সাত খুন মামলার পুনঃতদন্ত বিষয়ে আদেশ সোমবার
নারায়ণগঞ্জে সাত খুনের মামলার পুনঃতদন্ত চেয়ে করা আবেদনের বিষয়ে ১৪ ডিসেম্বর (সোমবার) আদেশ দেবেন হাইকোর্ট। আজ বুধবার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. আমির হোসেনের সমন্বয়ে হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
সাত খুনের ঘটনায় নিহত নজরুল হোসেনের স্ত্রী মামলাটি পুনঃতদন্ত চেয়ে হাইকোর্টে এ আবেদন করেছিলেন। আবেদনকারীর পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট বাসেত মজুমদার আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. মনিরুজ্জামান কবির।
গত রোববার এ মামলার শুনানি শেষ হয়। পরে বিচারক আজ বুধবার আদেশের জন্য দিন রেখেছিলেন। আদালত আজ আদেশ না দিয়ে এর জন্য আগামী সোমবার দিন রেখেছেন।
অ্যাডভোকেট বাসেত মজুমদার গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
গত ২৯ নভেম্বর সাত খুনের ঘটনায় অধিকতর তদন্ত চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন নিহত কাউন্সিলর নজরুল ইসলামের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি।
সেখানে বিউটি দাবি করেন, সাত খুনের মামলায় ৩৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে, যেখানে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বাদ পড়েছে। এ বিষয়ে বিচারিক আদালতে আবেদন করলে তা খারিজ করে দেওয়া হয়। তাই এ ব্যাপারে হাইকোর্টে আবেদন করে বাদীপক্ষ।
সেলিনা ইসলাম বিউটি আরো জানান, দীর্ঘ ১১ মাস তদন্ত শেষে গোয়েন্দা কর্মকর্তা মামুনুর রশিদ এজাহারের পাঁচ আসামি সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইয়াসিন মিয়া, নূর হোসেনের কোষাধ্যক্ষ হাসমত উল্লাহ হাসু, সহযোগী আনোয়ার হোসেন, আমিনুল হক রাজু ও ইকবাল হোসেনের নাম বাদ দিয়ে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। সেখানে বাদপড়া পাঁচজনের নাম অন্তর্ভুক্ত করতে প্রথমে নিম্ন আদালতে রিভিউ আবেদন করেন তিনি। তা খারিজ হয়ে গেলে পুনরায় রিভিউ মামলা করেন। সে মামলাও খারিজ হয়ে যায়। এ কারণেও গত ২৯ নভেম্বর উচ্চ আদালতে এই আবেদন করা হয়।
এ মামলায় প্রধান আসামি নূর হোসেন, র্যাবের সাবেক কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কর্নেল তারেক সাঈদ, কমান্ডার এম এম রানা, মেজর আরিফসহ ২৩ আসামি কারাগারে আছেন। পলাতক রয়েছেন মামলার আরো ১২ আসামি।
২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের ওয়ার্ড কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম, আইনজীবী চন্দন সরকারসহ সাতজনকে অপহরণ করে হত্যা করা হয়। ঘটনার পর পরই ভারতে পালিয়ে যান মামলার প্রধান আসামি ওয়ার্ড কাউন্সিলর নূর হোসেন। তখন নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগদলীয় সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের সঙ্গে নূর হোসেনের পালিয়ে যাওয়ার কথোপকথনের একটি অডিও রেকর্ড গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। কিন্তু এসব বিষয়ে পলাতক নূর হোসেনের কোনো জবানবন্দি নেওয়া হয়নি। তাঁর জবানবন্দি ছাড়াই এ ঘটনায় করা দুটি মামলায় ৮ এপ্রিল অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। অভিযোগপত্রে র্যাবের স্থানীয় পর্যায়ের কর্মকর্তাসহ অনেকের জড়িত থাকার বিষয়টি প্রকাশ পেলেও ঘটনার অন্তরালে আরো কেউ ছিল কি না তা অপ্রকাশিতই রয়ে গেছে।
এ অবস্থায় হত্যাকাণ্ডের সাড়ে ১৮ মাস পর গত ১৫ নভেম্বর রাতে সাত খুন মামলার প্রধান আসামি নূর হোসেনকে ভারত থেকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়। ১৬ নভেম্বর আদালতে শুনানি শেষে ১১ মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে নূর হোসেনকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। নূর হোসেনকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ না করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন নিহতদের স্বজনরা।