সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে গ্রেপ্তার নিয়ে আইনজীবী-পুলিশ সংঘর্ষ

শরীয়তপুরে সাজাপ্রাপ্ত এক আসামিকে গ্রেপ্তার নিয়ে আইনজীবী ও পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় আইনজীবীরা সাংবাদিকদের ওপর হামলা চালিয়ে চারটি ক্যামেরা ভাঙচুর করে। এতে সাংবাদিকসহ ১৫ ব্যক্তি আহত হয়েছেন।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুর দেড়টার দিকে জেলা আইনজীবী সমিতির সামনে এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ, আইনজীবী ও সাংবাদিকরা জানান, জাজিরা থানার একটি সহিংসতার মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি শাহেনশাহ ঢালী একটি চাঁদাবাজি মামলায় হাজিরা দিতে আজ শরীয়তপুরে এক আইনজীবীর কার্যালয় আসেন। গোয়েন্দা পুলিশ খবর পেয়ে জজ কোর্টের সড়ক থেকে ওই আসামিকে গ্রেপ্তার করে। তখন তাঁর আইনজীবী মাসুদুর রহমান পুলিশ সদস্যদের বাধা দেন। পুলিশের সঙ্গে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। সংঘর্ষে পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক সিদ্দিকুর রহমান, কনস্টেবল মো. সোহেল মিয়া, রাসেল মিয়া, মোহাম্মদ হাসান, আইনজীবী নজরুল ইসলাম, বজলুর রহমান, জামাল ভূঁইয়া, পারভেজ রহমান, পলাশ হোসেন ও মুরাদ মুন্সি আহত হন।
এদিকে সংঘর্ষের ঘটনা ধারণ করায় আইনজীবীরা সংঘবদ্ধ হয়ে সাংবাদিকদের ওপরও হামলা চালান। হামলায় দেশটিভির বি এম ইস্রাফিল, ইনডিপেনডেন্ট টিভির নুরুল আমীন, একাত্তর টিভির আনোয়ার হোসেন, আজকের নতুন খবরের রাজিব হোসেন ও স্থানীয় হুংকার পত্রিকার প্রতিনিধি মনিরুজ্জামান খোকন আহত হন। এ সময় তাঁরা চারটি ক্যামেরা ভাঙচুর করেন।
এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে সাংবাদিকরা সার্কিট হাউজ থেকে পুলিশ সুপারের কার্যালয় পর্যন্ত সড়কে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন।
শরীয়তপুর জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম বলেন, পুলিশ আইনজীবীর কার্যালয় থেকে আসামি গ্রেপ্তার করতে পারে না। এ বিষয়টিই পুলিশকে বোঝাতে চেয়েছিলাম। কিন্তু তারা আইনজীবীদের ওপর হামলা চালায়। আমরা আইনগত পদক্ষেপ নিয়ে এ হামলার ঘটনার বিচার চাইব। সাংবাদিকদের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। দুই পক্ষ বসে বিষয়টির সমাধান করা হবে।’
শরীয়তপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি অনল কুমার দে বলেন, ‘সাংবাদিকদের পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় নিগৃহীত হওয়ার ঘটনা অত্যন্ত বেদনাদায়ক। কেন আইনজীবীরা আমাদের সঙ্গে এমন আচরণ করল তা জানা নেই। আমরা আইনগত পদক্ষেপ নেব।’
শরীয়তপুরের পুলিশ সুপার সাইফুল্লাহ আল মামুন বলেন, আইনজীবীরা পুলিশের কাছ থেকে আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছেন। পুলিশ আসামিকে আনার চেষ্টা করলে আইনজীবীরা সংঘবদ্ধ হয়ে পুলিশের ওপর হামলা চালান। চার পুলিশ আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।