নরসিংদীতে পুলিশ পরিচয়ে গাড়ি ডাকাতি, গ্রেপ্তার ৭

পুলিশের পোশাক পরে মহাসড়কে ডাকাতির মামলায় সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। নরসিংদী ও গাজীপুর চৌরাস্তায় গত তিনদিন পৃথক অভিযান চালিয়ে নরসিংদী গোয়েন্দা পুলিশ তাঁদের গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারের সময় তাঁদের কাছ থেকে একটি পিকআপ ভ্যান উদ্ধার করা হয়।
গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা হলেন চাঁদপুরের মতলবের নান্নু মিয়া (৪০), নজরুল ইসলাম (৪৫) ও দেলোয়ার হোসেন (৫৫), নারায়ণগঞ্জের বন্দর এলাকার আমির হোসেন (৪৫), নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলার খাগকান্দা গ্রামের মো. মোস্তফা (২৪), পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলার সোহাগদল গ্রামের মো. শাহীন (২৮) ও কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার নওদাবস গ্রামের রেজাউল করিম ওরফে রানা (২৭)।
তাঁদের আজ মঙ্গলবার আদালতে হাজির করে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সাতদিনের রিমান্ড আবেদন করেন। আদালত প্রত্যেক আসামির তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
নরসিংদী গোয়েন্দা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুল গাফফারের নেতৃত্বে তিনদিন ধরে এই বিশেষ অভিযান চালানো হয় বলে জানিয়েছেন নরসিংদী পুলিশ সুপার আমেনা বেগম (বিপিএম)। আজ দুপুরে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, গত ৪ জানুয়ারি রাত সাড়ে ১২টার দিকে নরসিংদীর সাহেপ্রতাপ এলাকা থেকে পুলিশের পোশাক পরে একদল ডাকাত একটি ডিম বোঝাই পিকআপ ভ্যান ডাকাতি করে। ওই ঘটনায় গাড়ির মালিক সাইদ হোসেন নরসিংদী সদর মডেল থানায় মামলা করেন। তাঁর বাড়ি বেলাব উপজেলার রাঙ্গারটেক এলাকায়। এসআই আব্দুল গাফফারকে এ ঘটনার তদন্ত ভার দেওয়া হয়। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) হাসিবুল আলমের তত্ত্বাবধানে অপরাধীদের ধরতে বিভিন্ন কৌশল ও তথ্যপ্রযুক্তির সহযোগিতায় অপরাধী চক্রকে শনাক্ত করা হয়। তাদের ওপর নজরদারির একপর্যায়ে নরসিংদীর পলাশ থানার ঘোড়াশাল এলাকা থেকে লুট করা পিকআপ ভ্যান ও চার সেট পুলিশের পোশাকসহ চাঁদপুরের নান্নু মিয়া ও নজরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাঁদের দেওয়া তথ্যানুয়ায়ী গাজীপুর চৌরাস্তার উত্তর পাশে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের নিচ থেকে দেলোয়ার, আমির, শাহীন, রেজাউল ও মোস্তফাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশ সুপার বলেন, ‘গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা ডাকাতদলের সদস্য। দীর্ঘদিন ধরে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম রোডের কাঁচপুর এলাকা, ঢাকা থেকে ময়মনসিংহ রোডের চৌরাস্তা এবং ঢাকা-সিলেট রোডের ভৈরব থেকে পাঁচদোনা, সাহেপ্রতাপ এলাকায় পুলিশ পরিচয় দিয়ে গাড়ি থামিয়ে কাগজপত্র চেক করার নাম করে মুরগি, মুরগির ডিম ও মাছের পিকআপ ভ্যান লুট করাই তাদের পেশা। অবৈধভাবে পুলিশের পোশাক নিজ দখলে রাখার অপরাধে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।’ এই চক্রের সঙ্গে জড়িত অন্যদের ধরতে অভিযান অব্যাহত আছে বলেও জানান তিনি।
এই সাতজন গ্রেপ্তার হওয়ায় পোল্ট্রি ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা স্বস্তি প্রকাশ করেছেন। তাঁরা এর সঙ্গে জড়িত অন্যদেরও দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন। পিকআপ ভ্যান ফেরত পেয়ে সাইদ মিয়া বলেন, ‘গাড়িটি হারিয়ে অনেকটা হতাশ হয়ে পড়েছিলাম। গাড়িটি ফিরে পাওয়ায় আমি এখন খুব খুশি।’