চুয়াডাঙ্গায় ঝুলে আছে দুটি মামলা

গত ১১ বছরেও তেমন অগ্রগতি হয়নি ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট বহুল আলোচিত সিরিজ বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় চুয়াডাঙ্গায় দায়ের করা দুটি মামলার। একটি মামলার ৪৬ সাক্ষীর মধ্যে ২৯ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ এখনো বাকি রয়েছে। অপর মামলাটি বিচারাধীন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দুটি মামলার অন্যতম আসামি রকিব হোসেন ওরফে হাফেজ মাহমুদের নামে ২৯টি মামলা ছিল। এর মধ্যে তিনি একটি মামলায় মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামিও ছিলেন। ২০১৪ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে পালানোর পরদিন টাঙ্গাইলে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হন তিনি। অপর আসামি শায়খুল ইসলাম ওরফে রাকিব ওরফে মুয়াজ চুয়াডাঙ্গা জেলা কারাগারে বন্দি আছেন।
২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট সারা দেশের সঙ্গে চুয়াডাঙ্গায় সিরিজ বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। ওই দিন চুয়াডাঙ্গা শহরের কোর্ট মোড়, সদর থানা, তথ্য অফিস, রেলস্টেশন, মাছপট্টি চত্বরে বোমা বিস্ফোরণ ঘটে এবং শিল্পকলা একাডেমি চত্বর থেকে একটি তাজা বোমা উদ্ধার করা হয়। পুলিশ ঘটনার পর প্রতিটি জায়গা থেকে জেএমবির প্রচারপত্র উদ্ধার করে।
চুয়াডাঙ্গার সদর উপজেলার দৌলতদিয়ার গ্রামের বাদল হোসেন (৫০) ও হাতিকাটা গ্রামের হিরক হোসেন (২৫) নামের দুই ব্যক্তি ১৭ আগস্টের ওই বোমা বিস্ফোরণের ক্ষত বয়ে বেড়াচ্ছেন ১১ বছর ধরে। কিন্তু সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেনি সরকারি, বেসরকারি ও সমাজের দানশীল কেউ। ফলে চরম দারিদ্র্যের মধ্যে দিন কেটেছে তাঁদের।
বোমা বিস্ফোরণে বাদলের ডান চোখ চিরতরে অন্ধ ও হিরকের ডান চোয়ালের মাংস ঝলসে যায়। চিকিৎসা না পেয়ে হিরক গত বছরের মে মাসে মারা গেছে বলে জানিয়েছেন ওই ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত বাদল হোসেন। সেই দুঃসহ স্মৃতি এখনো বয়ে বেড়াচ্ছেন বাদল।
বাদল হোসেন জানান, ২০০৫ সালে বোমা বিস্ফোরণে আহত হয়ে হাসপাতালসহ বিভিন্ন স্থানে চিকিৎসা করাতে সে সময়ে বেশ কিছু টাকা খরচ হয়। অনেকেই সাহায্যের কথা বললেও পরবর্তী সময়ে কাউকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। তিনি জানান, তাঁর চোখে এখনো ব্যথা অনুভব করেন; চিকিৎসা দরকার।
ঘটনার পর সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবদুল মোতালেব বাদী হয়ে সদর থানায় অজ্ঞাতপরিচয় আসামিদের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) তৎকালীন এসআই এ এইচ এম কামরুজ্জামান খাঁন তদন্ত শেষে ২০০৭ সালের ৮ মার্চ জেএমবির খুলনা বিভাগীয় প্রধান রকিব হাসান ওরফে হাফেজ মাহমুদ এবং এসহার সদস্য শায়খুল ইসলাম ওরফে রাকিব ওরফে মুয়াজকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-২-এর সহকারী কৌঁসুলি (এপিপি) বেলাল হোসেন জানান, তদন্তকারী কর্মকর্তাসহ গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণ হয়ে গেছে। অপর মামলাটি মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে আছে।