এবার ‘সাইকেলবোমা’ উদ্ধার

বাইসাইকেলটি অন্যান্য বাইসাইকেলের মতো নয়। এর পাইপের ভেতরে ভরে দেওয়া হয়েছে বিস্ফোরক দ্রব্য। বাইরে থেকে নিরীহ মনে হলেও বাস্তবে তা ভয়ংকর। আগুনের স্পর্শ পাওয়া মাত্রই এটি প্রচণ্ড শব্দে বিস্ফোরিত হবে।
সংবাদ সম্মেলনে এভাবেই বর্ণনা করলেন র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান। তিনি জানান, গতকাল শনিবার দিবাগত গভীর রাতে রাজধানীর শান্তিনগরের কর্ণফুলী গার্ডেন সিটি এলাকা থেকে বিস্ফোরকভর্তি বাইসাইকেলটি উদ্ধার করেছে র্যাব। এ সময় একজনকে আটক করা হয়। পরে তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আরো দুজনকে ককটেল, পেট্রলবোমা, বিস্ফোরক দ্রব্যসহ আটক করা হয়।
আজ রোববার দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে র্যাব ২-এর কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের সামনে তাদের হাজির করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে মুফতি মাহমুদ খান দাবি করেন, বাংলাদেশে বাইসাইকেল বোমা পাওয়ার ঘটনা এটাই প্রথম। বাইসাইকেলটির প্রতিটি রডের মধ্যে বারুদ ছিল এবং বিশেষ জায়গায় আছে একটা ফিউজ। ওই ফিউজে আগুন লাগামাত্রই ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটত। সাইকেলটির ৩০ গজের মধ্যে ভয়াবহ পরিস্থিতি হতে পারত।
র্যাবের দাবি, আটককৃতরা বিভিন্ন নাশকতামূলক কাজ করেছে এবং আরো বড় নাশকতার পরিকল্পনা তাদের ছিল। এ ঘটনার ‘মূল হোতা’ ছাত্রদলের নেতা আনিসুর রহমান খোকন বলে দাবি করেছে র্যাব।
ওই বাইসাইকেলটি ছাড়াও আটককৃতদের দেওয়া তথ্যের ওপর ভিত্তি করে কলতাবাজার এলাকা থেকে ৫৮টি ককটেল, ৪৮টি পেট্রলবোমা, একটি পাইপবোমা ও ৫০০ গ্রাম সালফার পাউডার উদ্ধার করার দাবি করেছে র্যাব-২।
মুফতি মাহমুদ খান বলেন, ‘গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে কর্ণফুলী গার্ডেন সিটি এলাকা থেকে গতকাল শনিবার দিবাগত রাত পৌনে ২টার দিকে বিস্ফোরকভর্তি বাইসাইকেলসহ রাকিবুল ইসলাম মণ্ডলকে আটক করে র্যাব। রাকিবুলের কথার ওপর ভিত্তি করে কয়েক ঘণ্টা পর ভোর প্রায় ৫টার দিকে কলতাবাজার এলাকা থেকে আমিনুল ইসলাম রানা, রিয়াজুল ইসলাম নামে আরো দুজনকে ককটেল, পেট্রলবোমা ও বিস্ফোরকদ্রব্যসহ আটক করা হয়।’
র্যাবের এই কর্মকর্তা আরো বলেন, আটককৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা গেছে, কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আনিসুর রহমান খোকনের নির্দেশে এরা রাজধানীর বিভিন্ন অঞ্চলে ককটেল বিস্ফোরণসহ বিভিন্ন নাশকতামূলক কাজ করেছে। তিনি আরো জানায়, খোকন তাঁর নিজ গাড়িতে করে বিস্ফোরক বহন করে ভাড়া করা ছাত্রদল ক্যাডারদের সরবরাহ করত। পরে খোকনের নির্দেশিত স্থানগুলোতে তারা হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটাত।
মুফতি মাহমুদ খান বলেন, ‘আটক রানা অভিনব পন্থায় বাইসাইকেলের পাইপের ভেতরে করে বিস্ফোরক দ্রব্য কুরিয়ারযোগে রাকিবুলের ঢাকার ঠিকানায় পাঠায়।’
ঘটনার ‘মূল হোতা’ আনিসুরকে আটক করার চেষ্টা চলছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।