বন্ধ করতে হবে।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, সহিংসতা ও সংলাপ একসঙ্গে চলতে পারে না। বোমা মেরে মানুষ হত্যা করে সংলাপে বাধ্য করার কথা যাঁরা ভাবছেন, তাঁরা বোকার স্বর্গে বাস করছেন। নাশকতা ও সহিংসতা আন্দোলন নয়। সংলাপ চাইলে নাশকতা বন্ধ করতে হবে।
নাশকতাকে এক ধরনের আত্মঘাতী প্রবণতা অভিহিত করে মন্ত্রী বলেন, কথিত আন্দোলনকারীদের এ প্রবণতা রুখে দিতে হবে। আন্দোলনে জনগণকে সম্পৃক্ত করতে ব্যর্থ হয়ে ২০-দলীয় জোট এ সর্বনাশা খেলায় মেতে উঠেছে। বোমা মেরে সরকার পতনের নজির পৃথিবীর কোথাও নেই বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
সড়ক পরিবহনমন্ত্রী বলেন, ৫ জানুয়ারির পর অদ্যাবধি ৬৩ জন গাড়িচালক ও হেলপার পেট্রলবোমায় দগ্ধ হয়ে মারা গেছেন। প্রায় দুই হাজার গাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। অবিলম্বে নাশকতা বন্ধের আহ্বান জানান তিনি।
পরিদর্শনকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক, বার্ন ইউনিটের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ চিকিৎসকরা উপস্থিত ছিলেন।