সাতক্ষীরায় বিএনপি ও আ.লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীরা সংকটে
সাতক্ষীরার বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীরা নির্বিঘ্নে প্রচার কাজ চালাতে পারছেন না বলে অভিযোগ উঠেছে। এসব প্রার্থীর অভিযোগ, পথেঘাটে মারধর, মাইক ভাঙচুর, ব্যানার ও পোস্টার ছেঁড়ার মতো ঘটনা ঘটছে অহরহ।
একাধিক প্রার্থী জানিয়েছেন, রিটার্নিং কর্মকর্তা ও পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ করেও কাজ হচ্ছে না।
এ ব্যাপারে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার রিটার্নিং কর্মকর্তা বেনজির আহমেদ বলেন, ‘এ ধরনের অভিযোগ আমরা পেয়েছি। বিষয়টি দেখা হচ্ছে।’
সদর উপজেলার ধুলিহর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোদাচ্ছেরুল হক হুদা জানান, গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তাঁকে চাঁদপুর এলাকার সাহেববাড়ির মোড়ে মোটরসাইকেল থামিয়ে কয়েক যুবক কিল, চড়, ঘুষি মারে। এ এলাকায় নির্বাচন করতে না আসার হুমকিও দিয়েছে যুবকরা।
মোদাচ্ছেরুল বলেন, ‘আজ শনিবার আমার অনেকগুলি ব্যানার ও পোস্টার মাটিয়াডাঙ্গায় এনে আগুন দিয়েছে তারা। এ বিষয়ে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) জানিয়েছি।’
একই উপজেলার শিবপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও এবারের বিএনপিদলীয় প্রার্থী আবদুল মজিদ বলেন, ‘আজ শনিবার গোদাঘাটা বটতলায় আমার ছেলে নুরুজ্জামানকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে আহত করেছে আওয়ামী লীগের কর্মীরা। দুর্বৃত্তরা আমার প্রচার মাইক ভেঙে দিয়েছে। নৌকা ছাড়া অন্য কোনো প্রতীকের পক্ষে প্রচার হবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে তারা।’
ভোমরা ইউনিয়নে বিএনপিদলীয় প্রার্থী ও সাবেক চেয়ারম্যান আসাদুর রহমান আসাদ জানান, তিনি এলাকায় প্রচারে বের হলেই হুমকির মুখে পড়ছেন। তিনি বলেন, ‘প্রতিপক্ষের লোকজন বলছে ঘরে ফিরে যা, নইলে খবর আছে। নিরুপায় হয়ে বাইরে কোথাও না গিয়ে নিজের অফিসে বসে সময় কাটাচ্ছি।’
ঝাউডাঙ্গা ইউনিয়নের বিএনপিদলীয় প্রার্থী রফিকুল ইসলাম জানান, পাথরঘাটা, হাজিপুর, তুজুলপুরসহ কয়েকটি এলাকায় তাঁর প্রচার মাইক ঢুকতে বাধা দিচ্ছে আওয়ামী লীগের কর্মীরা।
ফিংড়ি ইউনিয়নের বিএনপিদলীয় প্রার্থী এম এ কে হেলাল জানান, তাঁর ১৯টি কাপড়ের ব্যানার খুলে নিয়ে গেছে আওয়ামী লীগের কর্মীরা।
এদিকে সাতক্ষীরা সদরের আলীপুরে গতকাল শুক্রবারের পর আজ শনিবারও দ্বিতীয় দফায় বিএনপিদলীয় প্রার্থী আবদুর রউফের দুটি প্রচার মাইক ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। আবদুর রউফ অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগের প্রার্থী মশিউর রহমানের ছেলে মোহন ও তার সঙ্গীরা বিএনপি কর্মীদের মারধর ও মাইক ভাঙচুর করেছে।
কলারোয়ার কয়লা ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ইমরান হোসেন জানান, নৌকা মার্কার প্রার্থী মহিদুর রহমানের লোকজন তাঁর ওপর মারমুখী হয়ে আছে। বাড়ি থেকে বের হলেই মারধর করার হুমকি দিচ্ছে তারা পোস্টার ও ব্যানার ছিঁড়ে নিয়ে গেছে।
আশাশুনি উপজেলার শ্রীউলা ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী নুর মোহাম্মদ সরদার জানান, তিনি কোথাও প্রচারকাজ চালাতে পারছেন না। প্রতিপক্ষের লোকজন তাঁর সমর্থকদের ধাওয়া দিয়ে সরিয়ে দিচ্ছে বারবার।
তালা সদর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সরদার জাকির হোসেন ও জাতীয় পার্টি (জাপা) দলীয় প্রার্থী এস এম নজরুল একে অন্যের বিরুদ্ধে পোস্টার ছেঁড়ার অভিযোগ তোলেন।