‘বিএনপি করি বলেই এত অত্যাচারিত হব?’

নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. মনির হোসেনের ওষুধের দোকান আগুনে পুড়িয়ে ফেলেছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১টার দিকে উপজেলার ব্রাহ্মণদী ইউনিয়নের বালিয়াপাড়া বাজারের বাদল সুপার মার্কেটে এ ঘটনা ঘটে।
৫ জানুয়ারি ঢাকার নয়াপল্টনে খালেদা জিয়ার জনসভায় যাওয়ার অপরাধে ক্ষমতাসীন দলের লোকজন ওই আগুন দেয় বলে অভিযোগ করেছেন মনির হোসেন।
urgentPhoto
আজ বুধবার সকালে মনির হোসেনের দোকানে গিয়ে দেখা যায়, দোতলা বাদল সুপার মার্কেটের নিচতলায় এক কোণায় অবস্থিত শুধু মনির হোসেনের দোকানটিই পুড়ে গেছে। দোকানের সামনে লোকজনের ভিড়। দোকানে ছিলেন যুবদল নেতা মনির হোসেন। তিনি পল্লী চিকিৎসক। পাশাপাশি ওষুধ বিক্রির ব্যবসা করেন। দোকানে রাখা ওষুধ বিক্রির কাঠের তাক ও সব ওষুধ পুড়ে গেছে।
দোকানে ঢুকে মনির হোসেন কান্নাজড়িত কণ্ঠে এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘সবগুলো পুড়ে ছাড়খার হয়ে গেছে। এইখানে আমার লক্ষ লক্ষ টাকার ওষুধ ছিল। একটি টাকার ওষুধ নাই এখন। আমার এ পর্যন্ত চার-সাড়ে চার লক্ষ টাকার ক্ষতি হইছে। এক লক্ষ টাকার ফার্নিচার পুড়ে গেছে। সাড়ে তিন লক্ষ টাকার ওষুধ শ্যাষ হইয়া গেছে।’ আগুনে দোকানে রাখা বেশ কিছু পোস্টারও পুড়ে গেছে।
অগ্নিকাণ্ডের কারণ জানতে চাইলে মনির হোসেন এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘গতকাল আমি খালেদা জিয়ার ডাকে গণতন্ত্র হত্যা দিবস উপলক্ষে ঢাকায় যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদের নেতৃত্বে পল্টনে গিয়েছিলাম। বিএনপির রাজনীতি করি বিধায় এর আগেও আমাকে বহুবার হুমকি-ধমকি দেওয়া হয়েছে। দোকান বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়েছে। ইতিপূর্বে আমাকে তিন-চারবার মিথ্যা মামলায় প্রায় চার-সাড়ে চার মাস জেল খাটানো হয়েছে। তারপরও আমি বিএনপির রাজনীতি করি বিধায় গতকাল আমি ঢাকায় গিয়েছি। এটাকে কেন্দ্র করে আমার প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দলের লোকজন গভীর রাতে আমার দোকান পেছন দিয়ে জানালার শাটার ভেঙে দাহ্য জাতীয় যেকোনো পদার্থ দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। রাত ১টার দিকে নাইটগার্ড আমাকে টেলিফোন করে বলে, ভাই আপনি তাড়াতাড়ি আসেন, আপনার দোকানে আগুন। আমি দৌড়ে আসি আমার লোকজনসহ। আইস্যা শাটার খুলে দেখি আমার দোকানের সব কিছু ছাড়খার হইয়া গেছে।’ বলেই কেঁদে ফেলেন মনির।
যুবদল নেতা বলেন, ‘আড়াইহাজারে যখন বিএনপির কোনো লোকজন নাই, তখন আমি নজরুল ইসলাম আজাদ ভাইয়ের নেতৃত্বে বিএনপির রাজনীতি করি। এ জন্য কিছুদিন পরপর আমাকে হুমকি দেওয়া হয়। আমার দোকানে কোনো কাস্টমার আসলেও তারা বলে আমি নাকি এখানে বিএনপির রাজনীতি করি। আমি তাদের জন্য ব্যবসা-বাণিজ্যও করতে পারি না। কিছুদিন পরপর তারা আমার জমি দখল করে। এটা করে, ওটা করে। উপর্যুপরি হুমকির পর হুমকি দিয়ে আসতাছে। সেটাকে কেন্দ্র করে আমি গতকাল ঢাকা যাই। আর ঢাকা যাওয়াকে কেন্দ্র করে গভীর রাতে আমার প্রতিপক্ষের ওরা আমার দোকানে আগুন ধরিয়ে দেয়। আমার সব কিছু শেষ হয়ে গেছে। আমার ব্যবসা-বাণিজ্য করার আর কোনো উপক্রম নাই। আমি দেশবাসীর কাছে এর প্রতিকার চাই। বিএনপির রাজনীতি করি বিধায় আমরা এতভাবে অত্যাচারিত হব। আমরা আল্লাহর কাছে বিচার চাই।’
স্থানীয় লোকজন জানান, গতকাল মঙ্গলবার রাতে মনিরের ওষুধের দোকানে আগুন লাগার পর আশপাশের লোকজন এসে দ্রুত আগুন নেভান। এ কারণে মার্কেটের অন্য দোকানগুলো রক্ষা পায়।
অগ্নিকাণ্ডের ব্যাপারে আওয়ামী লীগের কারো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।