৭০৩ ইউপিতে ভোট গ্রহণ শুরু

চতুর্থ ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে ভোট গ্রহণ আজ শনিবার সকাল ৮টায় শুরু হয়েছে, চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। এবার ৭০৩টি ইউপিতে ভোট গ্রহণ চলছে।
এরই মধ্যে ব্যালট পেপার, ব্যালট বাক্সসহ সব ধরনের নির্বাচনী সামগ্রী বিশেষ নিরাপত্তায় কেন্দ্রে কেন্দ্রে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।
প্রথম তিন ধাপের তুলনায় এ ধাপে সুন্দর ভোট হবে এমন আশাবাদ ব্যক্ত করে নির্বাচন কমিশনার শাহ নেওয়াজ বলেন, অপরাধী যে পর্যায়ের হোক, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে কঠোর হওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। দায়িত্বে অবহেলা করলে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সদা সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। তাদের কঠোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যেন সন্ত্রাসী কার্যক্রম শক্ত হাতে মোকাবিলা করা হয়।
বার্তা সংস্থা বাসস জানিয়েছে, ৭২৫ ইউপির মধ্যে ৩৩ ইউপিতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীরা বিজয়ী হয়েছেন। এঁরা সবাই আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী। সব মিলিয়ে গত ১১ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়া ইউপি নির্বাচনে এখন পর্যন্ত চার ধাপে আওয়ামী লীগ মনোনীত ১৫০ জন চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
চতুর্থ ধাপে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী তিন হাজার ২৪৫ জন। এর মধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী এক হাজার ৫২২ জন। এই ধাপে আওয়ামী লীগ ৭২৪, বিএনপি ৬১৯, জাতীয় পার্টি (জাপা) ১৫৬, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ১৫৪ ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) ৪২টি ইউনিয়নে প্রার্থী দিয়েছে।
নির্বাচনকে ঘিরে বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে মাঠে নেমেছেন বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যরা। একই সঙ্গে আচরণবিধি লঙ্ঘন ও নানা অনিয়ম ঠেকাতে নির্বাহী হাকিমের পাশাপাশি বিচারিক হাকিমরাও অপরাধ তদারকিতে মাঠে আছেন।
ইসি সচিবালয়ের উপসচিব সামসুল আলম জানান, ভোটের দুদিন আগে থেকে মাঠে নেমেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এবারের নির্বাচনে সবাইকে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বনের পাশাপাশি অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি মোকাবিলায় আরো কঠোর হওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
ইসি কর্মকর্তারা জানান, পুলিশ, এপিবিএন ও ব্যাটালিয়ন আনসারের সমন্বয়ে প্রতি ইউনিয়নে একটি করে মোবাইল ফোর্স ও প্রতি তিন ইউপির জন্য স্ট্রাইকিং ফোর্স রাখা হয়েছে। অন্যদিকে প্রতি উপজেলায় দুটি করে র্যাবের মোবাইল টিম ও একটি স্ট্রাইকিং টিম এবং প্রতি উপজেলায় দুই প্লাটুন বিজিবি মোবাইল ও এক প্লাটুন স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে থাকছে।
নির্বাচনে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি মোকাবিলায় বৃহস্পতিবার বহিরাগতদের নির্বাচনী এলাকা ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ইসির উপসচিব মো. সামসুল আলম রিটার্নিং কর্মকর্তাদের এ সংক্রান্ত নির্দেশনা পাঠিয়েছেন। স্বেচ্ছায় এলাকা না ছাড়লে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।
ভোটের মাঠের সার্বিক নিরাপত্তায় শুক্রবার রাত ১২টা থেকে শনিবার মধ্যরাত ১২টা পর্যন্ত বেবিট্যাক্সি, অটোরিকশা, ইজিবাইক, ট্যাক্সিক্যাব, মাইক্রোবাস, জিপ, পিকআপ, কার, বাস, ট্রাক, টেম্পোসহ সব ধরনের যান্ত্রিক যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে ভোট গ্রহণের পূর্ববর্তী তিনদিন থেকে ভোটগ্রহণের দিন মধ্যরাত পর্যন্ত মোটরসাইকেল চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা বলবৎ রয়েছে।
এ ছাড়া ভোটের দিনের পূর্ববর্তী রাত ১২টা থেকে ভোটগ্রহণের দিন মধ্যরাত ১২টা পর্যন্ত লঞ্চ, ইঞ্জিনচালিত সব ধরনের নৌযান ও স্পিডবোট চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে বলা হয়েছে। তবে ইঞ্জিনচালিত ছোট নৌযান বা জনগণ তথা ভোটারদের চলাচলের জন্য ক্ষুদ্র নৌযান চলাচল নিষেধাজ্ঞার বাইরে থাকবে।
চতুর্থ ধাপের পর পঞ্চম ধাপে ২৮ মে ৭৩৩ ও ষষ্ঠ ধাপে ৪ জুন ৭২৪ ইউপিতে ভোট গ্রহণের কথা রয়েছে।