দেশে আইএসের অস্তিত্ব আবারও নাকচ প্রধানমন্ত্রীর

দেশে জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেটের (আইএস) অস্তিত্বের দাবি আবারও নাকচ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ‘বাংলাদেশে কোনো আইএস নেই। দেশে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো প্রাথমিকভাবে অভ্যন্তরীণ বলে তদন্তে দেখা গেছে। এ পর্যন্ত তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে, অভ্যন্তরীণ কারণেই এই ঘটনাগুলো ঘটেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ব্লগার ও বিদেশি নাগরিকদের হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারে সফলতা দেখিয়েছে।’
বার্তা সংস্থা ইউএনবির খবরে বলা হয়েছে, আজ রোববার গণভবনে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিবিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি থমাস শ্যাননের নেতৃত্বে উচ্চ পর্যায়ের একটি মার্কিন প্রতিনিধিদল সাক্ষাৎ করতে গেলে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। এই প্রতিনিধিদলে ছিলেন দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিশা দেশাই বিশওয়াল, দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক উপসহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী মনপ্রিত সিং এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মাশা স্টিফেনস ব্লুম বার্নিকাট।
প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম এ ব্যাপারে সাংবাদিকদের ব্রিফিং করেন। সন্ত্রাসবাদ নিয়ে আলোচনার সময় শেখ হাসিনা বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিকভাবে সব ধরনের সন্ত্রাসবাদ ও চরমপন্থার নিন্দা করেন।
ঢাকা ও ওয়াশিংটনের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কে সন্তোষ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ককে মূল্য দিয়ে থাকে। নিয়মিত বার্ষিক সংলাপ ও আলোচনার ওপর এই সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত।’
জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যু প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এর ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবিলায় বাংলাদেশ প্রতিবছর জিডিপির ১ শতাংশ ব্যয় করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বাংলাদেশ নিম্ন কার্বন ও জলবায়ু সহনীয় উন্নয়নের পথ অনুসরণেও অঙ্গীকারবদ্ধ।’
আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে বর্তমান সরকারের সাফল্যের বর্ণনা দিতে গিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘দারিদ্র্যের হার গত ছয় বছরে ৪১ শতাংশ থেকে ২২ দশমিক ৪ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়েছে।’
এ সময় থমাস শ্যানন সন্ত্রাস দমনে দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা আরো জোরদারের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, সন্ত্রাসবাদ এখন একটি বৈশ্বিক সমস্যা। তিনি অ্যাভিয়েশন নিরাপত্তা খাতে সম্পর্ক আরো জোরদারে প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়ে বলেন, ‘আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে এটি এখন খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।’
পারস্পরিক কল্যাণে যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ সম্পর্ক আরো এগিয়ে নেওয়ার কথা বলে শ্যানন বলেন, ‘বহু খাতে দুই দেশ একে অপরের সঙ্গে সহযোগিতা করতে পারে।’ তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিভিন্ন খাতে বাংলাদেশের অসামান্য অগ্রগতির উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন।
বঙ্গবন্ধুর খুনিদের যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রত্যর্পণের বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী উত্থাপন করলে দেশে ফিরে এ ব্যাপারে তাঁর সহকর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করবেন বলে জানান শ্যানন।
এ সময় বৈঠকে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক সম্পর্কবিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী, ওয়াশিংটনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম জিয়াউদ্দিন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব সুরাইয়া বেগম।