খুলনায় হামলায় নিহত ১, ঘরবাড়ি দোকানপাট ভাঙচুর

খুলনার ফুলতলার দামোদর কলোনিপাড়া এলাকায় আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় প্রতিপক্ষের সন্ত্রাসীদের ছুরিকাঘাতে আবুল আলী লস্কর (৫৮) নামের এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আটজন। এ সময় ঘরবাড়ি, দোকানপাট, আওয়ামী লীগের কার্যালয় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।
জাতীয়পার্টি থেকে আওয়ামী লীগের যোগ দেওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে প্রতিপক্ষের সন্ত্রাসীরা এ ঘটনা ঘটিয়েছে বলে হতাহতদের পরিবার অভিযোগ করেছে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, সন্ধ্যায় এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা সংঘবদ্ধ হয়ে রামদা ও লাঠিসোঁটা নিয়ে কলোনিপাড়ায় অতর্কিত হামলা চালালে অন্তত ১০ ব্যক্তি আহত হন।
আহতদের মধ্যে কালাম গাজীর স্ত্রী সৈয়েদা (৬০), ওয়াজেদ আলী শেখের ছেলে ইয়াছিন শেখ (১৯), জামাল লস্করের স্ত্রী রাশিদা বেগম (৪০), ছেলে রিয়াজুল ইসলাম (২০), আবু তালেব লস্করের স্ত্রী ফরিদা বেগম (৫৫), ইয়ার আলী লস্করের ছেলে আজিজুলকে (২৪) ফুলতলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
সন্ত্রাসীরা ওই এলাকায় রোজিনা সুলতানার (৩৫) দোকানে হামলা ও ভাঙচুর, পাশে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে বঙ্গবন্ধুর ছবি ভাঙচুর, পর্যায়ক্রমে একই এলাকার জামাল লস্কর, শাহীন মৃধা, ছলেমান লস্কর, দুখু শেখ, আসমত লস্কর ও এইচএসসি পরীক্ষার্থী রিয়াজুলের বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
এদিকে রাত আনুমানিক ৮টার দিকে মৃত ওয়াজেদ আলী লস্করের ছেলে ভ্যানচালক আবুল আলী লস্কর বাড়ি আসছিলেন। পথে শুভ অটো রাইস মিলের গোডাউন এলাকায় পৌঁছালে দুর্বৃত্তদের এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাতে তিনি গুরুতর জখম হন। লোকজন তাঁকে ফুলতলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আবুল আলী লস্করের মৃত্যু হয়।
হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. আবু খালেদ মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ বলেন, পেটের ক্ষতস্থানে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণই তাঁর মৃত্যুর কারণ।
নিহত আবুল আলী লস্করের স্ত্রী মাহফুজা বেগম (৫০) বলেন, হতাহত ব্যক্তিরা দীর্ঘদিন ধরে জাতীয় পার্টির রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল। তিন মাস আগে আওয়ামী লীগে যোগ দেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে স্থানীয় জাতীয় পার্টি নেতার প্রকাশ্য নির্দেশে সন্ধ্যায় তাঁদের ওপর সশস্ত্র দুর্বৃত্তরা সন্ত্রাসী হামলা চালায়।
এমন অভিযোগ হাসপাতালে ভর্তি এইচএসসি পরীক্ষার্থী রিয়াজুল ইসলামেরও।
এদিকে হামলার খবর পেয়ে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান সরদার আলাউদ্দিন মিঠু, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সরদার শাহাবুদ্দিন জিপ্পীসহ দলের নেতারা হাসপাতালে ছুটে যান।
ফুলতলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম মুঠোফোনে বলেন, নিহতের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে প্রাথমিকভাবে হামলাকারীদের পরিচয় মিলেছে। এরই মধ্যে হামলাকারীদের আটকে অভিযান চলছে।